ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০২ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৯ ১৪৩১

নগর ভবন দুর্নীতিমুক্ত করার প্রতিশ্রুতি ৪ প্রার্থীর

তানজিমুল হক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৩৮, ১৪ জুলাই ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নগর ভবন দুর্নীতিমুক্ত করার প্রতিশ্রুতি ৪ প্রার্থীর

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী : রাজশাহীতে জনগণের মুখোমুখি হলেন সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী চার মেয়রপ্রার্থী। দিলেন ভোটারদের নানা প্রশ্নের উত্তর। সেইসঙ্গে তুলে ধরলেন নিজের পরিকল্পনার কথা, যা তারা মেয়র নির্বাচিত হলে করতে চান। চার প্রার্থীর সবাই দুর্নীতিমুক্ত নগর ভবন গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

রাজশাহী সিটি নির্বাচনে পাঁচজন মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন। তবে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত ‘জনগণের মুখোমুখি মেয়র প্রার্থী’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন উপস্থিত ছিলেন না। শনিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত নগরীর সাহেববাজার এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

তবে সুজনের ওই অনুষ্ঠানে মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম সরকার উপস্থিত সবার উদ্দেশে বলেন, রাজশাহী-৫ আসনের এমপি কাজী আবদুল ওয়াদুদ দারার মায়ের জানাজায় অংশ নেওয়ার জন্য খায়রুজ্জামান লিটন আসতে পারেননি। এ সময় তিনি লিটনের পক্ষ থেকে দুঃখপ্রকাশ করেন।

জনগণের মুখোমুখি অনুষ্ঠানে বিএনপির প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ছাড়াও গণসংহতি আন্দোলন সমর্থিত প্রার্থী মুরাদ মোর্শেদ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির প্রার্থী হাবিবুর রহমান ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন বাংলাদেশের শফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে আফজাল হোসেন নামে এক ভোটার সদ্য সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনি দায়িত্বে থাকাকালে হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ানো হলো। আপনি কেন কমালেন না? রাস্তা-ঘাটে ঝাড় দেওয়া হয়নি। আপনি কেন নগর পরিচ্ছন্ন রাখেননি? পাঁচ বছরে আপনি কী করেছেন?’’

জবাবে বুলবুল বলেন, ‘‘পাঁচ বছরের মধ্যে আমি ৩৪ মাস জেলখানা আর কোর্টের বারান্দায় থেকেছি। বাকি সময় শিখেছি এবং জনগণের জন্য কাজ করেছি। কী করেছি সেটা সবাই জানেন। এবার নির্বাচিত হলে এবং সরকার সহযোগিতা করলে রাজশাহী নগরীকে একটি সমৃদ্ধ নগরীতে পরিণত করব। আমি যত দিন দায়িত্বে থেকেছি, নগর ভবনে দুর্নীতি ছিল না, আগামীতেও হবে না।’’

মেয়রপ্রার্থী হাবিবুর রহমানের কাছে রজব আলী নামে এক কলেজ শিক্ষক জানতে চান, তিনি মেয়র নির্বাচিত হলে মাদকের বিরুদ্ধে কী করবেন। জবাবে হাবিবুর রহমান বলেন, ‘‘আমি মাদক নির্মূল করতে চাই। এটা আমার নির্বাচনি ইশতেহারে আছে। মাদকের সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে একটা সুন্দর নগরী গড়তে চাই। রাজশাহীকে বলা হয় শিক্ষানগরী। অথচ এর ১০ শতাংশও অর্জিত হয়নি। আমি প্রকৃত শিক্ষানগরী গড়তে চাই।’’

আবদুল্লাহ আল মুঈজ নামে এক ভোটার স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী মুরাদ মোর্শেদকে প্রশ্ন করেন, ‘‘ভোটের আগে সবাই বলে দুর্নীতি করব না, আপনি নির্বাচিত হওয়ার পর দুর্নীতি করবেন না তার নিশ্চয়তা কী?’’ জবাবে মুরাদ মোর্শেদ বলেন, ‘‘নিজের কোনো স্বার্থ ছাড়াই ২০ বছর ধরে মানুষের জন্য কাজ করছি। অতীতে কোনো দুর্নীতি করিনি। তাই আস্থা রাখতে পারেন, পরেও দুর্নীতি করব না।’’

বোরহান উদ্দিন নামে এক কলেজছাত্র মেয়রপ্রার্থী শফিকুল ইসলামের কাছে জানতে চান, তিনি দুর্নীতিমুক্ত নগর ভবন গড়তে পারবেন কি না? শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘অবশ্যই পারব। দুর্নীতি বন্ধ করে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে চাই। কারণ, দুর্নীতি থেকে সন্ত্রাসের উৎপত্তি। মেয়র হলে আমি যে সম্মানি পাব, তার অর্ধেক জনকল্যাণে দান করব। হোল্ডিং ট্যাক্স অর্ধেক করে দেব।’’

অনুষ্ঠান শুরুর আগে চার মেয়রপ্রার্থী একে অপরের হাতে হাত রেখে অঙ্গীকার করেন যে, আচরণবিধি মেনে তারা নির্বাচন করবেন। নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে সুজনের একটি কাগজে স্বাক্ষরও করেন। উপস্থিত ভোটাররাও সকল প্রভাবের ঊর্ধ্বে থেকে যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করার শপথ নেন।

সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। সভাপতিত্ব করেন সুজনের মহানগর কমিটির সভাপতি পিয়ার বক্স। জেলা কমিটির সভাপতি আহমেদ শফিউদ্দিন এতে স্বাগত বক্তব্য দেন।



রাইজিংবিডি/রাজশাহী/১৪ জুলাই ২০১৮/তানজিমুল হক/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়