ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

সাক্ষাৎকার

‘আমাদের ভালো লেখাগুলোর ইংরেজি অনুবাদ হওয়া দরকার’

মাসউদ আহমাদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ৩০ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘আমাদের ভালো লেখাগুলোর ইংরেজি অনুবাদ হওয়া দরকার’

মোস্তফা কামাল

আজ ৩০ মে কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক মোস্তফা কামালের ৫০তম জন্মদিন। ১৯৭০ সালের এই দিনে তিনি বরিশালের আন্ধার মানিক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সাংবাদিকতার পাশাপাশি কথাসাহিত্যে তাঁর অবাধ বিচরণ। বর্তমানে দৈনিক ‘কালের কণ্ঠ’র নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন কাজ করছেন। সম্প্রতি লন্ডনের অলিম্পিয়া পাবলিশার্স থেকে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর ‘জননী’ উপন্যাসের ইংরেজি রূপান্তর ‘দ্য মাদার’; তারও আগে ভারতের নোশনপ্রেস থেকে প্রকাশিত হয়েছে তিনটি উপন্যাসের ইংরেজি সংকলন ‘থ্রি নভেলস’। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মাসউদ আহমাদ

এ বছর আপনি জীবনের ৫০ বসন্তে পা রাখছেন। প্রথমেই জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাই। শুভ জন্মদিন!

মোস্তফা কামাল : ধন্যবাদ। আমি এই সময়টাকে অত্যন্ত মূল্যবান মনে করি। আমার অনুরাগী পাঠকদের কাছ থেকে যে ভালোবাসা পেয়েছি গত ২৮-২৯ বছর, তা আমার লেখালেখির জন্য বড় প্রেরণার উৎস ছিল। আমার পাঠকগোষ্ঠীকে ধন্যবাদ জানাই।

একজন সৃজনশীল মানুষের জন্য ৫০ বছর একটি বিশেষ ব্যাপার। আপনার কেমন অনুভূতি হচ্ছে?

মোস্তফা কামাল : পেছন ফিরে আমি আসলে আমার অতীতটাকে দেখার চেষ্টা করছিলাম। আমার চোখের সামনে জ্বলজ্বল করে ভাসে ফেলে আসা সময়গুলো। একসময় স্বপ্ন দেখতাম- আমি লেখক হবো। আমি খুব ছোটবেলা থেকেই পত্রিকা পড়তাম, গল্প উপন্যাস কবিতা পড়তাম। একসময় নিজেই লিখতে শুরু করি। মনে পড়ছিল, আমার লেখালেখির জন্য কিছু মানুষ আমাকে প্রথম থেকেই উৎসাহ উদ্দিপনা যোগাতেন, প্রেরণা দিতেন। বিশেষ করে আমার মা আমাকে সবসময়ই অনুপ্রেরণা যুগিয়ে এসেছেন। ১৯৮৪ সালে যখন আমার প্রথম লেখা কবিতা প্রকাশিত হয় বরিশালের অধুনালুপ্ত দৈনিক ‘প্রবাসী’ পত্রিকার সাহিত্য পাতায়, মা আমাকে খুব আদর করেছিলেন। তিনি ভীষণভাবে আমাকে উৎসাহিত করে বলেছিলেন- তুই লেখ। একদিন তুই অনেক বড় লেখক হবি। এবং সবসময়ই তিনি আমাকে উৎসাহ যুগিয়ে এসেছেন। পরিবারে তেমন কেউ ছিল না প্রেরণা দেওয়ার মতো। মা-ই আমাকে প্রেরণা যোগাতেন। তিনি সবসময়ই বলতেন, এসব কাজে অনেকেই তোকে নিরুৎসাহিত করতে পারে। কিন্তু তুই তোর কাজটা করে যাবি। তিনি আমার যে কোনো সুসময় ও সংকটে পাশে থেকেছেন। আমার সদ্য প্রকাশিত বই ‘প্রিয় পঞ্চাশ গল্প’ মাকে উৎসর্গ করেছি। এছাড়াও ‘জননী’ উপন্যাসটিও তাঁকে উৎসর্গ করেছি। এতদিনে এসে আমি আমার লেখালেখি নিয়ে অনেকটা সন্তুষ্ট যে, কিছু ভালো কাজ আমি করার চেষ্টা করেছি। কিছু ভালো গল্প ও উপন্যাস লিখেছি।


আপনার জন্মদিন উপলক্ষে প্রকাশনা সংস্থা অনন্যা থেকে সদ্য প্রকাশিত হয়েছে বিশেষ গল্প-সংকলন ‘প্রিয় পঞ্চাশ গল্প’; এ সম্পর্কে কিছু বলুন?

