ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

পাটপণ্য রপ্তানিতে প্রত্যর্পণ ‍সুবিধার সময় বৃদ্ধি

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৫৮, ৬ অক্টোবর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পাটপণ্য রপ্তানিতে প্রত্যর্পণ ‍সুবিধার সময় বৃদ্ধি

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক: পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানির সুবিধার্থে শুল্ক প্রত্যর্পণে কিছু শর্ত শিথিলের যে সুবিধা বিদ্যমান রয়েছে তার সময় আবারো বৃদ্ধি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

এর ফলে কায়িক পরীক্ষার তথ্য যাচাই-বাছাই ছাড়াই পিআরসি, ইএক্সপি ও বৈদেশিক মুদ্রা প্রত্যাবাসনের দলিলাদি ও অন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়ে রিফান্ড (ডিউটি ড্র ব্যাক বা শুল্ক প্রত্যর্পণ) নিতে পারবে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিকারকরা। আর ওই সুবিধা বহাল থাকবে ২০১৯ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত।

সম্প্রতি এনবিআর থেকে এ সংক্রান্ত একটি বিশেষ আদেশ জারি করা হয়েছে। এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব (মূসক রপ্তানি, প্রত্যর্পণ ও বকেয়া ব্যবস্থাপনা) মো. লুৎফূল কবিরের সই করা আদেশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানির বিপরীতে প্রত্যর্পণ প্রদান সম্পর্কিত বিদ্যমান সমস্যা নিরসনের সময় বৃদ্ধি শীর্ষক আদেশে বলা হয়, কাস্টমস হাউস ও স্থল কাস্টমস স্টেশনসমূহের মাধ্যমে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে রপ্তানি চালানের বিল অব এক্সপোর্ট- এর পেছনে কায়িক পরীক্ষার প্রতিবেদন না থাকার কারণে প্রত্যর্পণ প্রদানে সৃষ্ট জটিলতা নিরসন আবশ্যক। পাট ও পাটজাত পণ্য বিশেষ হাইড্রলিক মেশিন দ্বারা চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে মোড়কজাত করা হয়। উক্ত পণ্যসমূহ রপ্তানির সময় কায়িক পরীক্ষা সম্পন্ন করার জন্য মোড়ক খোলা হলে তা পুনরায় মোড়কজাত করার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বাংলাদেশের কোন কাস্টমস স্টেশনে না থাকায় পুনরায় মোড়কজাত করা সম্ভব হয় না। এ কারণে প্রকৃতপক্ষে এই সকল পণ্য রপ্তানিকালে পণ্যের পরিদর্শন হলেও বাস্তবিক কোন কায়িক পরীক্ষা সম্পন্ন হয় না বরং কায়িক পরীক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত কাস্টমস কর্মকর্তাগণ পণ্য পরীক্ষান্তে ট্রাকে পাটের বেল গণনা করে রপ্তানির অনুমোদন দেন।

আদেশে আরো বলা হয়, রপ্তানি আয়ে উৎসাহ প্রদান অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে পাট ও পাটজাত পণ্যের ক্ষেত্রে কায়িক পরীক্ষা প্রতিবেদন ব্যতিরেকে বৈদেশিক মুদ্রা প্রাপ্তি সংক্রান্ত পিআরসি, ইএক্সপি ও অন্যান্য দলিলের মাধ্যমে রপ্তানি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে প্রত্যর্পণ প্রদানের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড হতে ২০১৩ সালের ২৯ সেপ্টম্বর আদেশ (আদেশ নং ৪৩/মূসক/২০১৩) জারি করা হয়। পরবর্তী সময়ে ২০১৭ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর অপর আদেশে এর মেয়াদ ২০১৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়।

রপ্তানি আয়ে উৎসাহ প্রদান অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে পাট ও পাটজাত পণ্যের ক্ষেত্রে কায়িক পরীক্ষা প্রতিবেদন ব্যতিরেকে বৈদেশিক মুদ্রা প্রাপ্তি সংক্রান্ত পিআরসি, ইএক্সপি ও অন্যান্য দলিলের মাধ্যমে রপ্তানি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে প্রত্যর্পণ প্রদানের মেয়াদ পুনরায় ২০১৯ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হলো।

শুল্ক প্রত্যর্পণের ক্ষেত্রে ২০১১ সালের ৩০ মার্চ এনবিআর একটি আদেশ জারি করে, যাতে শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যর্পণ অধিদপ্তরকে (ডেডো) রিফান্ড দেওয়ার আগে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেম থেকে রপ্তানি পণ্য চালানের কায়িক পরীক্ষার তথ্য যাচাই-বাছাই করতে বলা হয়। রিফান্ড জালিয়াতি রোধে এই আদেশ জারি করা হয়েছিল। কিন্তু এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে বেশ জটিলতা দেখা দেয়। কাস্টম হাউস অনেক সময় অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমের ইনফরমেশন বক্সে কায়িক পরীক্ষার তথ্য এন্ট্রি দেয় না। আবার সব কাস্টমস হাউস ও স্থলবন্দরে রপ্তানির অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেম পুরোপুরিভাবে কার্যকরও হয়নি। এসব কারণে রপ্তানিকারকদের রিফান্ড পেতে জটিলতায় পড়তে হয়। রপ্তানির অনুকূলে সব কাগজপত্র দাখিল করেও শুধু কায়িক পরীক্ষার তথ্য এন্ট্রি না দেওয়ায় তাঁরা রিফান্ড পেতেন না।

এ বিষয়ে এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রাইজিংবিডিকে বলেন, এনবিআর সব সময় রপ্তানিকে উৎসাহিত করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় রিফান্ড-প্রক্রিয়া সহজ করা হয়েছে। গত বছরও একটি আদেশ জারির মাধ্যমে এ সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। সে আদেশের মেয়াদ শেষ হওয়ায় নতুন করে আদেশ জারি করা হয়েছে। যেখানে রিফান্ড জটিলতা দূর করতে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেম থেকে কায়িক পরীক্ষার তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের বাধ্যবাধকতা শিথিল করা হয়েছে।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/৬ অক্টোবর ২০১৮/এম এ রহমান/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়