ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

সাব-কন্ট্রাক্ট কারখানায় বেতন ভাতা নিয়ে শঙ্কা

এএম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২৭ জুলাই ২০১৪   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সাব-কন্ট্রাক্ট কারখানায় বেতন ভাতা নিয়ে শঙ্কা

বিজেএমইএ ও বিকেএমইএর লোগো

নিজস্ব প্রতিবেতক : ২৬ জুলাইয়ের (শনিবার) মধ্যে পোশাক খাতের সব কারখানায় বেতন-ভাতা পরিশোধের নির্দেশ ছিল সরকারের। এ সময়ের মধ্যে সব কারখানায় বেতন-ভাতা পরিশোধের অঙ্গীকার করেছিল বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ।

তবে এ দুই সংগঠন বহির্ভূত সাব-কন্ট্রাক্ট কারখানায় এ নির্দেশনা পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। এজন্য এসব কারখানায় শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েই গেছে।

কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতরের হিসেবে প্রায় ৮০০ কারখানা আছে, যেগুলো বিজেএমইএ ও বিকেএমইএর সদস্য নয়। বড় কারখানার কন্ট্রাক্ট নিয়ে কাজ করে তারা। সূত্রমতে, অনেক পোশাক কারখানা শনিবারই ছুটি হয়ে গেছে। যেগুলো খোলা আছে, সেগুলোয় আজ রোববারের মধ্যে বেতন-ভাতা পরিশোধের আশ্বাস দিয়েছে মালিকপক্ষ।

তারপরও সাব-কন্ট্রাক্ট পদ্ধতিতে পরিচালিত প্রায় সাড়ে ৩০০ কারখানায় ঈদের আগে বেতন-ভাতা পরিশোধে অনিশ্চয়তা রয়েছে। এর মধ্যে সংগঠনের সদস্য যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে সংগঠনের সদস্য নয় এমন কারখানাও।
এদিকে শিল্প পুলিশ সূত্র বলছে, তাদের নজরদারিতে থাকা ৩ হাজার ৬৫৫ কারখানার মধ্যে ৫ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ১৮৩ কারখানায় বেতন-ভাতা পরিশোধ হবে কি-না, তা নিয়েও সংশয় রয়ে গেছে।

জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, সাব-কন্ট্রাক্ট করে, এমন প্রায় সাড়ে ৩০০ কারখানার শ্রমিকের বেতন-ভাতা পরিশোধ নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। একই অনিশ্চয়তা রয়েছে সরাসরি রপ্তানি করে এমন প্রায় অর্ধশত কারখানায়। যদিও আগেই রোববারের মধ্যে সব কারখানায় বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিল মালিকপক্ষ।

গার্মেন্ট শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু সাংবাদিকদের বলেন, ‘সারা দেশের সাড়ে তিন হাজার পোশাক কারখানার মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশের বেতন-ভাতা পরিশোধ নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। এর বাইরে আছে সংগঠনের সদস্য নয়, এমন অনেক কারখানা। এ কারখানাগুলোর ওপর সরকারের তদারকি প্রয়োজন।

কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সাব-কন্ট্রাক্ট ভিত্তিতে পরিচালিত হয়, এমন অনেক কারখানার মালিক প্রকাশ্যে থাকেন না। এর মধ্যে কিছু কিছু কারখানায় গত মাসের বেতনও পরিশোধ করা হয়নি। আর শ্রমিকরা বকেয়াসহ চলতি মাসের বেতন-ভাতা ও ঈদ বোনাস পাবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় কাটেনি।

অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক সৈয়দ আহমেদ বলেন, ‘সংগঠনের সদস্য ও সদস্য নয়, এমন সব কারখানার বেতন-ভাতা পরিস্থিতি আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে, এমন বড় কোনো ঘটনার আশঙ্কা নেই। তবে সদস্য নয়, এমন কারখানাগুলোর কোনো কর্তৃপক্ষ না থাকায় এগুলো নিয়ে এক ধরনের সংশয় থেকেই যায়।

অধিদপ্তর নিয়মিতভাবে পোশাক কারখানার কমপ্লায়েন্স ব্যবস্থাপনা পরিদর্শন করে। ২০১৩ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ ও এপ্রিল থেকে জুন— এ তিন প্রান্তিকের প্রতিবেদনেও সংগঠনের সদস্য নয়, এমন কারখানায় মজুরি পরিশোধ নিয়ে নেতিবাচক চিত্র উঠে এসেছে। সর্বশেষ প্রান্তিকের প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে সংগঠনের সদস্য নয়, এমন ২০৩টি কারখানার ৭৩ শতাংশে নিয়মিত মজুরি পরিশোধ হয় না। আর সরকার ঘোষিত মজুরি কাঠামো অনুসরণ করে না, এমন কারখানা ৬৭ শতাংশ।

খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, এবার পোশাক কারখানাগুলোয় ক্রয়াদেশের ঘাটতি রয়েছে। কমপ্লায়েন্স ইস্যুকে কেন্দ্র করে বড় কারখানাগুলো সামর্থ্যের তুলনায় ক্রেতাদের কাছ থেকে যথেষ্ট ক্রয়াদেশ নিতে পারেনি। ফলে সাব-কন্ট্রাক্ট কারখানাগুলোয়ও সেভাবে কাজ আসেনি।

শিল্প পুলিশ সূত্র জানায়, শনিবার সাভারের রানা প্লাজার পাশে এসএমএন সোয়েটার নামের একটি সাব-কন্ট্রাক্ট কারখানার শ্রমিকরা বেতন-ভাতার দাবিতে মানববন্ধন করেন। পরে কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তর এবং শিল্প পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৭ জুলাই ২০১৪/এএম/সনি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়