ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

‘একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ গড়তে হবে’

এনএ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১০, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ গড়তে হবে’

রাইজিংবিডি ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মর্যাদার সঙ্গে দেশের ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতিকে সুরক্ষা এবং চর্চার আহবান জানিয়ে বলেছেন, আসুন আমাদের মাতৃভূমিকে এমনভাবে গড়ে তুলি যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এর সুফল ভোগ করতে পারে এবং আমরা এক অনন্য মর্যাদায় চলতে পারি।

তিনি বলেন, ভাষা-সাহিত্য এবং সংস্কৃতিকে এগিয়ে নেওয়া আমাদের কর্তব্য। এ থেকে নতুন প্রজন্ম শিক্ষা নেবে। এছাড়া একুশের চেতনায় ভাষা-সংস্কৃতি রক্ষা এবং দেশ গড়ার কাজে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তবেই বিশ্বের বুকে বাংলা ভাষা এবং বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।

বুধবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে একুশে পদক ২০১৯ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।

একুশের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ মাথা উঁচু করে চলবে কারণ একুশ আমাদের শিখিয়েছে মাথা নত না করা। একুশ আমাদের শিখিয়েছে কিভাবে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করা যায়। কিভাবে নিজের মাতৃভাষা, শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য সবকিছুকেই রক্ষা করা যায়।’

 



শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের ভাষার অধিকার আমাদের সংস্কৃতি ও কৃষ্টিকে রক্ষার চর্চাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটা সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করা আমাদের কর্তব্য। আমরা অনেক সংগ্রামের মধ্যদিয়ে যেটা অর্জন করেছি তার সুফলটা যেন আগামী প্রজন্ম ভোগ করতে পারে, তারা যেন একটা সুন্দর জীবন পায় সেটাই আমরা চাই।’

একুশে পদক বিজয়ীদের উদ্দেশ্যে সরকার প্রধান বলেন, ‘আজকে যারা একুশে পদক পেয়েছেন তারা গুণীজন। তাঁরা স্ব-স্ব ক্ষেত্রে কীর্তিমান, তাঁদের বিশাল অবদান রয়েছে। সেই অবদানের কথা সবসময়ই আমরা স্মরণ করি এবং আমি মনে করি, আমাদের আগামী দিনের প্রজন্মও তাঁদের অনুসরণ করে নিজেদেরকে গড়ে তুলবে। তিনি বলেন, আমরা বাঙালি জাতি, বাংলাদেশ আমাদের দেশ, বাংলা আমাদের ভাষা- যে কথা জাতির পিতা বারবার বলে গেছেন। সেই দেশকেই আমরা গড়ে তুলতে চাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের দরবারে একটি মর্যাদার আসনে বাংলাদেশ যেন অধিষ্ঠিত হয় এবং বাঙালি জাতি যেন বিশ্বসভায় সম্মানের সঙ্গে মাথা উঁচু করে চলতে পারে সেটা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী স্ব-স্ব ক্ষেত্রে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২১ জন ব্যক্তিকে রাষ্ট্রের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক ২০১৯ এ ভূষিত করেন। গত ৬ ফেব্রুয়ারি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এই পদক বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে।

 



এ বছরের একুশে পদক বিজয়ীরা হচ্ছেন- ভাষা আন্দোলনে অবদানের জন্য মরহুম অধ্যাপক হালিমা খাতুন (মরনোত্তর), যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি গোলাম আরিফ টিপু এবং অধ্যাপক মনোয়ারা ইসলাম। ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য একুশে পদক পেয়েছেন মহান মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকার জন্য। প্রয়াত পপ শিল্পী আজম খান (মরণোত্তর) ও নজরুল সংগীত শিল্পী খায়রুল আনাম শাকিলের সঙ্গে এবার সংগীত বিভাগে এ পুরস্কার পান গায়ক সুবীর নন্দী। সুবর্ণা মুস্তাফার সঙ্গে লাকী ইনাম ও লিয়াকত আলী লাকী একুশে পদক পান অভিনয়ের জন্য। দেশের প্রথম নারী আলোকচিত্রী সাইদা খানম আলোকচিত্রে অবদানের জন্য এবং চিত্রশিল্পী জামাল উদ্দিন আহমেদ চারুকলায় এ পুরস্কার পান। গবেষণায় ড.বিশ্বজিৎ ঘোষ ও ড.মাহবুবুল হক এবং শিক্ষায় ড.প্রণব কুমার বড়ুয়াকে এ পদক প্রদান করা হয়।

এছাড়া ভাষা সাহিত্যে রিজিয়া রহমান, ইমদাদুল হক মিলন, অসীম সাহা, আনোয়ারা সৈয়দ হক, মইনুল আহসান সাবের ও হরিশংকর জলদাস একুশে পদক পান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একুশে পদক বিজয়ীদের হাতে পদক তুলে দেন এবং মরণোত্তর একুশে পদক বিজয়ী মরহুম অধ্যাপক হালিমা খাতুনের পক্ষে তাঁর কন্যা বেগম প্রজ্ঞা লাবনী এবং পপ সম্রাট আজম খানের পক্ষে তাঁর কন্যা বেগম ইভা খান পুরস্কার গ্রহণ করেন।

সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. আবু হেনা মুস্তফা কামাল অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন। মন্ত্রী পরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এবং পদক বিজয়ীদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি পাঠ করেন।

 



অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, সরকারের উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, বিচারপতি, পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, কবি, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, শিল্পীসহ বিশিষ্ট নাগরিক, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং পূর্বের একুশে পদক বিজয়ী ও আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, এককালীন দুই লাখ টাকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয়।

ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে সরকার ১৯৭৬ সাল থেকে প্রতি বছর বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এই পুরস্কার দিয়ে আসছে। এ পর্যন্ত ৪৫৭ জন সুধী এবং তিনটি প্রতিষ্ঠানকে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র : বাসস



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/এনএ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়