ঢাকা     বুধবার   ০৮ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

রাজাপুরে অনগ্রসর শিক্ষার্থীদের জন্য স্বেচ্ছাশ্রমে স্কুল কোচিং

অহিদুজ্জামান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩১, ৯ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রাজাপুরে অনগ্রসর শিক্ষার্থীদের জন্য স্বেচ্ছাশ্রমে স্কুল কোচিং

অহিদুজ্জামান : ঝালকাঠি জেলার রাজাপুরের শহরতলীর একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা স্বেচ্ছাশ্রমে রমজান মাসে অনগ্রসর শিক্ষার্থীদের জন্য কোচিং চালু করেছেন।

স্থানীয় ২৪ নম্বর পাড়গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক অর্চনা রানী রায় জানান, কোমলমতি শিক্ষার্থীরা এক মাস স্কুলে না এলে কিছুটা হলেও তারা শিক্ষায় মনোযোগ হারাবে এবং অনেকটা পিছিয়ে পড়বে। এমন চিন্তা থেকেই আমরা স্কুলের সকল শিক্ষক মিলেমিশে ফ্রি কোচিং শুরু করেছি। এতে ছাত্র-ছাত্রীরা বেশ উপকৃত হবে বলে তিনি মনে করেন।

শিক্ষায় ঝালকাঠি জেলা জাতীয় পর্যায় দীর্ঘকাল থেকে এগিয়ে থাকলেও অনগ্রসর শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও অনেক। বিশেষ করে রাজাপুরে কৃষি নির্ভর অর্থনীতি গড়ে ওঠায় ছেলে-মেয়েদের পিছনে শিক্ষার জন্য আলাদা খরচ জোগাতে অধিকাংশ মানুষের হিমশিম খেতে হয়। এখানে প্রধান অর্থকরি ফসল হচ্ছে ধান ও পান। এছাড়া সুপারি, নারকেল এবং স্বল্পপরিসরে কুটির শিল্প থাকলেও এসব খাত থেকে সংসারের চাহিদা মতো যোগান আসে না।



এই এলাকার প্রায় ৫০-৬০ শতাংশ মানুষের প্রধান আয়ের উৎস হচ্ছে কৃষি খাত। এছাড়া কৃষি খামারি মজুর শ্রেণি রয়েছে প্রায় ১৬ শতাংশ। ক্ষুদ্র ব্যবসায় নির্ভর ১২-১৫ শতাংশ। সেবা খাতে চাকরিজীবী ১১-১৫ শতাংশ। দিনমজুর ৪ শতাংশের বেশি। এখানে গড় দারিদ্র্যের হার অনেক কম হলেও সংসারের সকল ব্যয় শেষে ছেলে-মেয়েদের টিউশনের খরচ জোগানোটা অনেকের জন্যই কষ্টকর।

এলাকাবাসী জানান, রমজান মাসে স্কুল বন্ধ থাকায় ছেলে-মেয়েদেরকে প্রাইভেট মাস্টারের কাছে পড়তে হয়। যাতে তারা ক্লাসের পড়ায় একটু বেশি অগ্রসর হতে পারে। কিন্তু স্বাদ থাকলেও সাধ্য হয় না অনেকের। স্কুলের এই উদ্যোগে আমরা বেশ খুশি। শিক্ষা অফিসের তথ্যে দেখা যায়, গত বছর এই স্কুল থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে ৩টি টেলেন্টপুলসহ ৪টি বৃত্তি পেয়েছে। এছাড়া সমাপনী পরীক্ষায় গড়ে সকলে ভালো ফলাফল করেছে।



স্থানীয় বাসিন্দারা আরো জানান, এই এলাকার শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষায় বেশ প্রতিযোগিতামূলক উৎসাহ লক্ষ করা যাচ্ছে। এটা একটা শুভলক্ষণ বলে তারা মনে করেন। আরো বলেন, এই স্কুলটির মতো সকলে চেষ্টা করলে কেউ আর শিক্ষায় পিছিয়ে থাকবে না বলে আমরা মনে করি। অবশ্য কয়েক বছর আগেও এই স্কুলের চিত্র ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত। শিক্ষা অফিসের তথ্যে দেখা যায়- অতীতে স্কুলটি বি ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত ছিল।

উল্লেখ্য, প্রকৃতির কবি জীবনানন্দ দাশের স্বপ্নের নদী ধানসিঁড়ি উপকূলে রাজাপুর উপজেলার শহরতলি গ্রাম পাড়গোপালপুরে ১৯৪৪ সালে এই স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন যোগেন্দ্রনাথ বিশ্বাস।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ মে ২০১৯/অহিদুজ্জামান/পলাশ/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়