ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

ঋতুভেদে সুস্থতা, অসুস্থতা এবং প্রতিকার : শেষ পর্ব

মো. আমিরুল ইসলাম প্রামাণিক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৫৮, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ঋতুভেদে সুস্থতা, অসুস্থতা এবং প্রতিকার : শেষ পর্ব

চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, প্রাগৈতিহাসিক যুগে রোগ-ব্যাধির প্রকোপ কম ছিল। সাধারণ রোগ-ব্যাধি ছাড়া জটিল রোগ ছিল হাতে গোনা। যেমন বাত, কুষ্ঠ এবং ক্যানসার- এরকম সামান্য ক’টি। এই অবস্থা ক্রমে ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ নিয়ে গবেষণা ও আবিষ্কার থেমে নেই। উপায় উদ্ভাবন হয়েছে প্রচুর কিন্তু খুব লাভ হয়নি। একটা রোগ ভালো হয়েছে তো আর একটা এসে হাজির হয়েছে। সুস্থতা, অসুস্থতা, রোগ-ব্যাধি, এর  কারণ ও প্রতিকার ইত্যাদি বিষয়ে নানা জনের নানা প্রশ্ন আছে। সেসব কারণ এবং তার প্রতিকার নিয়ে আজ প্রকাশিত হলো শেষ পর্ব। লিখেছেন মো. আমিরুল ইসলাম প্রামাণিক।

মানব শরীরে মাটির গুণাগুণের তারতম্য হলে তাঁদের লিভার ফাংশনে ব্যতিক্রম ঘটবে। হজমশক্তি কমে যাবে। এ ধরনের মানুষ সাধারণত রাগী হবেন, হজম করতে না পারলেও তাঁরা ভোজন বিলাসী হবেন এবং মাংস পছন্দ করবেন। শারীরিক অবসাদ, একঘেঁয়েমি, অনিদ্রা তাঁদের নিত্যসঙ্গী হবে। টিউমার, এইডস, ইনফ্লুয়েঞ্জা ইত্যাদি ব্যাধি তাঁদের জীবন বিপর্যস্ত করবে। মাটির দূষণ বা স্বল্পতা দেখা দিলে অনুরূপ সমস্যা বা ব্যতিক্রমী কিছু ঘটতে দেখা যাবে।

সর্বরোগের অনুঘটক: আর এক ধরনের রোগ-ব্যাধির সৃষ্টি হয় যা মূলত অপরিষ্কার-অপরিচ্ছন্নতার কারণে। এ ধরনের মানুষ এলার্জি, চর্মরোগ, খোঁচ-পাচড়া, অপুষ্টি, একজিমা, ব্রণ, স্ফোটক, রক্তদূষণ ইত্যাদিতে নিপতিত হন। এ ধরনের মানুষ সাধারণত বুদ্ধিমান এবং গর্বিত প্রকৃতির হন। তাঁদের মধ্যে স্থিরতা থাকে না। মস্তিষ্কে গোলযোগ এবং স্নায়ুরোগে ভোগেন। উল্টাপাল্টা খাবারও তাঁদের কাছে অতি প্রিয় হয়ে যায়। মানসিক ও শারীরিক অস্থিরতা তাঁদেরকে মানসিক ও শারীরিকভাবে দুর্বল করে তোলে। এজন্য তাঁরা কোন কাজে লেগে থাকতে পারেন না। একটুতেই হাঁপিয়ে ওঠেন। টক, ঝাল, মিষ্টি জাতীয় খাবারে ঝোঁক বেশি থাকে। এই সমস্যাটি প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে ছিল কি-না জানা যায় নি। তবে হযরত নূহ (আঃ)-এর মহাপ্লাবন পরবর্তী সময় থেকে ধারাক্রমে চলে আসছে বলে ধারণা পাওয়া গেছে।

