ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

সিগারেটের মূল্য স্ল্যাব পুনর্নির্ধারণ হচ্ছে

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩৬, ৬ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সিগারেটের মূল্য স্ল্যাব পুনর্নির্ধারণ হচ্ছে

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : আসছে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের বাজেটে জনগনের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিবেচনায় সিগারেটের মূল্য স্ল্যাব পুনর্নির্ধারণ করার কথা বলেছেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন।

রোববার রাজধানীর সেগুন বাগিচায় এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে প্রাক বাজেট আলোচনায়  অ্যান্টি-টোবাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্সের পক্ষ থেকে সিগারেটের দাম বাড়ানো ও স্ল্যাব পরিবর্তনের দাবি জানানো হলে এনবিআর চেয়ারম্যান মূল্য স্ল্যাব পুনঃনির্ধারণের ঘোষণা দেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে নিম্নস্তরের ১০ শলাকা সিগারেটের মূল্য ২৭ ও ৩৫ টাকা। ফলে অনেকেই সহজেই কম দরের সিগারেটে আসক্ত হচ্ছে। এটি নিরুসাহিত করতে কম দরের সিগারেটের কর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। তবে এটা মনে রাখতে হবে এটাকে বাড়িয়ে বেশি দরের সিগারেটের যেন ভারসাম্যে আনা যায়, আমরা সেই চেষ্টা করব। এটি এমনভাবে করা হবে যেন সব পক্ষই সন্তুষ্ট থাকে।

এর আগে আলোচনা সভায় অ্যান্টি-টোবাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্সের (আত্মা) পক্ষ থেকে কম দরের সিগারেটের মূল্য বাড়ানো ও স্ল্যাব পরিবর্তনের দাবি করা হয়।

এছাড়া প্রতি ২৫ শলাকা বিড়ির নিম্ন দর ৩০ টাকা, ধোঁয়াবিহীন তামাক পন্য (জর্দ্দা ও গুল) এক্স-ফ্যাক্টরি প্রাইস প্রথা বিলুপ্তকরনসহ সব তামাক পন্যর ওপরে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ দাবি রাখেন নেতারা।

সভায় এসএমই ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বৈদ্যুতিক সারঞ্জাম তৈরির প্রধান উপকরণ পলি-কার্বোনেট আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক ২ শতাংশ রাখার দাবি করেন নেতারা। এ ছাড়া মোল্ডের ওজনভিত্তিক দর নির্ধারণের পরিবর্তে লেনদেনে ওপরে শুল্ক রাখা, প্লাস্টিক শিল্পের মৌলিক কাঁচামাল প্রাইমারি পলিমারের শুল্ক তিন শতাংশে নিয়ে আসা, মেলামাইনের কাঁচামাল আমদানিতে তিন শতাংশ শুল্ক আরোপ, কৃষি যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্কমুক্ত, হস্তশিল্প রপ্তানিতে নগদ প্রণোদনা বাড়ানোসহ একগুচ্ছ প্রস্তাব দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ পেপার মিল অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরে সংগঠনের নেতা ও মাগুরা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল মহিউদ্দিন বলেন, পেপার শিল্পে বন্ড সুবিধার অপব্যবহার হচ্ছে। এটি রোধের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, প্যাকেজিং পেপারের নামে সাদা কাগজ আমদানি করা হচ্ছে। এছাড়া শিক্ষা উপকরণে বেশ কিছু জায়গায় ভ্যাট রয়েছে। শিক্ষার প্রসার লক্ষে সেইসব জায়গা ভ্যাটমুক্ত রাখার দাবি করেন।

মোস্তফা কামাল বলেন, স্যানিটারি ন্যাপকিন আমরা ওজন পদ্ধতিতে আমদানি করি। কিন্তু বিক্রি করি পিস পদ্ধতিতে। তাই পিস পদ্ধতিতে শুল্ক আরোপ করা প্রয়োজন। এছাড়া শুল্কায়ন পদ্ধতির অনিয়মের কারণে বিদেশে টাকা পাচার হচ্ছে এমন মন্তব্য করে তিনি এটি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, “দেশি কোম্পানিগুলো উৎপাদন ভাল করলে বিদেশ থেকে আমদানি করার প্রভাব কমবে। সেক্ষেত্রে আমরা চাই দেশি কোম্পানিগুলো শুধু উৎপাদনে নয়, চাই মান সম্মত পন্য তৈরি করুক।

তিনি বলেন, দেশি শিল্পের বিকাশে আমরা সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব। কারন দেশি শিল্পের উন্নয়ন হলে দেশে কর্মসংস্থান বাড়বে। পাশাপাশি বাড়বে রাজস্বও। দিন দিন আমাদের রাজস্বের আকার বাড়ছে এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, সব ক্ষেত্রে কর কম দিলে দেশ অর্থ কোথায় পাবে। কর বাড়াবো সেটাও না। তবে রাজস্বের আকার যেভাবে বাড়ছে আমাদের সেক্ষেত্রে সবার সাথে সমন্বয় করতে হবে। যোগ্য সব করদাতাদের করের আওতায় আনতে হবে।

এনবিআর চেয়ারম্যান  বলেন, ‘কালো টাকা সাদা করার সুযোগ না দিলে দেশের অর্থ পাচার হবে। একই সঙ্গে দেশে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে। এজন্য অন্যবারের মতো এবারেও একই নিয়মে জরিমানার বিধান রেখে বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হচ্ছে। এটা অন্যভাবে দেখবেন না।’



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৬ মে ২০১৮/ এম এ রহমান/এনএ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়