ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

৩৫ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দেবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট

মনিরুল হক ফিরোজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৪৪, ১০ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
৩৫ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দেবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক : আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ২টা ১২ মিনিট থেকে ৪টা ২২ মিনিটের মধ্যে যেকোনো সময় মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হবে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট (কৃত্রিম উপগ্রহ) বঙ্গবন্ধু-১।

৩ হাজার ৫০০ কেজি ওজনের জিওস্টেশনারি কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ কক্ষপথের দিকে ছুটবে ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টারের লঞ্চ কমপ্লেক্স ৩৯-এ থেকে। উৎক্ষেপণ সফল হলে বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে নিজস্ব স্যাটেলাইটের মালিক হবে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট মহাকাশে বহন করে নিয়ে যাবে যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের অত্যাধুনিক ফেলকন ৯ ব্লক ৫ রকেট।

উৎক্ষেপণ স্টেশন থেকে ৩৫ হাজার ৭৮৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে স্যাটেলাইটটির কক্ষপথে যেতে সময় লাগবে ৮-১১ দিন। এটির অবস্থান হবে ১১৯.১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমার কক্ষপথে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের জন্য কক্ষপথের এই অবস্থানটি রাশিয়ার ইন্টারস্পুটনিকের কাছ থেকে ১৫ বছরের জন্য কেনা হয়েছে। এই কক্ষপথ থেকে স্যাটেলাইটটির কাভারেজ এরিয়া ইন্দোনেশিয়া থেকে তাজিকিস্তান পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। শক্তিশালী কেইউ ও সি ব্যান্ডের মাধ্যমে এটি সবচেয়ে ভালো কাভার করবে পুরো বাংলাদেশ, সার্কভুক্ত দেশসমূহ, ফিলিপাইন এবং ইন্দোনেশিয়া।

বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটটি নির্মাণ করেছে বিশ্বের অন্যতম খ্যাতনামা স্যাটেলাইট নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের থেলেস এলেনিয়া স্পেস।

মহাকাশে বিভিন্ন দেশের স্যাটেলাইটের সংখ্যা ৪ হাজারের বেশি। একেক স্যাটেলাইটের কাজের ধরন একেক রকম। যেমন কোনোটি কমিউনিকেশনের কাজে ব্যবহৃত হয় আবার কোনোটি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণের কাজে ব্যবহৃত হয়। বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট হচ্ছে ‘জিওস্টেশনারি কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট’। এর মাধ্যমে দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো দেশের স্যাটেলাইট সিস্টেম ব্যবহারের সুবিধা পাবে, ফলে দেশের টাকা দেশেই থাকবে। বিদেশি স্যাটেলাইট ভাড়া বাবদ বিপুল পরিমাণ অর্থ আর ব্যয় করতে হবে না। বরঞ্চ স্যাটেলাইটটির ৪০টি ট্রান্সপন্ডারের মধ্যে ২০টি অন্য দেশের কাছে ভাড়া দিয়ে বাণিজ্যিক ভাবে লাভবান হওয়ার সুযোগও পাবে বাংলাদেশ। এছাড়া ইন্টারনেট সংযোগ, টেলিফোন সংযোগ, উড়ন্ত বিমানে নেটওয়ার্ক প্রদান, দুর্গম এলাকায় নেটওয়ার্ক প্রদান, জিপিএস সংযোগসহ বিভিন্ন কাজে বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট ব্যবহার করা যাবে। জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কাজেও এ স্যাটেলাইটকে কাজে লাগানো যাবে।

কক্ষপথে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট প্রেরণের পর এটি কাজের জন্য প্রস্তুত হতে ৩ মাসের মতো সময় লাগতে পারে। এরপর এটির নিয়ন্ত্রণ থাকবে বাংলাদেশের হাতেই। গাজীপুরের জয়দেবপুরে তৈরি গ্রাউন্ড কনট্রোল স্টেশন এবং রাঙামাটির বেতবুনিয়া গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে এটি পরিচালনা করা হবে।

উল্লেখ্য, মহাকাশে প্রথম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের কৃতিত্ব সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের। ১৯৫৭ সালের ৪ অক্টোবর উৎক্ষেপিত স্পুটনিক ১ নামের স্যাটেলাইট মহাকাশে উৎক্ষেপণের মাধ্যমে মহাকাশে স্যাটেলাইট প্রেরণ যুগের সূচনা করে সোভিয়েত ইউনিয়ন। অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৯৪৫ সালে মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠানোর পরিকল্পনা করলেও তাদের পরিকল্পনা সফল হয় ১৯৫৮ সালের ৩১ জানুয়ারি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম স্যাটেলাইট এক্সপ্লোরার-১ এদিন মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয়।

পড়ুন : *


রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ মে ২০১৮/ফিরোজ 

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়