ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

‘আবদুল করিমের তৃতীয় স্ত্রীর আত্মীয় এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়’

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৫৪, ১৬ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘আবদুল করিমের তৃতীয় স্ত্রীর আত্মীয় এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়’

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর কাকরাইলে মা ও ছেলে হত্যা মামলায় বাড়ির দারোয়ান আবু নোমানের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রবিউল আলমের আদালতে তিনি সাক্ষ্য দেন।  তবে তার সাক্ষ্য শেষ না হওয়ায় আদালত আগামী ১৩ জুন পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করেন।

আবু নোমান তার জবানবন্দিতে বলেন, ‘৬/৭ বছর দারোয়ানের কাজ করি। ২০১৭ সালের ১ নভেম্বর মাগরিবের নামাজ শেষ করে সিঁড়িতে বসেছিলাম। ওপর থেকে ডাক-চিৎকার শুনতে পারি। দ্বিতীয়তলায় যাওয়ার পথে সিঁড়ি দিয়ে একজনকে নামতে দেখি। তার কাছে জানতে চাই, ওপরে কী হয়েছে? সে আমাকে ওপরে যেতে বলে এবং বলে গণ্ডগোল হচ্ছে।  চতুর্থ তলায় গিয়ে শাওনকে সিঁড়িতে পড়ে থাকতে দেখি। ডাক দিলে তার কোনো সাড়া-শব্দ পাই না। তার শরীর রক্তাক্ত ছিল।’

তিনি বলেন, ‘এরপর আমি পঞ্চম তলায় যাই। সেখানে গিয়ে দরজা খোলা পাই। শামসুন্নাহার ম্যাডামকে উপুড় হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি। তিনি কোনো সাড়া-শব্দ দেন না। কিচেন থেকে বুয়ার ডাক-চিৎকার শুনতে পাই। সেখানে গিয়ে দেখি কিচেনের দরজা বন্ধ। দরজা খুলে দিলে বুয়া বাইরে বের হয়ে এসে কান্নাকাটি করে।’

আবু নোমান বলেন, ‘সেখানে উপস্থিত লোকজন শামসুন্নাহারের স্বামী আব্দুল করিমকে ফোন দিতে বলে। ফোন দিলে তিনি বাসায় আসেন।  নিচের সিঁড়ি দিয়ে নামতে দেখা লোকটাকে চিনি না। লোকমুখে শুনি আবদুল করিমের তৃতীয় স্ত্রীর আত্মীয় এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।’

এর আগে এদিন শামসুন্নাহারের মামা হাজী মো. আলমগীরকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

এ নিয়ে মামলাটিতে পাঁচজনের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে।  এ মামলার আসামিরা হলেন- শামসুন্নাহারের স্বামী আব্দুল করিম, করিমের দ্বিতীয় স্ত্রী শারমিন আক্তার মুক্তা ও মুক্তার ভাই আল-আমিন ওরফে জনি।  এরা তিনজন কারাগারে রয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ১ নভেম্বর কাকরাইলের পাইওনিয়র গলির ৭৯/১ নম্বর বাসার গৃহকর্তা আবদুল করিমের প্রথম স্ত্রী শামসুন্নাহার করিম (৪৬) ও তার ছেলে শাওনকে (১৯) হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।  ঘটনার পরদিন রাতে নিহত শামসুন্নাহারের ভাই আশরাফ আলী বাদী হয়ে রমনা থানায় মামলা দায়ের করেন।  মামলায় আব্দুল করিম, করিমের দ্বিতীয় স্ত্রী শারমিন মুক্তা, মুক্তার ভাই জনিসহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করা হয়।  জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা শামসুন্নাহার করিমের স্বামী আবদুল করিম ও করিমের দ্বিতীয় স্ত্রী মডেল শারমিন মুক্তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরপর ৩ নভেম্বর দিবাগত রাত ৩টায় গোপালগঞ্জ থেকে মামলার মূল আসামি জনিকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৩।  ৫ নভেম্বর জনির ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।  রিমান্ড চলাকালীন ৮ নভেম্বর জনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।  পরে আব্দুল করিমের তৃতীয় স্ত্রী শারমীন আক্তার মুক্তাও আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

২০১৮ সালের ১৬ জুলাই ওই তিনজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. আলী হোসেন।  গত ৩১ জানুয়ারি তিনজনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ মে ২০১৯/মামুন খান/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়