ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

নিজে করুন নিজের চিকিৎসা (শেষ পর্ব)

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:৫২, ১৩ নভেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নিজে করুন নিজের চিকিৎসা (শেষ পর্ব)

প্রতীকী ছবি

এস এম গল্প ইকবাল : আমাদের শরীর সবসময় সমস্যামুক্ত বা রোগমুক্ত থাকবে এমন গ্যারান্টি দেওয়া যায় না। কখনো কখনো শরীর এমন কিছু সমস্যার আওতায় আসে যার চিকিৎসা আমরা ঘরে অবস্থান করে করতে পারি।

কিছু ঘরোয়া চিকিৎসা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামতের ওপর ভিত্তি করে রিডার্স ডাইজেস্টে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। রিডার্স ডাইজেস্টের জন্য প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন ডিনিস ম্যান, এমএস (মাস্টার অব সার্জারি)।

ঘরোয়া চিকিৎসাগুলো নিয়ে রিডার্স ডাইজেস্টের প্রতিবেদনের আলোকে রাইজিংবিডির দুই পর্বের প্রতিবেদনের আজ শেষ পর্বে ৭টি ঘরোয়া চিকিৎসা তুলে ধরা হলো।



* হেঁচকির জন্য চিনি

হেঁচকির জন্য ওষুধ হিসেবে চিনি খেতে পারেন। ডা. মার্টিন বলেন, ‘স্বচ্ছ দানাদার চিনি স্বাভাবিকের তুলনায় শক্ত বা অকোমল কিছু গ্রাস করতে সাহায্য করে এবং এটি আপনার ডায়াফ্রামকে রিসেট করতেও কাজ করে।’ হেঁচকি হচ্ছে, ডায়াফ্রামের স্প্যাজম বা অনৈচ্ছিক সংকোচন।

* সংক্রমিত নখের জন্য ভিনেগার
আপনার আঙুলের নখ ব্যাক্টেরিয়াল বা ফাঙ্গাল ইনফেকশনের (যা নখ ও ত্বক একত্রে মিলে গেলে হয়) মতো স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ প্রকাশ করতে পারে। আপনার যদি ব্যাক্টেরিয়াল বা ফাঙ্গাল ইনফেকশনের কোনো লক্ষণ থাকে (যেমন- পুরু, ক্ষয়প্রাপ্ত ও হলদে পায়ের আঙুল), তাহলে সংক্রমিত আঙুলের নখকে হোয়াইট ভিনেগারে ভিজান। হোয়াইট ভিনেগার হচ্ছে, প্রমাণিত অ্যান্টিফাঙ্গাল। ডা. ফ্রিডম্যান বলেন, ‘হোয়াইট ভিনেগার শোষণে অর্ধেক ভিনেগার ও অর্ধেক পানি থাকা উচিত।’ সংক্রমিত আঙুল সেরে না ওঠা পর্যন্ত প্রতিবার ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় নিয়ে প্রতিদিন তিন বা চার বার হোয়াইট ভিনেগারে ভিজান।

* লেগ ক্র্যাম্পের জন্য ম্যাগনেসিয়াম

লেগ ক্র্যাম্প বা পায়ের খিল ধরা বা পায়ের খিঁচুনি হতে পারে ম্যাগনেসিয়াম ঘাটতির লক্ষণ। ‘দ্য মিরাকল অব ম্যাগনেসিয়াম’র লেখক এবং হাওয়াইয়ের ন্যাচারোপ্যাথিক ফিজিশিয়ান ক্যারোলিন ডিন বলেন, ‘মাসল ক্র্যাম্পিং বা মাংসপেশির খিঁচুনির সবচেয়ে বড় কারণের একটি হচ্ছে, ম্যাগনেসিয়াম ঘাটতি।’ তিনি বলেন, ‘ম্যাগনেসিয়াম শরীরের মধ্যে শিথিলতা প্রণোদিত করে (যেমন- মানসিক চাপ এবং মাংসপেশির টানের ক্ষেত্রে)।’ শরীর দ্বারা সকল প্রকার ম্যাগনেসিয়াম সহজে শোষিত হতে পারে না। ডা. ডিন বলেন, ‘ম্যাগনেসিয়াম সাইট্রেট পাউডার অত্যন্ত শোষণযোগ্য যা দ্রুত কাজ করে, গরম বা ঠান্ডা পানির সঙ্গে তা মিশানো যায় এবং কর্মস্থলে বা ঘরে মাসল ক্র্যাম্পিং হলে এ মিশ্রিত তরলে তৎক্ষণাৎ চুমুক দেওয়া যায়।’

