ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বেড-২৮, রোগী দেড়শ’

কাঞ্চন কুমার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১৩, ১৮ নভেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বেড-২৮,  রোগী দেড়শ’

কুষ্টিয়া সংবাদদাতা : শীত জেঁকে না বসতেই কুষ্টিয়ায় বেড়েছে ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রকোপ। বিশেষ করে শিশুরাই এতে বেশি আক্রান্ত।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড। যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই। সেখানে শিশু রোগীর সংখ্যা অগনিত। চিকিৎসকদের বক্তব্য গত দু’দিনে শুধুমাত্র ঠান্ডাজনিত কারণে কয়েক  শ’  শিশু বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছে। জ্বর-কাশি, ভাইরাস জনিত কারণেই এইসব রোগী হাসপাতালে এসেছে।

অন্যদিকে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের মাত্র ২৮টি বেডের বিপরীতে গত দু’দিনেই ভর্তি হয়েছে প্রায় দেড়   শ’ শিশু।

হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বহির্বিভাগে ঠাণ্ডাজনিত নানা অসুখে আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ডাক্তারের সাক্ষাৎ পেতে স্বজনদের অপেক্ষা। ওয়ার্ডে দেখা গেল আরো ভিন্ন চিত্র। রোগী ও স্বজনদের ভিড়ে শিশু ওয়ার্ড গমগম অবস্থা।

ওয়ার্ডের ফ্লোরে ১ বছর ৮ মাসের মেহজাবিনকে নিয়ে সকালে এসেছেন মা রাশেদা বেগম। হঠাৎ করে কাশি আর ঠান্ডা জ্বরে কাঁপুনি শুরু হয় শিশু মেহজাবিনের। স্থানীয় ডাক্তারের কাছে গেলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার পরামর্শ দেন।

যদুবয়রা গ্রামের জামিরুলের ১১ মাসের ছেলে জিনাত, জগতি মন্ডল পাড়ার মেহেদির ছেলে মহিদসহ প্রায় সকলেই একই ধরণের ঠান্ডায় আক্রান্ত বলে জানালেন স্বজনরা ।

আবার একই বেডে ৩ জন শিশুকে রাখা হয়েছে। পাশেই বসা রোগীর এক স্বজন বলেন, ‘মেঝেতে শিশুদের রাখলে চিৎকার করে কান্না করছে। তাই এক বেডেই ৩ শিশুকে ঘুমিয়ে রাখা হয়েছে।’

মাত্র ২৮টি বেডের স্থলে প্রায় দেড় শতাধিক রোগী চিকিৎসাধীন থাকায় তাদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে বলে জানালেন সেবা প্রদানকারী নার্স।

কর্তব্যরত এক চিকিৎসক জানান, এই সময়ে যে  রোগটি খুব সহজে আক্রান্ত করে তা হচ্ছে ঠান্ডা, কাশি ও ভাইরাস জ্বর। তিনি বলেন, ‘মানবদেহে ভাইরাস আক্রমনের কয়েক দিনের মধ্যে জ্বর দেখা দেয়। ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত রোগীর শরীরে শীত-শীত ভাব, কাঁপুনি, মাথাব্যথা, হাত-পায়ের গিরায় ব্যথা, খাবারে অরুচি, নাক দিয়ে অঝোরে পানি পড়া, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, চোখ দিয়ে পানি পড়া, ঠান্ডা, সর্দি দেখা দেয়। অনেকের ক্ষেত্রে বমি ও ডায়রিয়া হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে ইনফ্লুয়েঞ্জা হলে পেটব্যথাও হতে পারে। ঠান্ডা লাগলে বা বৃষ্টিতে ভিজলেও ভাইরাসের সংক্রমন হতে পারে। শিশুদের অভিভাবকদের এ বিষয়ে একটু সতর্ক থাকতে হবে। তবে এ সময়ে শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এই জ্বরে অ্যান্টিবায়োটিক খাবার প্রয়োজন  নেই, প্যারাসিটামল খেলেই হয়। তবে জ্বর চার-পাঁচ দিনের বেশি সময় ধরে থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এই সময়ে কারো ভাইরাস জ্বর হলে প্রচুর পানি পান করতে হবে এবং খাবার স্যালাইন খেলে শরীরের জন্য আরো ভাল। ভিটামিন ‘সি’ যুক্ত ফলমূল বেশি করে রোগীকে খাওয়াতে হবে এবং ঠান্ডা পানি পান করা থেকে এড়িয়ে চলতে হবে।’

কুমারখালী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন জানান, দেশে এখন নিম্নচাপের কারণে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। নিম্নচাপ সরে গেলে শীতের তীব্রতা বাড়বে।



রাইজিংবিডি/কুষ্টিয়া/১৮ নভেম্বর ২০১৭/কাঞ্চন কুমার/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়