ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ব্যবসায়ী নজরুল হত্যা : ১৫ জনের ফাঁসি

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৪৬, ২০ মার্চ ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ব্যবসায়ী নজরুল হত্যা : ১৫ জনের ফাঁসি

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার দোহারে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে কাপড় ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামকে পিটিয়ে হত্যার দায়ে ১৫ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া দুই নারীকে যাবজ্জীবন কারাদ- দেওয়া হয়েছে।

বুধবার ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রদীপ কুমার রায় এ দ-াদেশ দেন।

মৃত্যুদ-প্রাপ্তরা হলেন- সিরাজ ওরফে সেরু কারিগর, মিনহাজ ওরফে মিনু, খলিল কারিগর, শাহজাহান কারিগর, দিদার, এরশাদ, কালু ওরফে কুটি কারিগর, আজাহার কারিগর, মিয়াজ উদ্দিন, মোজাম্মেল ওরফে সুজা, আ. জলিল কারিগর, জালাল, বিল্লাল, ইব্রাহিম ও আ. লতিফ।

আর মহিলা বিবেচনায় চায়না বেগম ও মজিদন ওরফে মাজেদাকে মৃত্যুদ-ের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদ- দেন আদালত।

মৃত্যুদ-ের পাশাপাশি ১৫ আসামিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আর যাবজ্জীবন দ-প্রাপ্ত দুই নারীকে ২০ হাজার টকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো এক বছরের সশ্রম কারাদ-ের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

আসামিদের মধ্যে দিদার, এরশাদ, আ. জলিল কারিগর, ইব্রাহিম, চায়না বেগম ও মজিদুন পলাতক রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও সাজা পরোয়ানা জারির আদেশ দেন আদালত। অপর ১১ আসামি রায় ঘোষণার সময় আদালতে হাজির ছিলেন। রায় ঘোষণার পর সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

রায় ঘোষণার আগে বিচারক বলেন, ‘নজরুল ইসলামকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। জমিজমা নিয়ে বিরোধের কারণে মামলা করায় তাকে হত্যা করা হয়।’

এদিকে রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী ডা: নাজিম উদ্দিন আহম্মেদ।  অতি দ্রুত রায় যেন কার্যকর হয়, সেই আশা প্রকাশ করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালের ৩ এপ্রিল সকালে ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের সঙ্গে তার মামা মামলার বাদী ডা: নাজিম উদ্দিন আহম্মেদের মোবাইল ফোনে কথা হয়। সে সময় তারা মামলার বিষয়ে কথা বলছিলেন। কথা বলার একপর্যায়ে মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এর ১৫ মিনিট পরে নাজিম উদ্দিনের বড় বোন চন্দ্রবান ফোন দিয়ে তাকে জানান আসামি সিরাজ নজরুল ও তার স্ত্রী পুত্রকে মারপিট করছে। নজরুলের অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে জয়পাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নজরুলের অবস্থা আরো খারাপ হওয়ায় সেখানকার ডাক্তার তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে নজরুলকে মাইক্রোবাসে করে ঢামেকে নিয়ে যাওয়ার পথে তিনি তার মামাকে জানান, আসামিরা তাকে লোহার রড, লাঠি, হাতুর ইত্যাদি দিয়ে পিটিয়ে হাতে, পায়ে, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর জখম করেছে। তার স্ত্রী সূর্যবানুকে মারপিট করেছে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নজরুলকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ওই ঘটনায় ওই দিনই তার মামা ডা: নাজিম উদ্দিন আহম্মেদ দোহার থানায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে ওই বছরের ২৬ জুলাই জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এসআই আনোয়ারুল করিম এজাহারনামীয় ১৫ আসামিসহ ইব্রাহিম, লতিফ এবং চায়না বেগমকে সম্পৃক্ত করে ১৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে বিভিন্ন ত্রুটি পরিলক্ষিত হওয়ায় পুনরায় তদন্ত করে ৪ আগস্ট সম্পুরক চার্জশিট দাখিল করা হয়। পরের বছরের ২৫ মে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে ফৈমুদ্দিন নামে এক আসামি মারা যান। মামলাটিতে আদালত ১৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন কাজী শাহানারা ইয়াসমিন। আসামিপক্ষে ছিলেন মো. কামরুজ্জামান, মো. আনোয়ারুল ইসলাম। আর পলাতক আসামিদের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিয়োজিত আইনজীবী কামরুজ্জামান।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০মার্চ ২০১৯/মামুন খান/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়