ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

চোরাচালানের স্বর্ণ ও মুদ্রা আটকেও সফল শুল্ক গোয়েন্দা

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:১২, ২৯ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
চোরাচালানের স্বর্ণ ও মুদ্রা আটকেও সফল শুল্ক গোয়েন্দা

এম এ রহমান মাসুম : বেশ কয়েক বছর ধরে দেশে আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে চোরাচালানের স্বর্ণ ও মুদ্রা উদ্ধারে সফলতা দেখিয়ে আসছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। বিগত পাঁচ বছরে হাজার কোটি টাকার প্রায় আড়াই টন স্বর্ণ জব্দ করেছে সংস্থাটি।

গত সাড়ে চার বছরে ৫৩ কোটি টাকার বেশি বিভিন্ন দেশের মুদ্রা জব্দ করেছে শুল্ক গোয়েন্দা। যা তার আগের ৯ বছরের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। আর এ ঘটনায় অন্তত ৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জব্দকৃত মুদ্রার মধ্যে রয়েছে মার্কিন ডলার, ইউরো, সৌদি রিয়াল, মালয়শিয়ান রিঙ্গিত, ভারতীয় মূদ্রা, ইয়েন ও দিরহাম ইত্যাদি।

শুল্ক গোয়েন্দা থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, ২০১৩ সালের জুন থেকে ২০১৭ সালের জুন পর‌্যন্ত মোট চার বছরে আটককৃত বৈদেশিক মুদ্রার পরিমাণ ৪৮ কোটি ৪২ লাখ ৪ হাজার সমমূল্যের বাংলাদেশি টাকা। আর মুদ্রা পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় গ্রেপ্তার করা হয় ২৯ জনকে। এছাড়া ২০১৭ সালের জুন থেকে চলতি ২০১৮ সালের এ পর‌্যন্ত আরো ৫ কোটি টাকার বেশি বিভিন্ন দেশের মুদ্রা জব্দ করা হয়েছে। এসময় গ্রেপ্তার হয় ৭ জন যাত্রী। এর মধ্যে ২০১৪ সালের এপ্রিলে ৭ কোটি ৮৯ লাখ টাকার ভারতীয় মুদ্রা এবং একই বছরের ডিসেম্বরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে ৯ কোটি ৪৮ লাখ টাকার ইউএই দিরহাম, সৌদি রিয়াল এবং বাংলাদেশি মুদ্রা আটকের ঘটনা উল্লেখযোগ্য।

শুল্ক গোয়েন্দা সূত্রে আরো জানা যায়, ২০০৪ থেকে ২০১৩ সাল পর‌্যন্ত ৯ অর্থবছরে মাত্র ২২ কোটি ২ লাখ টাকা মূল্যমানের বৈদেশিক মুদ্রা আটক করে শুল্ক গোয়েন্দা। ওই নয় বছরে গড়ে ২ কোটি ৪৫ লাখ টাকার বৈদেশিক মূদ্রা আটকের ঘটনা ঘটেছে। অথচ ২০১৩ সালের পর থেকে বেড়েছে মুদ্রা আটকের ঘটনা। মাত্র সাড়ে চার বছরেই মুদ্রা আটকের পরিমাণ দাঁড়ায় ওই ৯ বছরের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি। অর্থ্যাৎ বৈদেশিক মুদ্রা আটকে শুল্ক গোয়েন্দার সফলতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে ঢের বেশি।

এ বিষয়ে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘২০১৫ সালের মানিলন্ডারিং আইন সংশোধনের পর থেকে শুল্ক গোয়েন্দা ২৭টি অপরাধের বিষয়ে তদন্ত করার এখতিয়ার পায়। এরপর শুল্ক সংক্রান্ত যতগুলো আটক বা উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে, সবগুলোতেই মানিলন্ডারিং উপাদান আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে। ইতিমধ্যে শুল্ক গোয়েন্দা মানিলন্ডারিং আইনের ১২টি মামলা করে যা এখন তদন্তাধীন। এর মধ্যে ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরে ১২ কন্টেইনার মদ, সিগারেট ও টিভি আটকের চাঞ্চল্যকর ঘটনায় ১০৫০ কোটি টাকার মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত ফৌজদারি মামলা উল্লেখযোগ্য ঘটনা ছিল। এছাড়া আরো ২০টির মতো অর্থপাচার সংক্রান্ত অনিয়মের ঘটনা অনুসন্ধান পর্যায়ে রয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘শুল্ক গোয়েন্দার অভিযানে গত কয়েক বছরে অর্ধশত কোটির টাকার বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আটকের ঘটনা ঘটেছে। এর সবগুলো আবার মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধ না। যেসব ঘটনায় মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়, কেবল ওইসব ঘটনায় মানিলন্ডারিং আইনে মামলা দায়ের হয়। তবে অধিকাংশ মামলাই বৈদেশিক মূদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৪৭, বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ এবং কাস্টমস আইনে দায়ের করা হয়ে থাকে। যার অধিকাংশই পুলিশের কাছে তদন্তনাধীন। কিছু কিছু তদন্ত শুল্ক গোয়েন্দা করছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ জানুয়ারি ২০১৭/এম এ রহমান/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়