ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত

মনিরুল হক ফিরোজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:১৩, ৪ আগস্ট ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক : আগামীদিনে সেই জাতিই উন্নতি করবে যাদের নাগরিকেরা জ্ঞানবিজ্ঞানে উন্নত হবে এবং নিজেদের মানবিক হিসেবে গড়ে তুলবে। আর সেজন্য হাতে কলমে বিজ্ঞান চর্চ্চার কোনো বিকল্প নেই।

শুক্রবার, ঢাকার এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক ৪র্থ বাংলাদেশ জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডের বিভিন্ন পর্বে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী, ব্যাংকার ও অতিথিরা এ মত প্রকাশ করেন। তাদের সঙ্গে একমত হয়ে সারাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ৪০৩ জন শিক্ষার্থী বিশ্বে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জগতে নিজেদের তুলে ধরার অঙ্গীকার করেছে। 

সকালে কিশোর আলো সাংস্কৃতিক দলের জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অলিম্পিয়াডের শুরু হয়। এরপর জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডের আহবায়ক ও বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতির সহ-সভাপতি মুনির হাসান তার বক্তব্যে জাতির পিতা ও ৭৫’র আগস্ট মাসে শহীদ তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি শোক প্রকাশ করেন। এ সময় ৭৫ এর আগস্টের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।  

অলিম্পিয়াডের উদ্বোধন করেন জাতীয় অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের বিশ্বের মেধার অলিম্পিয়াডে ঐতিহ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের সাম্প্রতিক সাফল্য তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে তিনি শিক্ষার্থীদের মেধা ও দক্ষতায় নিজেদের মান উন্নয়নের পাশাপাশি মানুষ হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার আহবান জানান। এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশনের কোষাধ্যক্ষ বিজ্ঞানী ড. রেজাউর রহমান।

এরপর শিক্ষার্থীরা দেড় ঘণ্টার জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডের পরীক্ষা পর্বে অংশ নেয়। জুনিয়র, সেকেন্ডারি ও বিশেষ ক্যাটাগরিতে শিক্ষার্থীরা পদার্থ বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান ও রসায়নের সংক্ষিপ্ত বিশদ প্রশ্নের উত্তর দেয়। এরপর শিক্ষার্থীরা ফিরে আসে মূল মঞ্চে। শিক্ষার্থীরা প্রশ্নোত্তর পর্বে শিক্ষক ও বিজ্ঞানীদের কাছ থেকে তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব জেনে নেয়।
 


মূল মঞ্চের কাছে ছিল একটি খালি বোর্ড যার ওপরে লেখা ‘We want Justice’। আর নিচে নবারুণ ভটাচার্যের কবিতার দুইটি লাইন- একটা কুঁড়ি বারুদগন্ধে মাতাল করে ফুটবে কবে/সারা শহর উথাল পাথাল ভীষণ রাগে যুদ্ধ হবে।

সমাপনী পর্বের প্রধান অতিথি আল-আরাফাহ ব্যাংকের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী তাওহীদ-উল-আলম শিক্ষার্থীদের মেধার এই প্রতিযোগিতায় আল-আলাফাহ ব্যাংক ভবিষ্যতেও যুক্ত থাকবে বলে জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন, শিক্ষার্থীরা তাদের অতীত পারফরম্যান্সকে অতিক্রম করে যাবে। আগামী দিনের উন্নত বাংলাদেশ গড়ার জন্য নিজেদের সোনার মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে তিনি শিক্ষার্থীদের আহবান জানান।

দিনব্যাপী আয়োজনের বিভিন্ন পর্বে আরো উপস্থিত ছিলেন আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের পরিচালক আবুদল মালেক মোল্লাহ, ভাইস প্রেসিডেন্ট জালাল আহমেদ, বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাজ্জাদুর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও বুয়েটের অধ্যাপক ফারসীম মান্নান মোহাম্মদী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মইনুল হোসেন, মুশতাক ইবনে আইয়ুব প্রমুখ।

সমাপনী পর্বের শেষে বিজয়ী ৫২ শিক্ষার্থীকে পদক পরিয়ে দেন উপস্থিত অতিথিরা। ১২ জনকে চ্যাম্পিয়ন, ১৮ জনকে প্রথম রানারআপ ও ২২ জন শিক্ষার্থীকে দ্বিতীয় রানারআপ ঘোষণা করা হয়। এসব শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে বাছাইকৃত শিক্ষার্থীদের নিয়ে ক্যাম্পের মাধ্যমে ধাপে ধাপে নির্বাচন করা হবে অলিম্পিয়াডের বাংলাদেশ দল। এ দল আগামী ডিসেম্বরে আফ্রিকার বতসোয়ানায় আন্তর্জাতিক জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডে অংশ নেবে। 

জুলাই মাসের তৃতীয় সপ্তাহে বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিকরণ সমিতি ও বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশন আয়োজন করে আটটি আঞ্চলিক পর্ব ও একটি ই-অলিম্পিয়াড। এসব অলিম্পিয়াডের বিজয়ীরাই জাতীয় উৎসবে অংশ নেয়। এই পুরো আয়োজনের পৃষ্ঠপোষকতা করে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। এই আয়োজনের সহযোগী ছিল প্রথম আলো ও আইপে। ম্যাগাজিন পার্টনার ছিল বিজ্ঞানবিষয়ক মাসিক ম্যাগাজিন বিজ্ঞানচিন্তা ও শিশু-কিশোরদের মাসিক ম্যাগাজিন কিশোর আলো। টেলিভিশন পার্টনার ছিল নাগরিক টেলিভিশন।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৪ আগস্ট ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়