ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ব্যারিস্টার মইনুলের বিরুদ্ধে চার্জশিট

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১৫, ১১ নভেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ব্যারিস্টার মইনুলের বিরুদ্ধে চার্জশিট

নিজস্ব প্রতিবেদক : ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে ঢাকা সিএমএম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ।

সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে নিয়ে মানহানিকর মন্তব্যের অভিযোগে করা ওই মামলায় গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গুলশান থানার পুলিশ ইন্সপেক্টর আমিনুল ইসলাম ওই চার্জশিট দাখিল করেন।

রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারী ওই চার্জশিটটি শনাক্ত করে বিচারিক আদালত সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে বদলির আদেশ দিয়েছেন।

গত ২৪ অক্টোকর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সদস্য সুমনা আক্তার লিলি সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে এ মামলা দায়ের করেন। ওই দিন বিচারক মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের জন্য গুলশান থানাকে নির্দেশ দেন। এরপর মাত্র ১৬ দিনের তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল হলো।

উল্লেখ্য, গুলশান থানা মামলাটি এহাজার হিসেবে গ্রহণ করার পর কারাগারে থাকা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রাক্তন উপদেষ্টা মইনুল হোসেনকে গত ১ নভেম্বর তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনে গ্রেপ্তার দেখান সিএমএম আদালত।  এরপর ৫ নভেম্বর ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের জামিন নামঞ্জুর করেন আদালত।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত ১৬ অক্টোবর রাতে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ৭১ এ মিথিলা ফারজানা সঞ্চালিত টক শো ৭১ জার্নাল চলাকালে মাসুদা ভাট্টি ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে প্রশ্ন করেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে আপনি যে হিসেবে উপস্থিত থাকেন, আপনি বলেছেন, একজন নাগরিক হিসেবে উপস্থিত থাকেন, কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে বলেন, আপনি জামায়াতের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত থাকেন।’  মাসুদা ভাট্টির এসব কথার জবাবে মইনুল হোসেন বলেন, ‘আপনার দুঃসাহসের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিচ্ছি। আপনাকে আমি চরিত্রহীন বলে মনে করতে চাই।’ একজন নারীর প্রতি ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের এমন ইচ্ছাকৃত ধারাবাহিক কুৎসা রটনা ও আক্রমণাত্মক বক্তব্য মাসুদা ভাট্টি ও নারী জাতির প্রতি বিরক্তিকর, অপমানজনক, অপদস্থমূলক এবং হেয়প্রতিপন্নকর বলে বাদী মনে করেন। প্রকাশ্যে এ ধরনের বক্তব্য প্রকাশ করার কারণে মইনুল হোসেন মাসুদা ভাট্টি তথা নারী জাতির সম্মানহানি নিরসনকল্পে আজ পর্যন্ত প্রকাশ্যে কোনোরূপ ক্ষমা প্রার্থনা কিংবা দুঃখ প্রকাশ করেননি।

বাদী আরো উল্লেখ করেন, মইনুল হোসেন ২১ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবরের মধ্যে পুনরায় একটি টেলিফোনের অডিও রেকর্ড ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে প্রকাশ করেন। ওই অডিও রেকর্ডটি তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন এবং মাসুদা ভাট্টির দায়ের করা মামলায় আগাম জামিন পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে থাকেন এবং দৈনিক প্রথম আলোর জরিপের বক্তব্য প্রকাশ করেন। মাসুদা ভাট্টিকে ৫% ভালো আর ৯৫% খারাপ মহিলা হিসেবে প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘একটা মেয়ে লোক যে এত বাজে হতে পারে তা তো আমি আগে জানতাম না।’ বাদী ইউটিউবে অডিও রেকর্ডটি শুনতে পান। মইনুল হোসেন ইংরেজি দৈনিক নিউ নেশন পত্রিকায় প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মাসুদা ভাট্টি সম্পর্কিত বিতর্কের ব্যাখার আড়ালে পুনরায় ফেসবুকে মাসুদা ভাট্টির ব্যক্তিগত চরিত্র সম্পর্কে জঘন্য ধরনের মন্তব্য করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন বাদী।

ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন এ ধরনের বক্তব্য প্রদান করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫(ক) ও ২৯(২) ধারা অনুযায়ী অপরাধ করেছেন। আর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর ৫৩(খ) ধারা অনুযায়ী মইনুল হোসেন ঘটনার সময়ে পর পর দুইবার ওই ধারার অধীনে একই রকমের অপরাধ সংঘটনের কারণে তার অপরাধ অজামিনযোগ্য। পর পর দুইবার একই অপরাধ করার কারণে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার জারির আবেদন করেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১১ নভেম্বর ২০১৮/মামুন খান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়