ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

২০১৯ সালকে আপনার সুখী বছরে পরিণত করুন (শেষ পর্ব)

খালেদ সাইফুল্লাহ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:০৮, ২০ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
২০১৯ সালকে আপনার সুখী বছরে পরিণত করুন (শেষ পর্ব)

প্রতীকী ছবি

খালেদ সাইফুল্লাহ : কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করলে ২০১৯ সাল অন্য সব বছরের থেকে চমৎকার কাটতে পারে। যদিও আপনার পরিকল্পনাগুলো গতানুগতিক হতে পারে, কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন সেগুলোকে কার্যকর করার জন্য কিছু পন্থা অবলম্বন করতে হবে। এ নিয়ে দুই পর্বের প্রতিবেদনের আজ থাকছে শেষ পর্ব।

* ইতিবাচক মানসিকতায় অভ্যস্ত হোন : ‘ফিড ইওর হ্যাপি’ অ্যাপের নির্মাতা এবং ‘দ্য সেভেন কোর স্কিলস অব এভরিডে হ্যাপিনেস : সায়েন্টিফিক্যালি প্রুভেন স্কিলস ফর এ হ্যাপিয়ার, মোর মিনিংফুল লাইফ’ বইয়ের লেখক স্কট হোয়াইট নতুন বছরে আপনার জীবনে ঘটে চলা ঘটনাগুলোকে ইতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনার অভ্যাস বিকশিত করার পরামর্শ দিয়েছেন। আপনার জীবনের সুন্দর ও ভালো জিনিসগুলোকে উপলব্ধি করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। কিছু নোটকার্ড আপনার ঘরে রাখতে পারেন, যেখানে আপনি প্রতিদিনকার সুন্দর মূহূর্তগুলো লিখে রাখতে পারেন। এটি আপনাকে ভালো জিনিসের আশা জাগাবে এবং আপনার চিন্তাভাবনাগুলোকে সঠিক পথে পরিচালিত করবে। আপনার এই সুন্দর মূহূর্তগুলো একটি সুন্দর বাক্স কিংবা কৌটায় ভরে রাখতে পারেন এবং বছর শেষে এগুলোর বার্ষিক রিভিউ করতে পারেন।

* বাদ্যযন্ত্র বাজাতে শিখুন : ২০১৯ সালে আপনার জীবনে কিছু নতুন সুর যোগ করুন এবং আপনার সৃজনশীল প্রতিভা বিকশিত করুন। শিকাগোর বাদ্যযন্ত্র প্রশিক্ষক লানা অলব্রিট তার একটি রিভার্ব লেশনে বলেন, ‘কোনো বাদ্যযন্ত্রে সুর তোলা সৃজনশীলতা, সহিষ্ণুতা এবং দলবদ্ধ কাজ থেকে শুরু করে সকল ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত এবং পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি করে, যা অন্য কোনো কিছুর মাধ্যমে সম্ভব নয়।’ জ্ঞান সম্বন্ধীয় উপকারিতা ছাড়াও বাদ্যযন্ত্র বাজানোর আরো কিছু উপকারিতা রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, বাদ্যযন্ত্র বাজানো হৃদস্পন্দন এবং রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখে, আপনাকে অনেকখানি চিন্তামুক্ত রাখে এবং অন্যান্যদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে সহায়তা করে। নতুন কিংবা কঠিন কোনো সংগীত আয়ত্ব করার মাধ্যমে আমাদের মধ্যে পূর্ণতা ও সফলতার অন্যরকম কিছু অনুভূতি কাজ করে। লানা মনে করেন, আপনার বয়স যাই হোক না কেন, বাদ্যযন্ত্র শেখা খুবই সহজ কাজ। প্রশিক্ষকের সাহায্য নিয়ে দলগতভাবে অথবা একা একা আপনি এটি শিখতে পারেন।

