ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

অনড় বিজিএমইএ, হরতাল দিতে পারে তোবার শ্রমিকরা

নিয়াজ মাহমুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ৬ আগস্ট ২০১৪   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
অনড় বিজিএমইএ, হরতাল দিতে পারে তোবার শ্রমিকরা

অনশনরত তোবার শ্রমিকরা

নিয়াজ মাহমুদ : তোবা গ্রুপের পোশাক কারখানার শ্রমিকদের তিন মাসের বকেয়া-বেতনাদি পরিশোধের ব্যাপারে আগের অবস্থানেই অনড় রয়েছে পোশাক কারখানা মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ। এদিকে আজ বুধবারের মধ্যে সমস্ত পাওনা পরিশোধ ও তোবার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) দেলোয়ার হোসেনের জামিন বাতিল না হলে হরতাল কর্মসূচি ঘোষণার কথা ভাবছেন আন্দোলনরত শ্রমিকেরা।

বিজিএমইএ’র সহ সভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘বিজিএমইএ কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান নয় যে তারা তোবার শ্রমিকদের বেতন দেবে। এটা শুধু সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। তবে মানবিক কারণে সংগঠনটি বিভিন্ন উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহ করে শ্রমিকদের দুই মাসের পাওনা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। ইতিমধ্যে শ্রমিকদের বেতন প্রদানের সব রকমের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। বুধবারের মধ্যে শ্রমিকরা বেতন না নিলে বিজিএমইএ এ বিষয়ে আর কোন দায় নেবে না।’

তোবা গ্রুপ শ্রমিক সংগ্রাম কমিটির সমন্বয়ক মোশরেফা মিশু রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘শ্রমিকদের দাবি আদায়ের জন্য প্রয়োজনে হরতাল, ধর্মঘটের মতো কর্মসূচি দেওয়া হবে। বিজিএমইএ তামাশা শুরু করেছে। শ্রমিকরা এখন আর তামাশা দেখার পর্যায়ে নেই। এখন ন্যায্য পাওনা চাই। তা না হলে মৃত্যু হলেও আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
জুন ও জুলাই মাসের বেতন, ওভারটাইম ও ঈদ বোনাসের দাবিতে রাজধানীর বাড্ডার হোসেন মার্কেটে ঈদের আগের দিন থেকে অনশন করে আসছেন তোবা গ্রুপের পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। একইসঙ্গে শ্রমিকরা প্রতিষ্ঠানটির এমডি দেলোয়ার হোসেনের শাশুড়ি লাইলী বেগমকে কারখানা ভবনে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন।

৩ আগস্ট বিজিএমইএ অফিসে সরকার, গার্মেন্টস শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ ও বিজিএমইএ’র নেতাদের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত ত্রিপাক্ষীয় সভায়  তোবার শ্রমিকদের দুই মাসের বেতন পরিশোধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু শ্রমিকেরা এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেন। তারা পাওনা তিন মাসের বেতন ও বোনাস একসঙ্গে পরিশোধ করার দাবি জানিয়ে আসছেন।

অনশনরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিন মাসের বকেয়া বেতন আদায়ের জন্য তারা সকল ধরনের আন্দোলন করে যাবেন। মালিকপক্ষের শ্রমিকরা আন্দোলনকে বিভক্ত করার চেষ্টা করছে বলে অভিাযোগ করেন তারা। তবে তারা মনে করেন, মালিকপক্ষের শ্রমিকরা সফল হবে না।

তোবা গ্রুপ শ্রমিক সংগ্রাম কমিটির নেতা মো. মিরাজ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘যদি বুধবারের মধ্যে সব পাওনা পরিশোধ করা না হয়, তাহলে হরতাল-অবরোধের মত কর্মসূচি দিতে আমরা বাধ্য হব। তিন মাসের বেতন-বোনাস একসঙ্গে না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’

মঙ্গলবার বিজিএমইএ’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এস এম মান্নান কচি সাংবাদিকদের বলেন, ‘মানবিক কারণে আমরা ত্রিপক্ষীয় (বিজিএমইএ, চারটি ট্রেড ইউনিয়ন ও তোবা গ্রুপ) বৈঠক করে বিভিন্ন উৎস থেকে দুই মাসের টাকার ব্যবস্থা করেছি। বুধবার সকাল ৯টা থেকে তাদের বেতন দেওয়া হবে। বাকি টাকা কর্তৃপক্ষকে সময় মতো পরিশোধ করতে হবে। শ্রমিকের যুক্তিসংগত পাওনায় আমাদের কোনো দ্বিমত নেই।’

এদিকে বেতনের দাবিতে দশম দিনের মতো অনশন করছেন তোবা গ্রুপের পোশাক শ্রমিকেরা। ঈদের আগের দিন শুরু হওয়া এই আমরণ অনশনে বুধবার পর্যন্ত ১১৯ জন শ্রমিক অসুস্থ হয়েছেন। এর মধ্যে গুরুতর অসুস্থ ১২ জনকে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

 


রাইজিংবিডি/ঢাকা/৬ আগস্ট ২০১৪/নিয়াজ/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়