ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

শিল্পীকে স্বাধীন মতো আঁকতে দিন: মোস্তাফিজ কারিগর

অহ নওরোজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:০৮, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
শিল্পীকে স্বাধীন মতো আঁকতে দিন: মোস্তাফিজ কারিগর

মোস্তাফিজ কারিগর চিত্রশিল্পী, কবি ও উপন্যাসিক। ‘বস্তুবর্গ’ উপন্যাসের জন্য পেয়েছেন জেমকন তরুণ কথাসাহিত্য পুরস্কার ২০১৬। চিত্রকলা বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষা নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের মৃৎশিল্প বিভাগ থেকে। প্রকাশিত বই: নৌকাখণ্ডে দেবীর লাল, কবিতা, ২০০৯। স্বয়মাগতা, কবিতা, ২০১৭। শালঘর মধুয়া, ছোটগল্প, ২০১৩। ছবি আঁকার জাদু, শিশুতোষ ২০১৬। বস্তুবর্গ, উপন্যাস, ২০১৭। ছবি আঁকার পাশাপাশি প্রচ্ছদ শিল্পেও মোস্তাফিজ কারিগর এই সময়ের অনন্য। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বইমেলা, প্রচ্ছদশিল্পের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেছেন এই শিল্পী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন অহ নওরোজ

অহ নওরোজ: কেমন আছেন?
মোস্তাফিজ কারিগর: এখনো ব্যস্ত আছি। একটু ফ্রি হবো সে সুযোগ করে উঠতে পারছি না।

অহ: বইমেলা তো শেষের পথে। এখনো কাজের চাপ আছে?
মোস্তাফিজ: তা তো বটেই। অনেকেই দেখছি প্রচ্ছদের ভাবনা নিয়ে এখনো আসছেন। বুঝতে পারছি না এখন বই প্রকাশ করে কি লাভ?

অহ: লেখকদের কাছ থেকে তাদের লেখা সম্পর্কে আইডিয়া নেন কিভাবে? পুরোটা লেখা পড়েন?
মোস্তাফিজ: সেটা কি সম্ভব? এতগুলো প্রচ্ছদের চাপ, বইমেলার সময় দিনে অন্তত ২টি প্রচ্ছদ করে শেষ করতে হয়। সে কারণে সম্পূর্ণ লেখা না পড়লেও লেখককে তার লেখার একটি সারাংশ দিতে বলি, যেটা থেকে আইডিয়া পাই।

অহ: অনেক লেখককে দেখি প্রচ্ছদ কেমন রঙের হবে শিল্পীকে সেই আইডিয়া দেন। এই বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখেন?
মোস্তাফিজ: প্রচ্ছদ কিভাবে আঁকবো, সেখানে কি রঙ ব্যবহার করবো এইসব বিষয়ে যারা বুদ্ধি দিতে আসেন সেসব লেখককে আমি পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে কিছু অগ্রজদের থেকে আবার বুদ্ধি নেওয়ার চেষ্টাও করি। তবে লেখকদের প্রতি সন্মান রেখেই বলছি, এটা তো লেখকের কাজ নয়। তার কাজ লেখা, তিনি লিখবেন। প্রচ্ছদ আমি আঁকছি, আমি আমার স্বাধীন মতো আঁকবো। যাদের গ্রন্থ প্রকাশ হয় নিশ্চয় লেখালেখির ব্যাপারে একটি সাধারণ পাঠ সেরে এসেছেন, যে কারণে তাদের লেখা গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হচ্ছে, এই দিক থেকে আমার কথাও তো তাদের ভাবা উচিত। আমি আঁকছি, এই বিষয়ে অল্প হোক, বেশি হোক, অভিজ্ঞতা তো আমার আছে। এই বিষয়ে আমি পড়াশোনা করে এসেছি সুতরাং আপনি আমাকে বুদ্ধি দিতে আসলে সেটা মানায় না। উদাহরণ স্বরূপ: আপনি যদি আমাকে রঙ চেঞ্জ করতে বলেন আর উত্তরে আমি বলি আপনার লেখা পছন্দ হয়নি বদলে নিয়ে আসুন, তখন কি বলবেন? আসলে যার জায়গায় তাঁকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া উচিত। স্বতঃস্ফূর্ততা না থাকলে কোন কিছু শিল্প হয়ে ওঠা কঠিন।’

অহ: আপনি কবিতা চর্চাও করেন, বইও প্রকাশিত হয়েছে, গল্প লিখেছেন, উপন্যাসে পুরস্কার পেলেন- এত মাধ্যমে কাজ করে কোন ক্ষেত্রে আপনি সাচ্ছন্দ বেশি অনুভব করেন?
মোস্তাফিজ: আমি আসলে সবসময় কমপ্লিট আর্টের কথা ভেবেছি। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, চিত্রকলা- সব মিলে তো একটাই কাজ। মাধ্যমটা আলাদা।

অহ: এবারের বইমেলা কেমন লাগছে?
মোস্তাফিজ: ভালই লাগছে। তবে ধূলা-বালি একটু কম থাকলে ভালো লাগতো। আর এতো বড় মেলা হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে যেতে হয়। বসার স্থান আরও বাড়ালে বই দেখতে দেখতে একটু জিরিয়ে নেওয়া যেতো। লিটল ম্যাগাজিন কর্নার এই পাশে এনে আবার ওপাশে ফিরিয়ে নিয়ে না গিয়ে এই পাশে রাখলেই ভালো হতো। হাঁটার দৈর্ঘ্য অনেকটা কমে যেতো।

অহ: সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
মোস্তাফিজ: আপনাকেও।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/অহ/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়