ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

হুমকির মুখে দেশের বড় হ্যাচারি

রিটন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:১১, ১৮ আগস্ট ২০১৪   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
হুমকির মুখে দেশের বড় হ্যাচারি

একটি মুরগির খামার

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর: যশোর সদরের ঘুনি পদ্মবিলা এলাকায় অনুমতি ছাড়াই গড়ে উঠেছে সিপি বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড নামে একটি বিদেশি মুরগির ফার্ম। ফার্মটি সরিয়ে নিতে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ৭ দিনের সময় বেধেঁ দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে সরিয়ে না নিলে প্রতিষ্ঠানটি ভেঙ্গে ফেলা হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।


জেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, ওই এলাকায় দেশের সবচেয়ে বড় হ্যাচারি আফিল এগ্রো লিমিটেড রয়েছে। পোল্ট্রি নীতিমালায় আছে একটি মুরগির ফার্মের ৫ কিলোমিটারের মধ্যে অন্য ফার্ম করা যাবে না। কাছাকাছি দূরত্বে হলে উভয় ফার্ম সংক্রমিত হতে পারে। এমন ক্ষতির আশংকা করে আফিল এগ্রো থেকে জেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয়কে আগেই অবহিত করা হয়।


আফিল এগ্রো লিমিটেডের পরিচালক মাহাবুব আলম লাভলু জানান, যশোর সদরের মুনসেফপুর এলাকায় ২০১১ সালে গড়ে তোলা হয় আফিল এগ্রো লিমিটেড নামে বৃহৎ মুরগির হ্যাচারি। এটা দেশের সবচেয়ে বড় হ্যাচারি হিসেবে পরিচিত। এখানে সপ্তাহে আড়াই লাখ মুরগির বাচ্চা উৎপাদন হয়। আগামীতে এখানে সাড়ে ৫ লাখ বাচ্চা উৎপাদন করার প্রক্রিয়া চলছে।


মাহাবুব আলম আরো বলেন,‘এই হ্যাচারিতে বর্তমানে একশ’ জন কর্মকর্তা কর্মচারি কাজ করছেন। অথচ কোন নিয়ম না মেনে সিপি বাংলাদেশ তাদের হ্যাচারির পাশে ২ কিলোমিটারের মধ্যেই আরেকটি হ্যাচারি গড়ে তুলেছে। এতে আমরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছি। কারণ ৫ কিলোমিটারের মধ্যে অন্য হ্যাচার্রি গড়ে উঠলে তাদের মুরগিতে সংক্রামিত রোগ ছড়িয়ে পড়লে আমাদের হ্যাচারিও আক্রান্ত হবে।’


জেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২৪ জুন আফিল এগ্রো লিমিটেড জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করে। তার পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন টিএলও ডাক্তার আতিকুর রহমান সরেজমিন তদন্ত করে এর সত্যতা পান। পরে তিনি বিষয়টি প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চিঠি দিয়ে জানান। এরপর মহাপরিচালকের নিদের্শে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ২০১৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিপি বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে তাদের হ্যাচারি সরিয়ে নিতে বলেন। কিন্তু তারা সরকারের সেই নিদের্শ না মেনে হ্যাচারিতে বাচ্চা উৎপাদন শুরু করেছে। সিপি বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাদের প্রতি কটাক্ষ করে বলছেন, তাদের চেয়ে সিপি বাংলাদেশ কোম্পানিতে যারা কাজ করেন তারা বেশি আইন জানেন।
 


এব্যাপারে যশোর জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা, আবদুর রাজ্জাক জানান, ‘পোল্ট্রি নীতির ৬ এর ৬,১,১,১ অনুচ্ছেদে বলা রয়েছে ব্রিডিং বা হ্যাচারি খামারের পারস্পারিক দূরত্ব হতে হবে ৫ কিলোমিটার। কাছাকাছি দূরত্বে হলে একটি হ্যাচারিতে সংক্রামক রোগ দেখা দিলে পাশের হ্যাচারিটিও দ্রুত আক্রান্ত হয়। কিন্তু কোন নিয়ম না মেনে এমনকি আমাদের অনুমতি না নিয়ে সিপি বাংলাদেশ নামে একটি মুরগির হ্যাচারি গড়ে তোলা হয়েছে। গত ১২ আগষ্ট আমি প্রতিষ্ঠানটিতে গিয়ে সরিয়ে নিতে বলেছি। এরপর ১৩ আগষ্ট আমরা চিঠি দিয়ে ৭ দিনের মধ্যে ফার্মটি অন্যত্র স্থানান্তর করতে নিদের্শ দিয়েছি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সরিয়ে না নিলে আমরা জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে ভেঙ্গে ফেলব। কেননা অনুমোদিত একটি ফার্ময়ের জন্য দেশের বৃহৎ ফার্মকে হুমকির মুখে ফেলতে পারিনা।’

 

 


রাইজিংবিডি/যশোর/১৮ আগস্ট ২০১৪/রিটন/সন্তোষ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়