রোগ-ব্যাধির আবর্তন ও সময়কাল: উপরে যা কিছু উল্লেখ করা হলো তা কিন্তু সময়ের সাথে সংশ্লিষ্ট। ঐসব বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন মানুষের একসাথে কিংবা একই সময়ে রোগ-ব্যাধি আক্রমণ করে না। প্রত্যেকের রোগ-ব্যাধি এবং তার প্রকোপ ভিন্ন ভিন্ন ঋতুতে প্রকাশ পায়। এমনকি দিনে অথবা রাতে; সকালে কিংবা দুপুরে; বিকেলে অথবা সন্ধ্যায় বৃদ্ধি পায়। সারাজীবন ধরে এই ধরনের তামাশা চলতে থাকে। আগে থেকে শরীরে সুপ্তভাবে লুকিয়ে থাকা সমস্যা যখনই কোন উত্তেজক বা পরিপোষক কোন কারণ খুঁজে পায় ঠিক তখনই সুপ্ত সমস্যাদি জাগ্রত করে। এর ধরনটা ঠিক কেমন হতে পারে সে সম্পর্কে নিচে ধারণা দেয়ার চেষ্টা করা হলো। তবে আমাদের দেশ ছয় ঋতুর দেশ। তাই এ ধারার কিছুটা হেরফের হতে পারে।

শরৎকালীন উৎপাত: যাঁদের চর্মরোগ, খোঁজ-পাচড়া, একজিমা ইত্যাদিতে আক্রান্ত হবার প্রবণতা আছে তাঁরা বছরের প্রায় সময়ই কম-বেশি ঐসব অসুবিধা ভোগ করেন। কিন্তু ফল সিজনে অর্থাৎ শরৎকালে (সেপ্টেম্বর-নভেম্বর) সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন। অন্য সময় তিনি তুলনামূলক ভালো থাকেন। শীত তাঁদেরকে বেশ কাবু করে। উল্লেখ্য, এসব উৎপাত নিবারণের জন্য মলমাদি এবং এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার পরবর্তী জীবন দুর্বিষহ করে তোলে। তাই এ থেকে খুবই সতর্ক থাকতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এ রোগ থেকে অনেকটা নিস্তার দিতে পারে। মনে রাখা দরকার যে, সব ঋতুতে সবাই একসাথে রোগে আক্রান্ত হন না। আবার যিনি যে ঋতুতে বেশি আক্রান্ত হন তিনি পরের বছর একই সময়ে ঐসব অসুবিধায়ই ভুগে থাকেন, এর ব্যতিক্রম খুব কম ক্ষেত্রেই হয়।

শীতকালীন উৎপাত: যাঁদের পানি বা ঠান্ডা নিয়ে সমস্যা আছে তাঁরা কিন্তু শীতকালে বেশি অসুস্থ হন। এ সময় তাঁদের রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। শীতে তাঁরা ভীষণভাবে কষ্ট পান। বিশেষ করে ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এভাব চলতে থাকে। অন্য সময়েও তাঁরা রোগ-শোকে ভোগেন তবে তুলনামূলকভাবে কম। সচরাচর এ সময় তাঁরা দাদ রোগেও আক্রান্ত হয়ে থাকেন। সাবধানতা অবলম্বনের মাধ্যমে এ থেকে অনেকটা রেহাই পাওয়া সম্ভব।

বসন্তকালীন উৎপাত: শ্লেষ্মা বা সর্দি-কাশিপ্রবণ মানুষেরা কিন্তু স্প্রিং সিজনে অর্থাৎ বসন্তকালীন সময়ে (মার্চ-মে) বেশ ভুগে থাকেন। ঐ সময় ফুলের মৌ মৌ গন্ধ তাঁদের পাগল করে দেয়। তাঁরা ফুলের গন্ধ একেবারেই সহ্য করতে পারেন না। এসব সাধারণত তাঁদের গলনালীর সর্দি, ক্যানসার ইত্যাদি রোগ হতে দেখা যায়। তাছাড়া, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সাথে বিশেষ করে বাতাসের সাথে সংশ্লিষ্ট যেসব রোগ-ব্যাধি তার প্রকোপ বেড়ে যায়।

গ্রীষ্মকালীন উৎপাত: যাঁদের গরম সহ্য হয় না অর্থাৎ যাঁরা কার্বো-নাইট্রোজিনয়েড ধাতুর তাঁরা আবার গ্রীষ্মকালে খুব কষ্ট পান। অন্য সময়ে যাই ঘটুক না কেন, এ সময় তাঁরা নাজেহাল হয়ে পড়েন। সময়টা হচ্ছে জুন থেকে আগস্ট মাস। তবে, এই প্রকৃতির মানুষ যদি শীতকালেও গরম বিশেষ করে আগুনের সান্নিধ্যে আসেন তাহলেও তাঁরা অসুস্থ হতে পারেন।

