ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

নিরপেক্ষ সরকার ও নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি বি চৌধুরীর

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৫৮, ২৫ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নিরপেক্ষ সরকার ও নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি বি চৌধুরীর

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : নির্বাচনের আগেই সংসদ ভেঙে দিয়ে একটি নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ.কিউ.এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।

শুক্রবার রাজধানীর আবদুল্লাহপুরে পলওয়েল কনভেনশন সেন্টারে ঢাকা মহানগর উত্তর বিকল্পধারা আয়োজিত আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি জানান।

বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট বি. চৌধুরী বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সব বাধা দূর করার জন্য প্রথমে প্রয়োজন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বা সমতল ক্ষেত্রভূমি। এই জায়গায় যদি বিভিন্ন ধরনের বাধা থাকে তা হলে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত হবে না। এর জন্য প্রথম প্রয়োজন নির্বাচনের আগেই সংসদ ভেঙে দেওয়া। তারপর নির্বাচনকালীন সময়ে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ একটি সরকার এবং প্রমাণিত নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন। জাতীয় সংসদ এজন্য ভেঙে দিতে হবে যাতে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরা তাদের পদমর্যাদার সরকারি সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করতে না পারেন।

তিনি বলেন, যেহেতু বর্তমান সরকার নিজেদের গণতন্ত্রের প্রতি দৃঢ়বিশ্বাসী বলে বার বার ঘোষণা করছে, সেহেতু প্রধান দায়িত্ব বর্তমান সরকারের ওপরই বর্তায়। হাজার হাজার রাজনৈতিক নেতা-কর্মীকে আটক রাখলে নির্বাচনে সমতল ক্ষেত্রভূমি কখনো তৈরি হবে না।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিকল্পধারার সভাপতি মাহবুব আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় জেএসডি সভাপতি আ.স.ম আবদুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বীর প্রতীক, বিকল্পধারার কেন্দ্রীয় নেতা, ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, মাহফুজুর রহমান, শাহ আহম্মেদ বাদল, আসাদুজ্জামান বাচ্চু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, মাদক এবং অন্যান্য অজুহাতে কারা নিহত হচ্ছেন আমরা তা জানি না। তাদের নাম, পরিচয় জানি না। দাবি উঠেছে এরা রাজনৈতিক কর্মী। যদি বিভিন্ন অজুহাতে রাজনৈতিক কর্মীদের হত্যা এবং জেলে আটক রাখা হয় এবং একটি বিশেষ গোষ্ঠীর কর্মীদের হাতে ময়দান ছেড়ে দেওয়া হয়, তাহলে সেটা নির্বাচনের জন্য সমতল ক্ষেত্রভূমি হলো না, হবে না।

তিনি বলেন, যদি দেশের মানুষ সত্যিকারের বিপদের আশংকাকে উপলব্ধি করতে পারেন এবং দেশের শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষার খাতিরে একটি তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তির উত্থান ঘটাতে পারেন শুধুমাত্র তাহলেই এই আশংকাজনক ভবিষ্যতের সম্ভাব্য চিত্র বদলে যেতে পারে।

তিনি বলেন, এই তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি যদি জনগণের সমর্থনে উঠে আসতে পারে, তাহলে তারা বিবদমান ওই দুইটি রাজনৈতিক দলকে দারুণভাবে প্রভাবিত করতে পারবে। যার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন এবং নির্বাচন-পরবর্তী ভয়াবহ সহিংসতা, হত্যা, অগ্নিসংযোগ এবং সামাজিক অত্যাচারের হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।

বি. চৌধুরী বলেন, আমরা একটি সুন্দর স্থায়ী সমাধানের পক্ষে কাজ করতে চাই। আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ করি না এবং সব রাজনৈতিক দলের তরফ থেকে একই আচরণ প্রত্যাশা করি।

তিনি বলেন, আমরা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি, ঘৃণা শুধু ঘৃণার জন্ম দেয়। আর হিংসা শুধু হিংসার জন্ম দেয়। আমরা আরো বিশ্বাস করি, শ্রদ্ধা করে কেউ ছোট হয় না। আর ঘৃণা করে কেউ বড় হয় না।

দেশবাসীকে রমজানের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ বলেন, পবিত্র সিয়াম সাধনার মাসে আমরা যেন মুত্তাকি হতে পারি, আরো উন্নত মানুষ হতে পারি। একে অন্যকে শ্রদ্ধা করতে পারি, লোভ-লালসা-হিংসা পরিহার করে দেশের মানুষের জন্য সুন্দর ভবিষ্যতের প্রত্যাশায় ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম করতে পারি।

তিনি বলেন, আমি বিকল্পধারা, যুক্তফ্রন্ট এবং আমাদের বন্ধু জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি ও নাগরিক ঐক্যের মূল বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করে বলছি, আমরা দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম করব এবং সব নাগরিকের জন্য আইনের শাসন সুনিশ্চিত করব ইনশাল্লাহ্। দেশের বুদ্ধীজীবীসহ সকল মানুষের প্রতি আমাদের আহ্বান তারা যেন ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেন।

এ প্রসঙ্গে বি. চৌধুরী বলেন, গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন আমাদের সাথে একসঙ্গে কাজ করার কথা ঘোষণা করেছেন, আমি তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।

জেএসডি সভাপতি আ.স.ম আবদুর রব বলেন,  আমরা মাদকের বিরোধী কিন্তু বিনাবিচারে হত্যা সমর্থন করি না। খুলনার নির্বাচনে ভোট ডাকাতি হয়েছে। কিন্তু গাজীপুরে এমন কিছু করার চেষ্টা করলে যুদ্ধ বেধে যাবে।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, মাদকের নামে বিনাবিচারে ৫৪ জন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, যারা হত্যা করেছে তাদেরও বিচার করা হবে। তিনি রোজার পর অধিকার আদায়ের সংগ্রামে যুক্তফ্রন্টের সাথে বিএনপিকে রাজপথের আন্দোলনে নামার আহ্বান জানান।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ মে ২০১৮/নঈমুদ্দীন/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়