যে কারণে পেছাল খালেদার জামিনের রায় ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন বিষয়ে রায়ের দিন পিছিয়ে বুধবার ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।

মঙ্গলবার জামিন বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য ছিল। দুপুর ১টায় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এদিন ঠিক করেন।

রায় ঘোষণার জন্য সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ও অন্য তিন বিচারপতি এজলাসে আসন গ্রহণ করলে অ্যাটর্নি জেনারেল দাঁড়িয়ে আরো শুনানির জন্য একদিন সময় প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, আমার কিছু সাবমিশন ছিল।

 

প্রধান বিচারপতি বলেন, না না,

 

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, মাই লর্ড...

প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনিতো শুনানি করেছেন। কি বলতে চান, আরগুমেন্ট থাকলে বলেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, একদিনের জন্য কি হবে আর।

প্রধান বিচারপতি এ সময় অন্য বিচারপতিদের সঙ্গে পরামর্শ করে অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, আগামীকাল আবার এক ব্রাদার আসতে পারবেন না। এরপর সাড়ে ১১টায় শুনানির জন্য সময় রাখেন। এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, মাই লর্ড ১২টায় রাখেন। প্রধান বিচারপতি ১২টা সময় নির্ধারণ করেন। এরপর ১২ টা থেকে অ্যাটর্নি জেনারেল শুনানি করেন।

খালেদা জিয়ার পক্ষে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনও শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত রায় ঘোষণার জন্য বুধবার দিন ধার্য করেন।

আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদসহ সিনিয়র আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান। এ সময় সাধারণ আইনজীবী, দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে আপিল বিভাগের এজলাস কক্ষ ছিল কানায় কানায় পূর্ণ।

প্রসঙ্গত, গত ৯ মে খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য ১৫ মে ধার্য করেন আপিল বিভাগ। গত ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন ৮ মে পর্যন্ত স্থগিত করেন আপিল বিভাগ। দুই সপ্তাহের মধ্যে সরকার, দুদক ও আসামিপক্ষকে আপিলের সারসংক্ষেপ দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। খালেদা জিয়ার জামিনের বিরুদ্ধে দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল গ্রহণ করে এ আদেশ দেওয়া হয়। গত ১৫ মার্চ খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে লিভ টু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ ও দুর্নীতি দমন কমিশন।

গত ১৪ মার্চ খালেদা জিয়ার হাইকোর্টের দেওয়া চার মাসের জামিন স্থগিত করে লিভ টু আপিল দায়েরের জন্য দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।

এর আগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে চার মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়ার জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় কারাগারে থাকা খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি শেষ হয়। গত ২২ ফেব্রুয়ারি একই বেঞ্চ খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। এছাড়া এই মামলায় নিম্ন আদালতের দেওয়া অর্থদণ্ড স্থগিত করা হয়। পাশাপশি নিম্ন আদালতের নথি ১৫ দিনের মধ্যে পাঠাতে ঢাকা বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারককে নির্দেশ দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন নিম্ন আদালত। এ মামলার অপর আসামি খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ বাকি পাঁচজনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা জরিমানা করা হয়।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ মে ২০১৮/মেহেদী/সাইফ/শাহনেওয়াজ