বংশগতিই রোগের আমদানিকারক: এসবের অনেকটা ঘটে আসলে জেনেটিক কারণে। অনেক সময় একজন মানুষের মধ্যে একাধিক ধরনের সমস্যাও দেখা দেয়। কারো কারো আবার দুই বা ততোধিক ঋতুতে রোগ-ব্যাধির প্রকোপ দেখা দেয়। এ ধরনের মানুষ আসলে মিশ্র দোষে দুষ্ট। অর্থাৎ শীত কিংবা গরম অথবা গরম কিংবা শরৎকাল দুই বা তিন ধরনের সমস্যাই তাঁদের মধ্যে বিদ্যমান। প্রতিবছর একই সময়ে একই ধরনের রোগ যাঁদের হানা দেয় তাঁরা আসলে চিররোগের পর্যায়ভুক্ত। সে কারণে এমন ক্ষেত্রে চিরস্থায়ী চিকিৎসা নেয়া দরকার, সাময়িক চিকিৎসা তাঁদের জন্য তত ফলপ্রসূ হবে না। কারণ, চিররোগগুলো শরীরের মধ্যে ধীরে ধীরে বাসা বাঁধে। যে রোগগুলি হঠাৎ দেখা দেয় সেসব ক্ষেত্রে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠা এবং মৃত্যুবরণ করা দুটোই কিন্তু আছে। কিন্তু চিররোগের ক্ষেত্রে চিররোগের ধারাক্রম অনুসরণ করেই চিকিৎসা নিতে হবে। প্রারম্ভেই যদি রোগ শনাক্ত করা যায় তাহলে তার প্রতিকার পাওয়া অসম্ভব কিছু নয়। কিন্তু রোগ যদি আরোগ্যের পর্যায়সীমা অতিক্রম করে তাহলে কোন চিকিৎসক কিংবা ওষুধের পক্ষেই তা আরোগ্য করা সম্ভব নয়। শত চেষ্টায় হয়তো কিছুটা সাময়িক উপশম দেয়া যাবে। তাই যে কোন ধরনের শারীরিক পরিবর্তন ও লক্ষণ সম্বন্ধে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। কারণ, প্রতিটি রোগেরই নির্দিষ্ট লক্ষণ থাকে। রোগ লক্ষণ মানুষের ভোগান্তি নয় উপকার করে, লক্ষণ কোন মানুষের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে না, ডাক্তার দেখানোর ইঙ্গিত দেয়। তবে যদি কেউ একটি বা দু’টি লক্ষণ ধরে তার গোড়ায় না গিয়ে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে তাহলে কিন্তু প্রকৃত রোগ আরোগ্য দুরূহ হয়ে পড়ে। তাই সেদিকেও লক্ষ্য রাখা জরুরি।

রক্তের উপাদান, এর হ্রাস-বৃদ্ধি এবং খাদ্যাভ্যাস: এই পর্যায়ে আমি আমাদের শরীরের মধ্যে যে রক্ত আছে তার মধ্যে যেসব উপাদান আছে তা নিয়ে যৎসামান্য আলোকপাত করতে চাই। আমরা জানি যে, আমাদের শরীরের মধ্যে যে রক্ত আছে তার মধ্যে রক্তরস (প্লাজমা) রয়েছে ৫৫ ভাগ আর রক্ত কণিকা রয়েছে ৪৫ ভাগ। এর মধ্যে আবার জলীয় ও কঠিন পদার্থ এবং লোহিতা কণিকা, শ্বেতকণিকা এবং অনুচক্রিকা আছে। রক্তরসের কঠিন পাদার্থের মধ্যে আবার যেমন- শর্করা, প্রোটিন, ফ্যাট, প্রোটিনবিহীন নাইট্রোজেন, ক্ষরণজাত পদার্থ, গ্যাসীয় পদার্থ আছে। আছে ধাতব লবণ, যেমন- সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, আয়রণ, তামা, আয়োডিন ইত্যাদি। এগুলির তারতম্য হলেও মানুষ নানা দুর্ভোগে পড়েন। খাবার-দাবার থেকে এসবের ঘাটতি প্রতিপূরণ হয়। আমরা কিন্তু বিশেষ নজর দিয়ে আমাদের খাবার-দাবার গ্রহণ করি না। তাই, প্রতিনিয়তই আমাদের শরীরে নানা কিছুর ঘাটতি দেখা দেয়। শরীর সতেজ রাখতে এসবের ভূমিকা কেমন সে সম্পর্কে কয়েকটি উদাহরণ দিয়ে আমার আজকের লেখাটি শেষ করবো।

