ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজিরে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ১৩ মার্চ ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজিরে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক : জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করতে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট (পিডব্লিউ) বা হাজিরা পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

মঙ্গলবার পুরান ঢাকার বকশিবাজারে অস্থায়ী আদালতে ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ ড. মো. আখতারুজ্জামান ওই পরোয়ানা জারি করে আগামী ২৮ ও ২৯ মার্চ প্রাক্তন এ প্রধানমন্ত্রীকে আদালতে হাজির করতে কারা কর্তৃপক্ষকে আদেশ দেন।

এদিন মামলাটি যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য ধার্য ছিল। বেলা ১১টা ৫মিনিটে মামলার কার্যক্রম শুরু হয়।

শুরুতে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতকে বলেন, এ মামলার আসামি খালেদা জিয়া আরেক মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে রয়েছেন। তাকে উপস্থিত করা প্রয়োজন। বুধবার মামলার তারিখ ধার্য রয়েছে। খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে মামলার কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য তাকে আদালতে হাজির করার জন্য প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট জারির আবেদন করেন তিনি। আদেশ জেলখানায় গেলেই কারা কর্তৃপক্ষ তাকে আদালতে হাজির করবে বলে জানান তিনি।

এদিকে খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবী আব্দুর রেজ্জাক খান খালেদা জিয়ার পক্ষে তিনটি আবেদন করেন। এগুলো হলো-সোমবার হাইকোর্ট খালেদা জিয়াকে চার মাসের জামিন দিয়েছেন। এ আদেশ প্রক্রিয়াজাত হয়ে বেলবন্ড দিতে কিছুটা সময় লাগবে। এজন্য মামলার কার্যক্রম চার সপ্তাহ মুলতবি করা, খালেদা জিয়ার জামিন বর্ধিত করা এবং খালেদা জিয়া জেলখানায় থাকার কারণে অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় পড়তে পারেননি। সেটা খালেদা জিয়া পড়বেন, পর্যালোচনা করবেন এজন্য সময় চান তিনি।

তিনি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট ইস্যুর বিষয়ে বিরোধিতা করেন। কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন, হাইকোর্ট যে জামিন দিয়েছেন তার সুফল পেতে বাধা আসবে। আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট পেন্ডিং থাকলে খালেদা জিয়া বের হতে পারবেন না। তবে খালেদা জিয়া জামিন পেলে তারা আদালতকে তার স্বইচ্ছায় উপস্থিতির বিষয়টি জানাবেন।

খালেদা জিয়ার মুক্তিতে বাধা হবে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা আদালতের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করবে। আদালত প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট প্রত্যাহার করলে খালেদা জিয়া বেরিয়ে যাবেন।

এদিন খালেদা জিয়ার পক্ষে এজে মোহাম্মদ আলী, মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার, জাকির হোসেন ভূঁইয়া, জিয়া উদ্দিন জিয়া, আমিনুল ইসলাম, হেলাল উদ্দিন প্রমুখ আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ২২ ফেব্রুয়ারি দুদকের পক্ষে খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করতে পিডব্লিউ ইস্যুর আবেদন করেন। যার ওপর গত ২৬ ফেব্রুয়ারি শুনানি হয়। ওইদিন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা পিডব্লিউ ইস্যুর বিরোধিতা করেন।

উল্লেখ্য, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় গত ১ ফেব্রুয়ারি আসামি জিয়াউল হক মুন্নার পক্ষে যুক্তিতর্ক শুনানি অব্যাহত রয়েছে এবং খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন বাকি  আছে।

এদিকে একই বিচারক গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে ৫ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন এবং ওইদিনই তাকে কারাগারে পাঠান।

২০১১ সালের ৮ আগস্ট খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা দায়ের করে দুদক। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক।

মামলাটিতে বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী এবং তার তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রাক্তন মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান আসামি।

মামলাটিতে খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তৎকালীন বিচারক বাসুদেব রায় অভিযোগ গঠন করেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ মার্চ ২০১৮/মামুন খান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়