ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

জীবিত সাক্ষীকে মৃত দেখানো : ওসির দুঃখ প্রকাশ

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:০২, ১১ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জীবিত সাক্ষীকে মৃত দেখানো : ওসির দুঃখ প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : ময়মনসিংহের কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

রাজধানীর মিরপুর থানার একটি হত্যা মামলায় জীবিত সাক্ষীকে মৃত দেখিয়ে ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়ে ওসি কামরুল ইসলাম ও এএসআই মো. মোয়াজ্জেম হোসেন সোমবার ঢাকার চার নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্বশরীরে হাজির হন এবং ওই বিষয়ে লিখিতভাবে কারণ দর্শান।

লিখিত কারণ দর্শানোর পত্রে ওসি অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য দুঃখ ও লজ্জা প্রকাশ করেন। আর এএসআই মোয়াজ্জেম হোসেন জীবিত সাক্ষীকে মৃত দেখিয়ে ট্রাইব্যুনালে দেওয়া প্রতিবেদন দাখিল করেননি এবং স্বাক্ষর তার নয় দাবি করে ওই বিষয়ে তার কোনো দায়বদ্ধতা নেই মর্মে জানিয়েছেন।

বিচারক আবদুর রহমান সরদার ওই কারণ দর্শানোর প্রতিবেদনের বিষয়ে শুনানি শেষে ওসিকে সতর্ক করে বলেন, ‘ওই ঘটনার সঙ্গে একজন জড়িত আছে। ওই ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিকে খুঁজে বের করেন। না করলে মামলার রায়ে এ ব্যাপারে অবজারভেশন দেবেন।’

উল্লেখ্য, ২০১১ সালে নিহত হন জাতীয় অন্ধ সংস্থার মহাসচিব খলিলুর রহমান। পরে এ ঘটনায় তার স্ত্রী হাসনা পারভীন মিরপুর থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলার অভিযোগপত্রের ৮নং সাক্ষী ছিলেন ময়মনসিংহ জেলার ২৯/ক, কেসি রায় রোডের বাসিন্দা মো. নুরুজ্জামান শুভ। তিনি নিহত খলিলের ব্যক্তিগত সহকারী ছিলেন। ট্রাইব্যুনাল ওই সাক্ষীকে সাক্ষ্য দিতে হাজির করতে ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানায় সমন পাঠালে ওই থানার এএসআই মোয়াজ্জেম হোসেন গত ১ জুলাই ঠিকানা সঠিক নয় মর্মে ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন পাঠান। ট্রাইব্যুনাল পুনরায় সমন পাঠালে একই এএসআই সাক্ষী শুভ ২০১৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেছেন মর্মে পৌরসভার মৃত্যুসনদসহ গত ১৯ সেপ্টেম্বর ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন পাঠান। যেখানে ওসি কামরুল ইসলাম প্রতিবেদনটি অগ্রগামী করেন মর্মে দেখা যায়। ওই প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে আসার পর মামলার বাদী সাক্ষী শুভর মুত্যুর বিষয়টি নাকচ করলে ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুসনদ যাচাইয়ের জন্য ওসিকে নির্দেশ দেন। পরবর্তীকালে মৃত্যুর সনদটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়ে প্রতিবেদন আসে। এরপর গত ২৯ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে সাক্ষী শুভ সাক্ষ্য প্রদানও করেন। ওই দিন তিনি জানান, তার বাড়িতে কোনো পুলিশ সদস্যই যায়নি। এরপর ওই দিন ট্রাইব্যুনাল ওসি কামরুল ইসলাম ও এএসআই মোয়াজ্জেমকে স্বশরীরে ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে ওই বিষয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন।

বাদী পক্ষের অভিযোগ, সাক্ষী নুরুজ্জামান শুভ মামলাটির একজন প্রত্যক্ষদর্শী এবং গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী। আসামিপক্ষ মামলার রায়ে শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য পুলিশের সঙ্গে কারসাজি করে ওই মিথ্যা মৃত্যুর প্রতিবেদন ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেছেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১১ ডিসেম্বর ২০১৭/মামুন খান/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