ফসফেট অব আয়রন: প্রথমেই আসা যাক, রক্তে ফসফেট অব আয়রনের স্বল্পতা বা ঘাটতি দেখা দিলে এতে করে শরীরে লাল রক্তকণিকা উৎপাদন ব্যাহত হবে। রক্তস্বল্পতা দেখা দিবে। ফলে শরীরে বাতাসের স্বল্পতা পরিলক্ষিত হবে এবং শ্বাস-প্রশ্বাসে বিঘ্ন ঘটবে। কারণ, রক্তের মাধ্যমে ফুসফুসে যদি পর্যাপ্ত বাতাস না পৌঁছায় তাহলে ফুসফুস স্বাভাবিকভাবে কাজ করবে না। রক্ত পাম্প করা ফুসফুসের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়বে। এর বৃদ্ধি ঘটলে আবার মাথায় রক্ত সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে। রক্ত বেশি হলে উচ্চচাপ আর কম হলে নিম্নচাপ দেখা দিবে। আরও নানা অসুবিধার সৃষ্টি হবে যা এই পর্যায়ে আলোচনার প্রয়োজন মনে করছি না।

ক্যালসিয়াম: অন্যদিকে, রক্তে থাকা ক্যালসিয়ামের স্বল্পতা দেখা দিলে বাত-ব্যথা, মেরুদণ্ড বেঁকে যাওয়া, কোষ্ঠবদ্ধতা, হাড়-গোড় মজবুত না হওয়া, নবজাত শিশুর মাথার ব্রহ্মতালু জোড়া না লাগা, শরীরের তাপ হ্রাস পাওয়া ইত্যাদি ধরনের সমস্যা দেখা দিবে। শরীরের মধ্যে যেসব ধাতব লবণ আছে তার মধ্যে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি।

পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়া এবং ফসফেট: এসবের ঘাটতি দেখা দিলে শরীরে সায়েটিকা বাত, হার্টব্লক, কোষ্ঠবদ্ধতা, কৃমি, স্মৃতিশক্তিহীনতা, পেটব্যথা ইত্যাদি দেখা দিবে। কারণ, এগুলি রক্তের অত্যাবশ্যকীয় উপাদান।

লবণ: শরীরে লবণের ঘাটতি দেখা দিলে শ্বেতকণিকা হ্রাস পায় বা মৃত্যু ঘটে। শরীরে শ্বেতকণিকা তৈরি না হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। মৃত শ্বেতকণিকারা তখন শরীরে নানা অঙ্গ-প্রত্যক্ষ দিয়ে বের হবার চেষ্টায় লিপ্ত থাকে। অনেক ক্ষেত্রে বের হওয়ার কোন পথ না পেয়ে নাক, ফুসফুস, জননেন্দ্রিয় ইত্যাদি দিয়ে বের হয়ে আসে। শরীর চর্মরোগ প্রবণ হয়, রক্ত ফ্যাকাশে হয়ে যায়। মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ কমে যায়। ফলে মাথা ঝিমঝিম করে, মাথা ঘোরে, না হলে চরম ব্যথা করে। সর্দি-কাশি, জ্বর জ্বর ভাব, হাঁচি-কাশি সব সময় উপস্থিত থাকে। হাত-পা ঠান্ডা থাকে। রক্তশূন্যতা, বন্ধাত্ব ইত্যাদি দেখা দেয়।

