জাপার বাবলুর আসনে মনোনয়ন চান আ’লীগের তারেক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম -৯ আসনে এবার নির্বাচন করতে ইচ্ছুক মহানগর ছাত্রলীগের প্রাক্তন সভাপতি ও বর্তমান সিটি কর্পোরেশনের প্রভাবশালী ওয়ার্ড কাউন্সিলর তারেক সোলেমান সেলিম।
ওই আসনে বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রাক্তন মন্ত্রী জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুও এবার প্রার্থী। কিন্তু বাবলুকে হটিয়ে তারেক সোলেমান আওয়ামী লীগের হয়ে সেটি পুনরুদ্ধার করতে চান।
জাতীয় পার্টিতে সরকারপন্থী বলে পরিচিত দলের প্রাক্তন মহাসচিব জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলুর নির্বাচনী এলাকা চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী) আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রথমদিনেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন তারেক।
মনোনয়ন ফরম কেনার খবরে চট্টগ্রামের ওই আসনে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে। আর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আনন্দ উৎসব করছে। তবে জাতীয় পার্টি মহাজোটের হয়ে নির্বাচন করলে এই আসনটিতে আবারো জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুই হবেন মহাজোটের প্রার্থী, এমনটিই প্রত্যাশা জাপা নেতাকর্মীদের।
অন্যদিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দাবি, চট্টগ্রামের সবচাইতে এই গুরুত্বপুর্ণ আসন এবার দলীয় সভপিতি হাতছাড়া করবেন না। বহিরাগত কাউকে না দিয়ে নৌকার প্রার্থী হিসেবে যেন তারেক সোলেমানকে দেওয়া হয়।
দশম সংসদ নির্বাচনে ওই আসনটি সমঝোতার মাধ্যমে জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়া হলে ওই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। তার মূল নির্বাচনী এলাকা হলো চট্টগ্রামের হাটহাজারি উপজেলা। কিন্তু জাতীয় পার্টি বাবলুর জন্য চট্টগ্রাম-৯ আসনটি দাবি করায় বৃহত্তর চট্টগ্রামের সবচাইতে আলোচিত এই আসন হাতছাড়া করতে হয় আওয়ামী লীগকে।
ওই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন বর্তমান প্রবাসী কল্যানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি। দলের স্বার্থে মনোনয়ন ছেড়ে দেওয়ায় তাকে পরবর্তী মূল্যায়ণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে টেকনোক্রেট কোটায় পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন।
এবার মনোনয়ন ফরম বিক্রির প্রথম দিনেই চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আলোচিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর তারেক সোলেমান সেলিম বাবলুর বর্তমান আসনে মনোনয়ন পত্র কেনায় জাপা শিবিরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। বাবলু ও অনুসারি জাপা নেতাকর্মীরা এতে ক্ষুব্ধ। কারণ এবারও জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু এই আসনে নির্বাচন করতে চান।
তবে চট্টগ্রামের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ এ আসন এবার যেন হাতছাড়া করা না হয় সেই দাবি করছেন আওয়ামী লীগের উক্ত আসনের নেতাকর্মীরা।
তাদের অভিযোগ, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বহিরাগত। ৫ বছরে এমপি থেকে তিনি এলাকার দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন করতে পারেননি। পাঁচবছরে এলাকাবাসী তাকে সুখে দুখেও পায়নি। তাছাড়া আওয়ামী লীগ সরকার আমলে চট্টগ্রামের এই গুরুত্বপুর্ণ আসনে দলীয় লোক এমপি না থাকার কারণে আওয়ামী লীগের ক্ষতি হয়েছে। তাই সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে জাতীয় পার্টির কাছ থেকে এই আসন পুনরুদ্ধার করা উচিত। তারা তারেক সোলেমান সেলিমকে মনোনয়ন দেওয়া দেওয়ার দাবি জানান।
তারেক সোলেমান চট্টগ্রামের আলকরন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। ‘৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রামে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে কারাবরণ এবং অসহনীয় নির্যাতন ভোগ করেন। ২১ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় বোমা হামলার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে সর্বপ্রথম তার নেতৃত্বে নিউ মার্কেট এলাকায় প্রতিবাদ মিছিল বিক্ষোভ হয়। এ ঘটনায় তাকে গ্রেপ্তার করা হলে ছাত্র জনতা দীর্ঘক্ষণ থানা ঘেরাও করে রাখে। পরে তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। ১/১১ এ আবারো তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তারেক সোলেমান বলেন, আমি আওয়ামী লীগের একজন সাধারণ কর্মী। চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ও চট্টগ্রাম সরকারী সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম। দল যখন যে দায়িত্ব দেন তা সততার সঙ্গে পালন করেছি।
তিনি বলেন, দীর্ঘ ৫ বছর এই আসন আমাদের হাতছাড়া। তাই আসনটি পুনরুদ্ধার করে নেত্রীকে উপহার দিতে চাই। নেত্রী যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেটাই মাথাপেতে নেব।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী তারেক সোলেমান সেলিম চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র এবং প্যানেল মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ নভেম্বর ২০১৮/নঈমুদ্দীন/এনএ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন