ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

এসিএম-আইসিপিসির ঢাকা পর্বে ২৯৮টি দলের অংশগ্রহণ

মনিরুল হক ফিরোজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪৬, ১০ নভেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
এসিএম-আইসিপিসির ঢাকা পর্বে ২৯৮টি দলের অংশগ্রহণ

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক : ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আয়োজনে এশিয়া অঞ্চলের (ঢাকা সাইট) আন্তর্জাতিক মর্যাদাপূর্ণ প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা ‘আইসিপিসি’ (ইন্টারন্যাশনাল কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং কনটেষ্ট ২০১৮) আজ ১০ নভেম্বর, আশুলিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের স্বাধীনতা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বাংলাদেশের ইতিহাসে এটাই এযাবৎ কালের সর্ববৃহৎ কম্পিউটার প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা। এতে বাংলাদেশের ১০১টি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন আইটি ইনস্টিটিউটের ২৯৮টি দল (প্রতিটি দলে ৩ জন করে প্রতিযোগী) অংশগ্রহণ করে। এছাড়া নেপাল থেকে তিনটি দল এবারের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। এ প্রতিযোগিতার সেরা ২টি দল আগামী ৩১ মার্চ-৫ এপ্রিল ২০১৯ পর্তুগালের ইউনিভার্সিটি অব পোর্টো’র আয়োজনে অনুষ্ঠিতব্য ওয়ার্ল্ড ফাইনালস ২০১৯ এর মূলপর্বে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে।

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আইসটি ডিভিশন ও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের সহযোগিতায় এবং এডিএন ইডু সাভিসেস ও এসএসএল ওয়্যারলেস, বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটি ও ইন্টারনেট সোসাইটি (আইসক) বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের সহ-পৃষ্ঠপোষকতায় এ প্রতিযোগিতার বাংলাদেশ পর্বের আয়োজন করা হয়।

প্রধান অতিথি হিসেবে এ প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী, হাইটেক পার্ক কর্তপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থ প্রতিম দেব, বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটি ও ইন্টারনেট সোসাইটি (আইসক) বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের প্রফেসর হাফিজ মো. হাসান বাবু, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ইঞ্জিনিয়ার এনামুল কবির, সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটির স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিন অধ্যাপক আবুল এল হক, সিটিও ফোরাম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তপন কান্তি সরকার, এসএসএল ওয়্যারলেসের চিফ অপারেটিং অফিসার আশিস চক্রবর্তী, চিফ টেকনিক্যাল অফিসার শাহাজাদা রিদওয়ান এবং ডাটাসফট্ সিস্টেমস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহাবুব জামান প্রমুখ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম মাহাবুবুল হক মজুমদারের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন প্রতিযোগিতার ডিরেক্টর অধ্যাপক ড. সৈয়দ আকতার হোসেন ও প্রতিযোগিতার প্রধান বিচারক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ প্রমুখ।

এবারের প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতাকে বাংলাদেশের ইতিহাসে স্মরণীয় করে রাখার জন্য আয়োজকদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা ছিল এবং এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে আগামী ওয়ার্ল্ড ফাইনালে ভালো করার দৃঢ় প্রত্যয় গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আইসিপিসি প্রতিযোগিতাটি আমাদের তরুণদের সামনে নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করার এক বিশাল সুযোগ এনে দিয়েছে। অনেকে বলে থাকে, এই প্রতিযোগিতা হচ্ছে, মানুষ ও মেশিনের মধ্যে প্রতিযোগিতা। ব্যক্তিগতভাবে আমি তা মনে করি না। আমি মনে করি, মানুষের চেয়ে মেশিন কখনো উন্নত হতে পারে না।’

 



অধ্যাপক আব্দুল মান্নান আরো বলেন, আমাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রযুক্তির উত্থানের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। আর এই প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা হচ্ছে প্রযুক্তির বিপ্লব। এই প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে যেসব তরুণ উঠে আসবে তাদের হাত ধরেই ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর বলেন, ‘একসঙ্গে এত তরুণ প্রতিযোগী দেখে আমি খুবই আনন্দিত। আমার মনে পড়ছে ২০ বছর আগের কথা। তখন এরকম একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলাম। কিন্তু পর্যাপ্ত ল্যাপটপের অভাবে আয়োজনটি মনের মতো করে করতে পারিনি। আজ এই প্রতিযোগিতায় কত ল্যাপটপ রয়েছে গুণে শেষ করা দুষ্কর।’

বাংলাদেশের তরুণদেরকে মেধাবী প্রজন্ম উল্লেখ করে অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী আরো বলেন, বিশ বছর ধরে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার সঙ্গে যুক্ত থাকার ফলে আমি জানি, এই তরুণরা কী পরিমাণ মেধাবী। এই প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা তরুণদের মেধাকে আরো শাণিত করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

ড্যাফোডিল বিশ্ববিদালয়ের ট্রাস্টিবোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান বলেন, ‘বর্তমান সময় হচ্ছে প্রযুক্তির সময়। এই সময়ে প্রযুক্তির জ্ঞান থেকে দূরে থাকলে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়তে হবে। আমরা চাই না আমাদের শিক্ষার্থীরা কোনো প্রতিযাগিতায় পিছিয়ে পড়ুক। এজন্য ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে। বাংলাদেশের তরুণ শিক্ষার্থীদেরকে প্রযুক্তির জ্ঞানে দক্ষ করে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।’

ড. মো. সবুর খান আরো বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে পেরে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অবশ্যই গর্ববোধ করছে। এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ ও নেপাল থেকে ২৯৮টি দল অংশগ্রহণ করেছে। আগামীতে আইসিপিসির ওয়ার্ল্ড ফাইনাল প্রতিযোগিতা ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজন করার আশা প্রকাশ করেন তিনি।

সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা পাঁচ ঘণ্টা এ প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা চলে। এ বছর এসিএম-আইসিপিসি ঢাকা অঞ্চল ২০১৮ ব্যাপক পরিসরে ও বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যদিয়ে উৎসব মুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়। কম্পিউটার প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার পাশাপাশি এই জমকালো আয়োজনে ছিল টেকনিক্যাল টকস, সিএসআইএস, ফান ইভেন্টস এবং পুরস্কার বিতরনী ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ নভেম্বর ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়