ঘাটতিসমূহ বোঝার উপায়: শরীরে রক্তের কোন উপাদানে ঘাটতি আছে কি-না তা যান্ত্রিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায়। এছাড়াও কিছু উপায় আছে। যেমন- কারো শরীরে আয়রন, ফসফেট কিংবা ক্যালসিয়াম, লবণ, সুগার, পটাশিয়াম ইত্যাদির ঘাটতি দেখা দিল। এক্ষেত্রে খেয়াল করার বিষয় হচ্ছে যে, যে ব্যক্তি যে ধরনের ঘাটতির শিকার হয়েছেন তিনি সেই সেই খাবারে অতিরিক্ত আসক্ত হবেন। অর্থাৎ লবণের ঘাটতি দেখা দিলে তিনি লবণ জাতীয় খাবার-দাবারই বেশি বেশি খেতে চাইবেন। আবার সুগারের ঘাটতি দেখা দিলে মিষ্টি জাতীয় খাবার-দাবার বেশি খেতে চাইবেন ইত্যাদি। খেয়াল রাখতে হবে যে, লবণের ঘাটতি হলে বেশি লবণ আর সুগারের ঘাটতি হলে বেশি বেশি মিষ্টি জাতীয় জিনিস খাওয়া কিন্তু সমাধান নয়। এক্ষেত্রে নিরাপদ হলো অভিজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া।

জলবায়ুজনিত সমস্যা এড়িয়ে চলা উত্তম: যাঁদের জলবায়ুর সাথে সংশ্লিষ্ট সমস্যা যেমন- শীত, গ্রীষ্ম, শরৎ ও বসন্তুকালীন রোগ-ব্যাধির প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার সমস্যা আছে তাঁরা প্রাথমিকভাবে নিজেরাই অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারেন। যে ঋতু বা যেসব জিনিস সহ্য হয় না ঐ ঋতু বা ঐসব জিনিস খুঁজে বের করা এবং সে সময় সতর্ক থাকা এবং ঐ জিনিসগুলো এড়িয়ে চলা উত্তম। যেমন যদি কারো গরম কিছু সহ্য না হয়, তাহলে সব সময়ই গরম কিছু থেকে সতর্ক থাকা। যদি কারো শীত বা ঠান্ডা সহ্য না হয় তাহলে ঠান্ডা যা কিছু থেকে সতর্ক থাকা এমন আর কি। আর যাঁদের যে খাবারে এলার্জি আছে তা পরিহার করে চলা। এমন সব ক্ষেত্রে পরিবারের লোকজন এবং নিজে অনেক সমস্যাই মিটিয়ে ফেলা যায়।

শেষকথা: স্থায়ীভাবে চিকিৎসা পেতে হলে সম্ভবত হিপোক্র্যাটিসের সেই চার উপাদানের ত্রুটি-বিচ্যুতির সমাধান পেতে হবে। হিপোক্র্যাটিস যেহেতু তাঁর জীবদ্দশায় ঐসব কিছু বাতিল করে যান নি এবং মহান আল্লাহতায়ালা যেহেতু প্রধান চারটি উপাদানে আমাদের সৃষ্টি করেছেন সুতরাং চিকিৎসা ক্ষেত্রে আমাদের ঐ চারটি উপাদানের ঘাটতি কিংবা বৃদ্ধির দিকে সবিশেষ নজর রাখতে হবে। বিকল্প কোন উপায়ে এর সমাধান পাওয়া যাবে না। বিদেশী অতি উন্নত মানের একটি এলইডি বাল্ব যতই আলো ছড়াতে সক্ষম হোক না কেন, লাইনে অথবা সুইচ বোর্ডে যদি সমস্যা থাকে তাহলে তার সব জারিজুড়ি ম্লান করে দেবে। আবার ঐ বাল্বের অভ্যন্তরীণ ত্রুটি থাকলে যতই নিখুঁত লাইন এবং বোর্ড স্থাপন করা হোক না কেন আলো জ্বলবে না। এক্ষেত্রে উভয়ই সমস্যা হলেও বাল্বের সমস্যাকে প্রধান সমস্যা বলে গণ্য করতে হবে। (শেষ)





রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ ডিসেম্বর ২০১৮/তারা

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়