ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

‘খাদ্যশস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে’

নোমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪৫, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘খাদ্যশস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট : রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ বলেছেন, সরকারের নিরলস প্রচেষ্টায় জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বৈরিতা মোকাবিলা করে খাদ্যশস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ আজ এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন ও স্থিতিশীলতা সংরক্ষণে কৃষির ভূমিকা আজও মুখ্য। কৃষিতে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে তিনি পচনশীল কৃষিপণ্যের সংরক্ষণ ও বহুমুখীকরণে প্রযুক্তি উদ্ভাবনের পাশাপাশি দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির ওপর জোর দেন। আর এ ব্যাপারে দেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অবদান রাখতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বিশ্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়ন ও অগ্রগতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে সমুন্নত রেখে বর্তমান সরকার দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখে চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় রূপকল্প-২০২১ ও রূপকল্প-২০৪১ এর পথচিত্র অনুসরণ করে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়ক ধরে এগিয়ে চলছে। আমাদের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নযুদ্ধে জয়লাভের জন্য কৃষি ও কৃষকের উন্নয়ন অপরিহার্য।

রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, বর্তমান যুগ হচ্ছে বিশ্বায়ন ও জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির যুগ। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই বিশ্বব্যবস্থায় একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে তার আপন বৈশিষ্ট্য নিয়ে টিকে থাকতে হলে তার স্থানিক, জাতিক ও বৈশ্বিক অবস্থান স্পষ্ট করতে হয়। এটি সুনির্দিষ্ট করা সম্ভব প্রাতিষ্ঠানিক উপযোগিতা, মান ও আন্তর্জাতিক চরিত্র নিশ্চিত করার মাধ্যমে।

তিনি বলেন, উচ্চতর কৃষিশিক্ষার অন্যতম বিদ্যাপীঠ হচ্ছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। যুগের চাহিদানুযায়ী জৈবপ্রযুক্তি ও জেনেটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের আওতায় জীববিজ্ঞানের মলিকিউল ও জিন পর্যায়ে সর্বশেষ গবেষণা-অগ্রগতি সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা ও গবেষণা কর্মসূচি পরিচালনা করা হচ্ছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে। এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ- যা এই বিশ্ববিদ্যালয়কে এ স্বাতন্ত্র্য মর্যাদায় আসীন করেছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বৃহত্তর সিলেটের পাহাড়, নদী, হাওড়, সবুজ বনাঞ্চল ও প্রান্তর এই অঞ্চলকে এক অনন্য প্রাকৃতিক লীলাভূমিতে পরিণত করেছে। এখানকার বিস্তীর্ণ জলজ সম্পদ, উর্বর ভূমি, লালচে ও পাথুরে মাটি এবং বিস্তৃত প্রান্তরে ছড়িয়ে রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা। লাগসই কৃষিপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এর উৎপাদনশীলতা বহুগুণ বাড়ানো সম্ভব। এভাবে এই অঞ্চলে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য মাঠপর্যায়ে গবেষণা পরিচালনার এক আকর্ষণীয় ক্ষেত্র তৈরি করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-গবেষকবৃন্দ ইতোমধ্যেই মাঠ গবেষণার মাধ্যমে উন্নত শস্যজাত উদ্ভাবনসহ বেশ কিছু চাষ ও ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি উদ্ভাবনে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে।

অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাস উদ্দিন। সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বদরুল ইসলামের উপস্থাপনায় এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. গোলাম শাহী আলম।

অনুষ্ঠানে ১৭৩৩ জন স্নাতক, ৫১৫ জন এমএস এবং একজন পিএইডি ডিগ্রিধারীর সনদের স্বীকৃতি দেন রাষ্ট্রপতি। প্রথম সমাবর্তনে চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক পেয়েছেন ২৭ জন ও বিশ্ববিদ্যালয় পদক পেয়েছেন ৪১ জন গ্রাজুয়েট। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি দুজন কৃতী শিক্ষার্থীর হাতে চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক এবং দুজন কৃতী শিক্ষার্থীর হাতে ভাইস চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক তুলে দেন।



রাইজিংবিডি/সিলেট/১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/নোমান/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়