‘নিজের ওপর বিশ্বাসটা আমারও আছে’

ক্রীড়া প্রতিবেদক : আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে ভালো করতে আত্মবিশ্বাসী দলে ফেরা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। চোখের সংক্রমণে দল থেকে বাদ পড়েছিলেন। এরপর । তার মতে, দীর্ঘ এই সময়টা ছিল এক প্রকার বিরতি। যে বিরতি তাকে সামনে আরো ভালো করতে উদ্ধুদ্ধ করবে।

রোববার দুপুর ১২টায় দল ঘোষণার পরপরই মিরপুরের একাডেমিতে অনুশীলনে নামে বাংলাদেশ দল। সঙ্গে ছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও। অনুশীলনে নামার আগে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন ডানহাতি এই স্পিন অলরাউন্ডার।

ছোট বিরতি দিয়ে ফিরলেন। কেমন লাগছে?
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত: বিরতিটা ছোট ছিল না আমার কাছে। অনেক বড়, প্রায় এক বছর পর আমি আবার রঙিন পোশাকে খেলব বাংলাদেশ দলের হয়ে। আমার কাছে এটা ভালো লাগারই বিষয়। নতুন সুযোগ আমার জন্য।

নির্বাচকদের আস্থা অর্জন করে ফিরেছেন। আফগান সিরিজের প্রস্তুতি কেমন?
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত: নিজের ওপর বিশ্বাসটা আমারও আছে। একজন খেলোয়াড়ের ভালো সময়, খারাপ সময় যাবে এটাই স্বাভাবিক। আমার খারাপ সময় গেছে। সামনে কী হবে বলতে পারব না। তবে আমার চেষ্টা থাকবে সর্বোচ্চটা দেওয়ার।

দীর্ঘ বিরতি বললেন সময়টাকে। বিরতিতে আত্মউপলব্ধি কেমন হলো?
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত: যদি আমি চিন্তা করি অনেক কিছুই করে ফেলব, তাহলে এটার ফলাফল কিছুই আসবে না। আমি যদি চিন্তা করি আমি আমার জায়গাতে থাকব, আমার যতটুকু সামর্থ্য আছে, হয়ত এখান থেকে অনেক ভালো কিছু করতে পারব।

আপনি পেস বোলিংয়ের বিরুদ্ধে স্বচ্ছন্দ নন বলে কথা আছে। আপনি কী মনে করছেন?
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত: আমি আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে হয়ত ২৫-২৬টা ম্যাচ খেলেছি। এর মধ্যে তিন থেকে চারটা হয়ত দেশের মাটিতে খেলছি। বাকি সব ম্যাচ দেশের বাইরে। আমার যে সফলতাগুলো আছে সব দেশের বাইরে। দেশের বাইরে যাদের বিপক্ষে খেলছি ওখানে স্পিনার বলতে নাই আসলে। সব পেস কন্ডিশন। এখন আপনারাই ভালো বলতে পারবেন কী পরিস্থিতি ছিল বা কী কন্ডিশন ছিল। এটা বলার আর অপেক্ষা রাখে না যে, আমি পেস বলে ভালো না স্পিন বলে ভালো। সেটা হয়ত সময়ই বলে দেবে।

কতটা আশা করেছিলেন দলে থাকার ব্যাপারে?
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত: আমি জাতীয় দলে যতটুকু খেলেছি, আমার নিজের যতটা আত্মবিশ্বাস আছে এবং যেমন সম্মানের খেলোয়াড় আমি; সব ঠিক থাকলে এবং যদি পারফরম্যান্স থাকে তাহলে বাদ পড়ার কথা না। ওই বিরতি, একটা অতীত আমার জন্য। ওটা নিয়ে চিন্তা করছি না। সামনে যা তা নিয়েই ভাবছি।



প্রিমিয়ার লিগের ফিনিশিং কাজে লাগল কি না?
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত: প্রিমিয়ার লিগের শেষ ১০ ম্যাচের মধ্যে হয়ত আটটাতেই আমি অপরাজিত ছিলাম। এটা আমার জন্যে অনেক প্লাস পয়েন্ট যে অপরাজিত ছিলাম। কত রান করেছি সেটা মুখ্য না। ওটা নিয়েই ফোকাস করছি।

স্পিন অলরাউন্ডার হিসেবে আপনাকে নেওয়া হয়েছে। আফগান সিরিজে নিজের ভূমিকা নিয়ে কতটা প্রস্তুত?
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত: যেকোনো ম্যাচে আমি যখন বোলিং করি আমি তখন ভাবি যে, আমি বোলার হিসেবে খেলছি। বল হাতে পেলে চিন্তা করি কীভাবে ডট বল করা যায়। ব্যাটসম্যানকে পড়ে বল করার চেষ্টা করি।

আফগানিস্তানের দুজন ভালো ও বিশ্বমানের স্পিনার আছে। ওদের স্পিন সামলানোর পরিকল্পনা কী?
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত: ওদের দুইজন স্পিনার আছে, খুব ভালো। তারা খুব সফল বোলার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। এটা নিয়ে বলতে গেলে অনেক কিছুই বলা যায়। আমরা যদি চিন্তা করি যে অনেক রান করে ফেলব, অনেক কিছু করে ফেলব, অনেক আক্রমণে যাব; সেটাও ভুল হবে। আবার অতিরিক্ত রক্ষণে যাওয়াও ভুল হবে। তারা আইপিলে খুব ভালো বল করছে। আইপিএলে যাদের বিপক্ষে বল করছে তারা হয়ত তাদের জায়গাতে সফল হচ্ছে। এমন হতে পারে আমাদের সাথে তারা ভালো জায়গায় বল নাও করতে পারে। বা তারা যে বল করবে আমরা যেন ভালো ম্যানেজ করতে পারি। ওদের নিয়ে চিন্তা না করে নিজেদের ওপর ফোকাস করা উচিত, নিজেদের সামর্থ্যে বিশ্বাস রাখা উচিত।

র‌্যাঙ্কিংয়ে আফগানিস্তান এগিয়ে, তাহলে ওরা কি বড় দল হিসেবে খেলবে?
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত: টি-টোয়েন্টিতে বলা যায় না কে বড় দল। কোন দিন কার ব্যাটে বল লাগবে, কে সফল হবে বলা যায় না। এখানে বলতে পারবে না কে বড় দল। দিন শেষে ফল হওয়ার পর বোঝা যাবে কে ভালো খেলল। ভালো ক্রিকেট খেলাটা গুরুত্বপূর্ণ।

আপনার কথায় মনে হচ্ছে আপনি বেশ আত্মবিশ্বাসী। মাঠেও একই আত্মবিশ্বাস নিয়ে নামতে পারবেন?
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত: কথা দিয়ে যদি ক্রিকেট খেলা যেত তাহলে তো ভালোই হতো। কথা দিয়ে ক্রিকেট হয় না। ক্রিকেটটা মাঠেই খেলতে হয়।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেক, আবার তাদের বিপক্ষেই ফেরা...
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত: ওইভাবে চিন্তা করিনি। টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষেক হইছে। সেভাবে ভাবলে আগে জিম্বাবুয়ে পরে আফগানিস্তান। এমন কিছু কখনো ভাবছি না। তারা ভালো প্রতিপক্ষ। নিজের শক্তিটা বাড়াতে হবে। ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ মে ২০১৮/ইয়াসিন/পরাগ