ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

জাহাঙ্গীর হত্যা : তিন ক্লু নিয়ে মাঠে গোয়েন্দারা

উজ্জল জিসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৩৭, ১১ আগস্ট ২০১৪   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জাহাঙ্গীর হত্যা : তিন ক্লু নিয়ে মাঠে গোয়েন্দারা

জাহাঙ্গীর কবিরের লাশের পাশে স্বজনদের আহাজারি

উজ্জল জিসান : হত্যার কারণ হিসেবে জাহাঙ্গীর কবিরের পরিবারের পক্ষ থেকে যে তিনটি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে, সেগুলোকে ক্লু হিসেবে নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ মাঠে নেমেছে। অস্থায়ী কোরবানির পশুরহাট ইজারা নেওয়ার দ্বন্দ্ব, ৪১ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি পদে প্রার্থিতা অথবা তার শ্বশুর অপহরণের নেপথ্যের কারণে ৪১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবিরকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে তার পরিবার পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন। পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ এই তিন ক্লু নিয়ে রহস্য উদ্‌ঘাটনে মাঠে নেমেছে।

জাহাঙ্গীর হত্যার দুই দিন পেরিয়ে গেলেও পরিবার কিংবা পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়নি। পুলিশ বলছে, এ মামলা পরিবারের পক্ষ থেকেই দায়ের করতে হবে। আর পরিবার বলছে, তারা মামলা করলেও পুলিশের তো একটা মামলা দায়ের করা দরকার। কেননা জাহাঙ্গীর খুন হয়েছেন বাসার সামনের রাস্তায়।

এ বিষয়ে শেরেবাংলা নগর থানার এসআই আহাদ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘এখনো মামলা দায়ের করা হয়নি। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করার অপেক্ষায় আছি।’ পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে কি না- তা জানাতে পারেননি তিনি।

গত শনিবার রাত ১২টার দিকে আগারগাঁওয়ের বিএনপিবাজার বস্তিসংলগ্ন শাপলা হাউজিংয়ের নিজ বাসার সামনে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন জাহাঙ্গীর কবির। স্ত্রী পারভীন আক্তারসহ স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জাহাঙ্গীর কবিরের স্ত্রী পারভীন জানান, এবার কোরবানির ঈদে আগারগাঁও পশুরহাট ইজারা নেওয়ার কথা ছিল জাহাঙ্গীরের। গত বছর হাটটি ইজারা নিতে চাইলেও তিনি পাননি। এ বছর জাহাঙ্গীর কবিরকে হাটটি ইজারা দেওয়ার দলীয় সিদ্ধান্ত ছিল। প্রতিপক্ষ এটা জেনেই তাকে হত্যা করে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি।

পারভিন আরো বলেন, ‘জাহাঙ্গীর ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন এবার। এটার জেরেও প্রতিপক্ষ তাকে খুন করতে পারে। এর আগে আমার বাবা হাজি নুর মোহাম্মদ একই ওয়ার্ডের সভাপতি ছিলেন। তিনি গত ২০১২ সালের ১৯ নভেম্বর সাভার থেকে অপহৃত হন। এরপর থেকেই জাহাঙ্গীর শ্বশুরের আধিপত্য নিজের আয়ত্তে নেন।’

দশম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে জয় ও দুই বছরের মেয়ে জান্নাতকে নিয়ে শাপলা হাউজিংয়ের একটি বাসায় থাকেন জাহাঙ্গীর কবির।  

জাহাঙ্গীরের গাড়িচালক রফিকুল জানান, ঘটনার দিন মিরপুরে ব্যক্তিগত কাজ শেষে স্ত্রী পারভীনসহ রাত ১২টার দিকে গাড়িতে করে বাসার সামনে আসেন। বাসার সামনে দুজন হাফপ্যান্ট পরা যুবক দাঁড়িয়ে ছিল। গাড়ি থামার সঙ্গে সঙ্গেই গাড়ি লক্ষ্য করে তারা গুলি ছোড়ে। এ সময় জাহাঙ্গীর গাড়ি থেকে নেমে দৌড় দেন। তারাও পিছু নিয়ে দু-তিনটি গুলি ছোড়ে।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা জানান, স্থানীয় বিভিন্ন ব্যবসা ও ঠিকাদারি কাজ নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের মধ্যে একাধিক গ্রুপ রয়েছে। এদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে দ্বন্দ্ব অনেক আগে থেকেই দৃশ্যমান। এ কারণেও জাহাঙ্গীর কবির খুন হতে পারেন।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশের তেজগাঁও জোনের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, অপরাধীরা যে দলেরই হোক, তাদের খুঁজে বের করা হবে। পরিবারের দেওয়া অভিযোগগুলোকে মাথায় রেখে সবকিছু যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। সে অনুযায়ী মাঠে নামা হয়েছে। কয়েকটি ক্লু নিয়ে গোয়েন্দারা কাজ করছেন। খুব শিগগিরই অপরাধীদের ধরা সম্ভব হবে।

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১১ আগস্ট ২০১৪/জিসান/বকুল/কমল কর্মকার

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