* মেন্সট্রুয়েল ক্র্যাম্পের জন্য ক্যামোমাইল চা

মেন্সট্রুয়েল ক্র্যাম্প বা স্বাভাবিক মাসিক চক্রের সময় তলপেটের ব্যথা দূর করতে ক্যামোমাইল চা ব্যবহার করতে পারেন। নিউ ইয়র্কের ওমেন’স হেলথ প্রোগ্রামস-পিসিএপি সার্ভিসেস অব নর্থওয়েল হেলথের ডিভিশন অব অ্যাম্বুলেটরি কেয়ারের সহ-প্রধান ডা. জিন রাবিন বলেন, ‘নিম্ন পেট বা পিঠে কোল্ড প্যাক বা হিটিং প্যাড ক্র্যাম্প থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করতে পারে, সম্ভব হলে উষ্ণ পানি ও ক্যামোমাইল চা-তে একটি ওয়াশক্লথ ভিজিয়ে একই জায়গায় রাখুন।’ ক্র্যাম্প তীব্র হলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।

* বমি বমি ভাবের জন্য আদা ও পুদিনা

বমি বমি ভাবের জন্য সবচেয়ে ভালো ঘরোয়া ওষুধ হচ্ছে, আদা ও পুদিনা। ডা. রাবিন বলেন, ‘শুধুমাত্র আদা ও পুদিনার ঘ্রাণ গ্রহণ বমি বমি ভাব প্রশমিত করতে পারে অথবা শুরু থেকেই বমি বমি ভাব প্রতিরোধ করতে পারে।’

* সানবার্নের জন্য ঠান্ডা ব্ল্যাক টি ব্যাগ

সানবার্ন বা রোদে পোড়া দাগ প্রতিরোধ করার জন্য সানস্ক্রিন ব্যবহার করা প্রয়োজন। ডা. ফ্রিডম্যান সানবার্ন দূর করার জন্য কুল কম্প্রেস ও ঠান্ডা ব্ল্যাক টি ব্যাগ ব্যবহার করতে পরামর্শ দেন। কুল কম্প্রেসের সাহায্যে ত্বককে আর্দ্র রাখুন। ঠান্ডা ব্ল্যাক টি ব্যাগে থাকা ক্যাফেইন সানবার্ন বা রোদে পোড়া লাল দাগ দূর করে, কারণ ক্যাফেইন প্রদাহবিরোধী ও রক্তনালী সংকোচক।

* দাঁত ও মাড়ির ব্যথার জন্য লবণ পানি ও লবঙ্গ তেল

নিউ ইয়র্ক সিটির ডেন্টিস্ট সল প্রেসনারের মতে, মাড়িতে ফোঁড়া বা ফোলা হলে উষ্ণ লবণ পানি দিয়ে কুলকুচা করলে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এফেক্টের কারণে ভালো অনুভূতি পাওয়া যায়। দাঁত ব্যথার জন্যও প্রাকৃতিক আরোগ্যকর চিকিৎসা রয়েছে। ডা. প্রেসনার বলেন, কখনো কখনো লবঙ্গ তেল প্রদাহযুক্ত দাঁতের উপশম করতে পারে। কিন্তু তিনি সতর্ক করে বলেন, উপসর্গ দেখা দিলে দন্তচিকিৎসককে দেখানো খুব গুরুত্বপূর্ণ।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ নভেম্বর ২০১৭/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়