ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির জ্যাকেট!

নিয়ন রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:০২, ৭ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির জ্যাকেট!

নিয়ন রহমান : কখনো কি ভেবেছেন, ভিআর দিয়ে কিছু দেখার সময় সেটা নিজ শরীরে অনুভবও করবেন? না, এমনটা ভাবার কথাও না। তবে এমন সুযোগ আপনি অচিরেই পেতে যাচ্ছেন। কেননা ডিজনি এবং এমআইটি মিডিয়া ল্যাব যৌথ গবেষণায় তৈরি করেছে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির জ্যাকেট।

এটা কিছুটা স্বাভাবিক জ্যাকেটের আদলে তৈরি করা হলেও এর মধ্যে প্রায় ২৬টি স্বতন্ত্র বাতাসের ফাঁকা ব্যাগ দেয়া হয়েছে। আর এই ব্যগের বাতাসকে নিয়ন্ত্রণ করে মানুষকে দেয়া হবে বিভিন্ন কিছুর অনুভূতি! যেমন ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে আপনি অনুভব করতে পারেন কেউ আপনাকে জড়িয়ে ধরল, অথবা আপনার পিঠের উপর দিয়ে সাপ হেঁটে গেল। এমন সব অদ্ভুত অনুভূতি দেয়া সম্ভব এই বাতাসের ব্যাগগুলোকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে।

প্রত্যেকটা বাতাসের ব্যাগকে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই ফোলানো যায় এবং একই সঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যেই চুপসে দেয়া যায়। এইভাবেই এই জ্যাকেট গায়ে দেয়া ব্যক্তিকে বিভিন্ন ধরনের অনুভূতি প্রদান করা হবে। জ্যাকেটটির মধ্যে সাত ধরনের বাতাসের প্রেশার আছে যার মাধ্যমে খুব সাধারণ জড়িয়ে ধরা থেকে শুরু করে জোরে ঘুষি খাওয়াও অনুভব করা যাবে। এর মূল উদ্দেশ্য হল ভাইব্রেশন এবং বিভিন্ন ধরনের বিটের সঙ্গে শরীরকে সেই অনুভূতিগুলোও খুঁজে দেয়ার। যার ফলে ‘ফোর্স জ্যাকেট’ নামের এই ভার্চুয়াল রিয়েলিটির জ্যাকেটের মাধ্যমে খুব সূক্ষ্মঅনুভূতিও প্রদান করা সম্ভব। যেমন গায়ে পড়া বৃষ্টির ফোঁটা অথবা হার্ট-বিট এর অনুভূতি। অনুভূতির মধ্যে যেন পার্থক্য করা যায় সে ব্যাপারে জ্যাকেটটির গবেষণা দল খুব সচেষ্ট। যেমন জড়িয়ে ধরার অনুভূতির সময়ে আপনি বুঝতে পারবেন যে এটা একটা বাচ্চার জড়িয়ে ধরা নাকি একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জড়িয়ে ধরা।

ইতোমধ্যেই ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মধ্যে অনুভূতিগুলোকে আরো জোরালো এবং বাস্তব করার জন্য বিভিন্ন প্রচেষ্টা করা হয়েছে। এই জ্যাকেটের পূর্বে একটা গ্লাবস বা দস্তানা তৈরি করা হয়েছিল কৃত্রিমভাবে অনুভূতি প্রদানের জন্য। সেই দস্তানা পড়লে আপনি অনুভব করতে পারবেন যেন আপনি কিছু একটা ধরে রেখেছেন। ঠিক সেই প্রযুক্তিকেই আরো উন্নত করে এবার একটি জ্যাকেটে রূপান্তর করা হয়েছে, যার মাধ্যমে আরো উন্নত মানের কৃত্রিম অনুভূতি প্রদান করা যাবে। তবে এর আগের তৈরি দস্তানাতে বাতাসের ব্যাগের মাধ্যমে অনুভূতিগুলো দেয়া হয়নি বরং ইলেকট্রিক মোটরের এবং ভাইব্রেশনের মাধ্যমে এই অনুভূতিগুলো প্রদান করা হয়েছে। তাই এটা বলা যেতে পারে, এ জ্যাকেটেই প্রথমবারের মতো বাতাসের প্রেসার দিয়ে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সঙ্গে অনুভূতির মিশ্রণের প্রচেষ্টা করা হয়েছে।

তবে উন্নত মানের ভাচুয়াল রিয়েলিটির হেডসেটের মতোই এটি সর্ব সাধারণের জন্য একদম উন্মুক্ত হয়ে যাবে সেটা ঠিক বলা যাচ্ছে না। কেননা এ ধরনের প্রযুক্তি তৈরিতে যে পরিমাণ খরচ করা হয় সমপরিমাণ অর্থ দিয়েও সাধারণ মানুষের পক্ষে এই প্রযুক্তির ব্যবহার সম্ভব নয়। তাই ধারণা করা হচ্ছে, এ ধরনের ভার্চুয়াল রিয়েলিটির জ্যাকেটটি শুধুমাত্র ডিজনি পার্কেই সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। যেখানে মানুষ টিকেট কাটার মাধ্যমে এই জ্যাকেটটি ব্যবহারের সুযোগ পাবেন।

তবে এ ধরনের গ্যাজেট সর্ব সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দিলেও নিত্য ব্যবহারের জন্য আসলে খুব একটা বেশি গ্রাহক পাওয়া যাবে না বলে ধারণা করা হয়। কেননা জ্যাকেটটি শুধুমাত্র ফোরডি মুভি দেখার সময় ব্যবহার করাটাই সবচেয়ে উপযোগী হবে। ডিজনির থিম পার্কেই এ ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহারের পরিবেশ বিদ্যমান। ডিজনি কোম্পানির ধারণা, এ ধরনের ভার্চুয়াল রিয়েলিটির জ্যাকেট ডিজনি থিম পার্কের ভাব গাম্ভীর্য এবং জনপ্রিয়তা আরো বাড়িয়ে তুলতে সক্ষম হবে।



তথ্যসূত্র : দ্য ভার্জ




রাইজিংবিডি/ঢাকা/৭ মে ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়