ঢাকা     শনিবার   ১১ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৮ ১৪৩১

আম যখন চিঠির পাতা

তানজিমুল হক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৪৯, ৭ জুন ২০১৪   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আম যখন চিঠির পাতা

আমের গায়ে লেখা চিঠি

তানজিমুল হক, রাজশাহী : কবুতরের পায়ে চিঠি পাঠানোর দিন অনেক আগেই শেষ হয়েছে। কাগজের চিঠির দিনও প্রায় শেষ। এখন চলছে ই-মেইল আর মুঠোফোনে খুদে বার্তার যুগ। এভাবে চলতে থাকলে হাতে চিঠি লেখার দিন শেষ হতে আর সময় লাগবে না।

তবে বাঘা উপজেলার দিঘা গ্রামের পল্লি চিকিৎসক জাকির হোসেন চিঠি লেখার এই রীতি ধরে রাখার জন্য এক অভিনব উপায় বের করেছেন। তিনি প্রতিবছর আমের মৌসুমে মানুষকে চিঠি লিখে শুভেচ্ছা জানান।

এ চিঠি রাজা-বাদশাদের মতো রেশমি কাপড়েও নয়, কাগজেও নয়। তিনি চিঠি লেখেন আস্ত  আমের গায়ে। লিখে আমটিই পাঠিয়ে দেন প্রাপকের কাছে। তিনি এর নাম দিয়েছেন ফলের শুভেচ্ছা। তিনি তার সব চিঠির প্রাপককেই লেখেন চিঠিটা পড়া হলে আমটা কেটে খাবেন। শুভেচ্ছাসহ আস্ত একটা আম পেয়ে জাকির হোসেনের প্রিয়জনরা খুশিই হচ্ছেন।

দিঘা স্কুল ও কলেজের শিক্ষক গোলাম তোফাজ্জল কবীর মিলন জানান, জাকির হোসেন ১৫ বছর থেকে এভাবে আমের গায়ে চিঠি লিখে তার নিকটতম বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয়স্বজনের ও এলাকার বিশিষ্ট লোকজনের কাছে পাঠান। প্রতিবছর আম বড় হওয়ার পর থেকে তিনি চিঠি লিখতে শুরু করেন। চিঠিগুলো তিনি কুরিয়ারেও পাঠান। আবার এলাকায় কোনো বিশিষ্ট মানুষ কোনো বিশেষ অনুষ্ঠানে এলে তিনি সেখানে তার আমের চিঠি নিয়ে হাজির হন।

রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী সবুজ সরকার এবার জাকির হোসেনের চিঠি পেয়েছেন। চিঠিতে  জাকির হোসেন লিখেছেন, ‘মনে করুন, এই কাঁচা আমটি একটি সবুজ রঙের পতাকা। আর আমার লাল রঙের কালি হচ্ছে শহীদের রক্ত। হতে পারে এটি একটি লাল-সবুজের পতাকা। হতে পারে সবুজের বুকে লাল সূর্য খচিত বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ এবং লাল-সবুজের পতাকার উপমা করে এই আমের মাধ্যমে আপনাকে শুভেচ্ছা জানালাম। আমার শুভেচ্ছা নেবেন। ফলের শুভেচ্ছা দিলাম। ফুলের মতো এ উপহার শুকিয়ে যাবে না। এতে আপনার মনও ভরবে, খেলেও ভালো লাগবে।’

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৭ জুন ২০১৪/তানজিমুল/রণজিৎ


রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