ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

‘আমার জীবন রক্ষা করেছে স্মার্টওয়াচ’

মনিরুল হক ফিরোজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৪৩, ৩ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘আমার জীবন রক্ষা করেছে স্মার্টওয়াচ’

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক : ওয়্যারেবল টেকনোলজি বা পরিধানযোগ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে, স্মার্ট হাতঘড়ি বা স্মার্টওয়াচ বেশ জনপ্রিয়। কারণ এর মাধ্যমে আমরা আমাদের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য নিরীক্ষণ করতে সক্ষম হচ্ছি। যেমন স্মার্টওয়াচের অন্যতম একটি সুবিধা হচ্ছে, এটি হার্টবিট রেট প্রদর্শন করে।

সম্প্রতি ১৮ বছর বয়সি এক তরুণীর স্মার্টওয়াচ তার হার্টবিট রেটকে জরুরি মেডিক্যাল চিকিৎসার উপযোগী হিসেবে প্রদর্শন করায়, ওই তরুণীর ডায়াগনোসিসের পর নীরবে কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়ার সমস্যাটি ধরা পড়ে।

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার লিথিয়া শহরে নিজ এলাকার চার্চে গত ২৫ এপ্রিল বসে ছিলেন ডিয়েনা। এমন সময় তিনি দেখেন তার হাতে থাকা অ্যাপলের স্মার্ট হাতঘড়িটি (অ্যাপল ওয়াচ) ‘জরুরি মেডিক্যাল সেবা’ নেওয়ার জন্য তাকে পরামর্শ দিতে শুরু করেছে, কারণ তার হার্টবিট রেট ছিল অস্বাভাবিক।

স্বাভাবিক হার্টবিট প্রতি মিনিটে ৬০ থেকে ১০০ হয়ে থাকে। ডিয়ানার হার্টবিট রেট প্রতি মিনিটে ছিল ১৬০ এবং শেষ পর্যন্ত তা ১৯০ তে পৌঁছায়। তার মা স্ট্যাসি পেশায় নার্স, তৎক্ষণাৎ তিনি মেয়ের পালস চেক করে দেখেন এবং বুঝতে পারেন, ঘড়ি সঠিক তথ্যই প্রদর্শন করছে। চার্চ থেকে ১০ মাইল দূরে হাসপাতালে ডিয়ানাকে নিয়ে যান তিনি।

এবিসি নিউজকে স্ট্যাসি বলেন, ‘এটা খুব ভীতিকর ছিল কারণ সে সেখানে চুপচাপ ছিল। সে কিছু করছিল না। এমন নয় যে সে হাঁটাচলা করছিল, বরং চুপচাপ দাড়িয়েছিল অথচ তার হার্টবিট রেট ১৯০ পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছিল।’

টাম্পা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা রক্ত পরীক্ষার পর দ্রুত বুঝতে পারেন যে, ডিয়ানার কিডনো অকেজো। তার কিডনি মাত্র ২০ শতাংশ কাজ করছিল এবং তার দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ ধরা পড়ে।



এ ঘটনা ছিল ২০ বছর বয়সি এই যুবতীর জন্য খুবই হতাশার, কারণ তিনি জিমন্যাস্টিক এবং চিয়ারলিডার, যা সুস্বাস্থ্যের প্রতিচ্ছ্ববি হিসেবেই পরিচিত। কিডনি সমস্যার কোনো লক্ষণই তার মধ্যে কখনো প্রতিফলিত হয়নি।

ডিয়ানা বলেন, ‘একমাত্র যে উপসর্গটি ছিল তা হচ্ছে আমি বেশিক্ষণ হাঁটার পর যখন দাঁড়াতাম বা বসতাম তখন শ্বাস নিতে সমস্যা হতো। তাই এটা বেশি অস্বাভাবিক কিছু মনে হয়নি।’

অ্যাপলের হার্টরেট অ্যাপটি বিশ্রাম, হাটাঁচলা, ব্যায়াম, ঘুম এবং শ্বাসের সময় হার্টবিট রেট পর্যবেক্ষণ করে থাকে। হার্টবিট রেটের অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করলে এটি ইনফ্রারেড লাইটের মাধ্যমে সতর্ক করে। এবিসি নিউজকে স্ট্যাসি বলেন, ‘জীবন রক্ষাকারী এই ফিচারের জন্য তিনি অ্যাপলের সিইও টিম কুককে ধন্যবাদ জানিয়ে একটি ইমেইল পাঠিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘স্মার্ট ওয়াচটি যদি হার্টবিট রেট সম্পর্কে সতর্ক না করতো তাহলে হয়তো ডিয়ানার কিডনির সমস্যা এখনো পর্যন্ত জানাই হতো না। আমি সত্যিই মনে করি যে, অ্যাপল ওয়াচ আমার মেয়ের জীবন রক্ষা করেছে, এ ধরনের জীবন রক্ষাকারী পণ্য তৈরির জন্য আমি অ্যাপলের প্রতি চির কৃতজ্ঞ থাকবো।’ ডিয়ানাও বলেন, তার জীবন রক্ষা করেছে অ্যাপল ওয়াচ।

টিম কুক ব্যক্তিগত ভাবে স্ট্যাসির ইমেইলের উত্তর দিয়েছেন এবং স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ডিয়ানার খবরটি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘ডিয়ানার মতো গল্পগুলো আমাদের আরো বড় স্বপ্ন দেখতে এবং প্রতিদিন আরো কঠোর পরিশ্রম করতে অনুপ্রাণিত করে।’

অ্যাপল ওয়াচ তার ব্যবহারকারীকে অস্বাভাবিক শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে সতর্ক করার ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগে নেথার নামে ২৫ বছর বয়সি এক মা তার অ্যাপল ওয়াচের মাধ্যমে হার্টবিট অস্বাভাবিক কমে যাওয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়েছিলেন।

তথ্যসূত্র : ডেইল মেইল




রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩ মে ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়