ক্রিসমাস ইভ : রাত ১০টায় হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি
প্রতীকী ছবি
লাইফস্টাইল ডেস্ক : ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন বা ক্রিসমাস ডে হলেও উৎসব শুরু হয় ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকেই। ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় (ক্রিসমাস ইভ) সামাজিক এবং পারিবারিক মিলনমেলা থেকে বড়দিন বা ক্রিসমাস ডের উৎসবের সূচনা হয়।
বড়দিন উপলক্ষে উপহার কেনা, প্যাকিং করা, রান্নার আয়োজন, ঘর পরিষ্কার, পরিবার- সব মিলিয়ে বেশি চাপজনক একটি সময়।
সুইডেনের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বড়দিনের আগের রাত দুর্বল হার্টের মানুষজনের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক সময়। বিট্রিশ মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত সুইডেনের বিজ্ঞানীদের গবেষণায় বলা হয়েছে, ক্রিসমাস ইভে রাত ১০টা নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে।
সুইডিশ গবেষকরা ১৯৯৮ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত তাদের দেশের ২ লাখ ৮৩ হাজার হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে দেখেছেন যে, বছরের কোন দিনটি সবচেয়ে বেশি বিপজ্জনক ছিল। গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, অন্যান্য দিনে গড়ে যেখানে ৫০টি হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা ঘটেছে, সেখানে বড়দিনের আগের রাত অর্থাৎ ক্রিসমাস ইভে তা ৩৭ শতাংশ বেড়ে গিয়ে ৬৯টি হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা ঘটেছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা ঘটেছে রাত ১০টার দিকে। অর্থাৎ পারিবারিক মিলনমেলা এবং খুব বেশি খাবার-দাবার ও মদ্যপানের পরবর্তী সময়টায়।
ক্রিসমাস ইভে রাত ১০টার দিকে হার্ট অ্যাটাক সবচেয়ে বেশি ঘটেছে বয়স্ক এবং অসুস্থদের মধ্যে।
গবেষণায় অন্যান্য দিনের তুলনায় জাতীয় ছুটির দিন, খেলাধুলার ইভেন্ট বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়গুলোতে হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা বেশি দেখা গেছে। গবেষণায় নিউ ইয়ার ইভ বা নববর্ষের আগের রাতে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি পাওয়া যায়নি, তবে নববর্ষে হার্ট অ্যাটাকের ২০ শতাংশ উচ্চ ঝুঁকি দেখা গেছে।
গবেষকরা বলেন, পুরো ক্রিসমাস ছুটিতে হার্ট অ্যাটার্কের ১৫ শতাংশ ঝুঁকি বৃদ্ধির ঘটনা দেখা গেছে। এর মধ্যে ক্রিসমাস ইভে রাত ১০টা নাগাদ হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ৩৭ শতাংশ বেশি ছিল। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি পরিলক্ষিত হয়েছে, ৭৫ বছর বয়সি মানুষদের মধ্যে যাদের হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিসের সমস্যা ছিল।
লুন্ড ইউনিভার্সিটির কার্ডিওলজি বিভাগের ডা. ডেভিড আরলিং বলেন, ‘আমাদের গবেষণা প্রধাণত ঐতিহ্যবাহী ছুটির দিনগুলোতে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি সম্পর্কিত ছিল।’
তিনি আরো বলেন, ‘ক্রিসমাস ইভ এবং তার পরবর্তী দুইদিন হার্ট অ্যাটাকের উচ্চ ঝুঁকি দেখা গেছে। তাই আমি মনে করি, উৎসব পালনের পাশাপাশি স্বাস্থ্য সচেতনতাও জরুরি। যদিও আমরা নিশ্চিত না, তারপরও বলা যায় মানসিক যন্ত্রণা যেমন তীব্র ক্রোধ, উদ্বেগ, বিষণ্ণতা, দুঃখ ও চাপের ঘটনা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। অত্যধিক খাদ্য গ্রহণ, অ্যালকোহল এবং দীর্ঘ ভ্রমণ ঝুঁকি বাড়াতে পারে।’
‘চমকপ্রদ ব্যাপার হচ্ছে, ক্রিসমাসের সময় সকালের দিকে ঝুঁকির ঘটনা বিপরীত, সন্ধ্যার দিকে বেড়ে যাওয়ার ঘটনা ইঙ্গিত দেয় যে, সারাদিনের ধকল ও খাবারের বিষয়টি হার্ট অ্যাটাকের সূত্রপাত ঘটায়।’
ডা. ডেভিড তার পরামর্শে বলেন, ‘মানুষজনকে অপ্রয়োজনীয় মানসিক চাপ এড়াতে হবে। হৃদরোগে আক্রান্ত এমন বয়স্ক মানুষদের ব্যাপারে যত্নবান হতে হবে। অত্যাধিক খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।’
তথ্যসূত্র : ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডট আইই
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ ডিসেম্বর ২০১৮/ফিরোজ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন