ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চেয়ে আদালতে হুয়াওয়ে

মনিরুল হক ফিরোজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১৪, ২৯ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চেয়ে আদালতে হুয়াওয়ে

হুয়াওয়ের প্রধান আইন কর্মকর্তা সং লিওপিং

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ডিফেন্স অথরাইজেশন অ্যাক্ট (২০১৯ এনডিএএ) এর ৮৮৯ ধারা চ্যালেঞ্জ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে রায় পেতে আদালতে আবেদন (মোশন) করেছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় আইসিটি সল্যুশন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে হুয়াওয়ের ওপর রাষ্ট্রীয় নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করার আহ্বানও জানিয়েছে কোম্পানিটি। কারণ এই নিষেধাজ্ঞা দেশটির সাইবার নিরাপত্তা প্রদান করবে না। ২৯ মে, শেনজেনে হুয়াওয়ের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান প্রতিষ্ঠানটির প্রধান আইন কর্মকর্তা সং লিওপিং।

হুয়াওয়ের প্রধান আইন কর্মকর্তা (সিএলও) সং লিওপিং বলেন, ‘সাইবার নিরাপত্তার অজুহাতে হুয়াওয়েকে নিষিদ্ধ করা হলেও সেটা তাদের নেটওয়ার্ক নিরাপদ রাখতে কোনো ভূমিকাই রাখতে পারবে না। তারা নিরাপত্তার বিষয়ে সবাইকে একটি ভুল ধারণা দিচ্ছে এবং প্রকৃত চ্যালেঞ্জের বিষয়ে আমাদের মনোযোগ নষ্ট করছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিদরা একটি প্রাইভেট কোম্পানির বিরুদ্ধে তাদের সব শক্তি প্রয়োগ করছে, যা স্বাভাবিক নয়। এমনকি ইতিহাসে কখনও এমন ঘটনা ঘটেনি।’

সং যোগ করে বলেন, ‘হুয়াওয়ে যে তাদের দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি- এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকার কোনো ধরনের প্রমাণ সরবরাহ করতে পারেনি। বিষয়টা এমন যে কোনো প্রমাণ নেই, কিন্তু তারা অভিযোগ বা সন্দেহ করছে।’

আবেদনে হুয়াওয়ের যুক্তি, ২০১৯ এনডিএএ-এর ৮৮৯ ধারাটি শুধুমাত্র হুয়াওয়ের জন্যই করা হয়েছে। এই ধারার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের এজেন্সির প্রতি শুধু হুয়াওয়ের যন্ত্রাংশ ও সেবা ক্রয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি বরং তৃতীয় কোনো পক্ষের (যারা হুয়াওয়ের যন্ত্রাংশ ও সেবা ক্রয় করে) সঙ্গে চুক্তি বা অনুদান দেওয়া বা ঋণ দেওয়ার ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা না’ও থাকে তবুও এই ধারা কার্যকর হবে।

গত দুই সপ্তাহ আগে হুয়াওয়েকে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগের কালো তালিকাভুক্ত (এনটিটি লিস্ট) করার বিষয়েও অনুষ্ঠানে কথা বলেন সং লিওপিং। তিনি বলেন, ‘এটা খুবই বিপদজনক উদাহারণ সৃষ্টি করলো যুক্তরাষ্ট্র। আজ তারা টেলিকম খাত ও হুয়াওয়ের সঙ্গে এমন আচরণ করলো। কিন্তু আগামীকাল অন্য কোনো খাত, কোম্পানি বা অন্যান্য গ্রাহকদের সঙ্গেও তারা এটা করতে পারে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ন্যায় বিচারের জন্য বিচার প্রক্রিয়াই সর্বশেষ প্রক্রিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীন ও সমন্বিত বিচার প্রক্রিয়ার প্রতি হুয়াওয়ের পূর্ণ আস্থা আছে। আমরা আশা করছি, এনডিএএ-এর ভুলগুলো আদালতের মাধ্যমে সংশোধন করা যেতে পারে।’

এই আইনি পদক্ষেপের প্রধান পরামর্শদাতা গ্লেন ডি নেগার বলেন, ‘২০১৯ এনডিএএ-এর ৮৮৯ ধারাটি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে উল্লেখিত আত্মপক্ষ সমর্থনের সাংবিধানিক অধিকার (বিল অব অ্যাটেইনডার), যথাযথ পদ্ধতি (ডিউ প্রসেস) এবং সংবিধান কর্তৃক অনুমোদিত ক্ষমতা (ভেস্টিং ক্ল্যয)  নীতিমালার পরিপন্থী। সুতরাং অভিযোগ প্রমাণ করার মতো যেহেতু কোনো বিষয় নেই তাই বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে আইনের ব্যাপার হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে।  তাই এই বিষয়ে আদালতের তাৎক্ষণিক রায়ের যৌক্তিকতা রয়েছে।

হুয়াওয়ে বিশ্বাস করে, প্রতিষ্ঠানটির ওপর যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এই ধরনের দমনপীড়ন নীতি দেশটির নেটওয়ার্ককে আরো বেশি নিরাপদ করতে সহায়তা করবে না। তাই হুয়াওয়ে আশা করে, যুক্তরাষ্ট্র সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রকৃত লক্ষ্য যদি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়, তাহলে সাইবার নিরাপত্তা বাড়াতে তারা নিরপেক্ষ ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

হুয়াওয়ের এই আবেদনের (মোশন) ওপর শুনানির জন্য আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য্য করেছেন আদালত।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৯ মে ২০১৯/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়