* কিছু সময় একাকী কাটান : নতুন বছরকে সবচেয়ে সুখী করার সর্বোত্তম পরিকল্পনা হলো কিছু সময় একান্তই নিজের জন্য রাখুন। এটি খুবই সহজ মনে হলেও দ্রুত বয়ে চলা যন্ত্রণাক্লিষ্ট ও যান্ত্রিকতায় পিষ্ট ব্যস্ততাময় জীবনে আমাদের প্রথম প্রয়োজনটিকেই আমরা এড়িয়ে যাই। ১৭৭ মেন্টাল টাফনেস সিক্রেটস অব দ্য ওয়ার্ল্ড ক্লাস’ বইয়ের লেখক স্টিভ সিবোল্ড মনে করেন, মানুষের জীবনে বিশ্রামের জন্য কিছু সময়ের প্রয়োজন রয়েছে। এটির জন্য সবচেয়ে সহজ উপায় হলো, প্রতিদিন ২০-৩০ মিনিট একাকী কাটানো।

* ফিটেনেসের প্রতি যত্নবান হোন : পেনসিলভেনিয়ার একটি স্পা রিসোর্টের ফিটনেস ম্যানেজার সিনডি ওয়াসিলেসকি বলেন, ‘চ্যালেঞ্জিং কিন্তু অর্জন করা যায় এমন কিছু লক্ষ্য নির্ধারণ করুন এবং সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য সময়ের সদ্ব্যবহার করুন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট কাজ শেষ করুন।’ এমন কিছু মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করুন যাদেরও আপনার মতো ফিটনেস রুটিন এবং কর্মসূচি রয়েছে। যখন আপনি অনুশীলনে ব্যস্ত থাকেন তখন গান শুনতে পারেন, যেটি আপনাকে অনুপ্রেরণা যোগাবে।

* অর্থ খরচে সাশ্রয়ী হোন : সানফ্রান্সিসকোর একজন পারসোনাল ক্যাপিটেল বিশেষজ্ঞ মিশেল ব্রনিস্টেইন পরামর্শ দিয়েছেন, আর্থিক সফলতার জন্য প্রতি ৩০ দিনের অর্থ খরচের একটি বাজেট তৈরি করুন। বাজেট তৈরি, ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থের পরিমাণ দেখে একটি সুন্দর পরিকল্পনা তৈরি করার মাধ্যমে আপনি আর্থিকভাবে সুখী হতে পারেন।

* সন্তানদেরকে নিঃশর্তভাবে ভালোবাসুন : যাই ঘটুক না কেন সন্তানদের বেলায় কোনোরূপ সন্দেহ কিংবা তাদের নিজস্ব পরিচয় পরিবর্তন করা পিতামাতার উচিৎ নয়। অর্থাৎ আপনার সন্তানকে তার ইচ্ছামতো ক্যারিয়ার পছন্দ করতে দিন এবং তাদের নিজস্ব লিঙ্গীয় পরিচয়কে গ্রহণ করুন। যদি তার ভিন্নধর্মী লিঙ্গীয় আচরণকে মেনে নিতে আপনার কষ্ট হয় তবে তাকে চিকিৎসকের কাছে নিতে পারেন কিংবা বিশ্বস্ত একজন ভালো বন্ধুর সাহচার্যে রাখতে পারেন। আপনার সন্তানদেরকে সবকিছুর উর্ধ্বে গিয়ে নিঃশর্তভাবে ভালোবাসুন এবং তাদেরকে বলুন যেকোনো পরিস্থিতিতে আপনারা সবসময় পাশে আছেন।

* সম্পর্কের মধ্যে হিসাব করা বন্ধ করুন : এ ইয়ার অব লিভিং কাইন্ডলি’র  প্রতিষ্ঠাতা ডনা ক্যামেরুন বলেন, ‘সম্পর্ক কোনো প্রতিযোগিতার বিষয় নয়, এখানে একা কেউ জেতে না, প্রত্যেকে না জেতা পর্যন্ত।’ সম্পর্কগুলোকে যখন আমরা ভালো-খারাপ কিংবা কাছের-দূরের বিবেচনা করি তখন এর মধ্যকার আনন্দ শেষ হয়ে যায়। মানসিক হিসাব ও সাদৃশ্যকে ছুড়ে ফেলে দিলে যেকোনো সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমাদের মন থেকে সকল প্রকার বিরক্তিভাব, হিংসা এবং নৈরাশ্য উধাও হয়ে যাবে।

তথ্যসূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট

পড়ুন :





রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ ডিসেম্বর ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