মোস্তফা কামাল : প্রকাশক তো আমাকে চমকে দিয়েছেন। আমার বইয়ের প্রকাশক অনন্যার মনিরুল হক ভাই যখন জানলেন, এ বছর আমার ৫০তম জন্মদিন আসছে, তখন তিনি আমার কাছে প্রস্তাব রাখলেন যে, আপনার জন্মদিন উপলক্ষে একটি বিশেষ প্রকাশনা করতে চাই। আলোচনার মাধ্যমে উঠে এলো যে, তিনি আমার ৫০টি গল্প নিয়ে একটি সংকলন করতে চান, যেটা আগে কখনো হয়নি। এমন একটি প্রকাশনা থাকলে ভালোই হয়, একসঙ্গে প্রিয় গল্পগুলো থাকলো। পরে তিনি বিষয়টি সাদরে গ্রহণ করলেন। এ জন্য আমি আমার প্রকাশককে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। এখানে আমার লেখালেখির প্রথমজীবন থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক সময়ের গল্পও আছে। আমি সত্যিই অভিভূত।


গল্প আপনার লেখালেখির প্রিয় মাধ্যম এবং এ পর্যন্ত প্রায় শতাধিক গল্প আপনি লিখেছেন। এতে নানা ধরনের গল্প অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সিরিয়াস বিষয় ও ভাবনার গল্প যেমন আছে, প্রেমের গল্প, ভূতের গল্প, মজার গল্পও আছে। এখানে একটা বিষয় খেয়াল করার মতো, আপনার যে কোনো গল্প পড়তে শুরু করলে কোনো ধরনের জটিলতায় পড়তে হয় না। গল্পের ভাষা অত্যন্ত সরল, গতিশীল ও জটিলতামুক্ত। সব গল্পই তো গতিময় ভাষায় লেখা কঠিন। এটা কীভাবে সম্ভব হলো?

মোস্তফা কামাল : সত্যি বলতে, গল্প আমার প্রিয়তম মাধ্যম। উপন্যাস তো লিখেছি অনেক পরে, প্রথমে কবিতা-গল্প দিয়েই লেখালেখি শুরু করেছিলাম। ভাষার বিষয়টি আমার ভাবনায় সবসময়ই কাজ করে। যখন আমি লিখতে শুরু করি, তখন বঙ্কিমের লেখা পড়েছি, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, শরৎচন্দ্র অনেকের লেখা পড়েছি। একেকজনের একেক রকম স্টাইল। আমার মনে হয়েছে যে, সাধারণ পাঠকের কাছে পৌঁছাতে চাইলে বঙ্কিমের মতো করে লিখলে হবে না। কারণ বেশি পাঠক বা সাধারণের কাছে যেতে হলে সহজ ভাষায় লিখতে হবে। আমার লেখা কার জন্য? লেখক ও পাঠকের জন্য। সব ধরনের পাঠক যেন আমার লেখা পড়তে পারে এবং বুঝতে পারে। আমার লেখা পড়তে গিয়ে তাকে যেন অভিধান নিয়ে বসতে না হয়। সেই ভাবনা থেকে আমি একটা স্টাইল তৈরির চেষ্টা করেছি। আমি দেখেছি, যে লেখকের লেখা যত প্রাঞ্জল ও সহজ, তার লেখা তত বেশি পাঠককে টানে। পাঠক পড়তে স্বচ্ছন্দ বোধ করে। ফলে আমি সহজ ভাষাটাকে বেছে নিয়েছি। কঠিন করে তো লেখাই যায়, কিন্তু আমি তো পাঠকের জন্যই লিখছি। কাজেই আমার লেখা পড়ে পাঠক যেন হোঁচট না খায়, সে জন্য আমি চেষ্টা করি, সহজ করে লিখতে। এক্ষেত্রে পাঠক প্রতিক্রিয়াও ভালো পাই। একটি ভালো বই সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার হতে পারে। রাষ্ট্রনীতি পরিবর্তনের উৎস হতে পারে। যে কারণে আমি সহজ ভাষায় লিখব এটাই আমার পণ ছিল।

সংকলনের প্রথম গল্পটি নিয়ে একটু কথা বলতে চাই। এটা কি সত্য গল্প? একজন মন্ত্রী, যিনি ১০ কোটি টাকা খরচ করে মন্ত্রী হয়েছেন, তার অনুগত চামচা তাকে পরামর্শ দেয় কীভাবে ১০গুণ টাকা রিটার্ন তোলা যাবে; দুই তরফে এত তৈলমর্দন এবং অনৈতিকতা তারা ক্ষমতায় এসেছেন যেন নিজের আখের গোছাতে, জনগণ গোল্লায় যাক! এই গল্পটি লেখার পেছনের কথা একটু জানতে চাই...

মোস্তফা কামাল : আমি এরশাদের আমলেও দেখেছি এবং পরবর্তী সময়েও; সততার জায়গায় রাজনৈতিক যে পরিবর্তন এটা ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি। নীতি-নৈতিকতার জায়গা থেকে অনেক স্খলন ঘটেছে। এটা তো আমরা দেখেছি, এমপির নমিনেশন পাওয়ার জন্য টাকা দিয়ে টিকিট কিনতে হতো। সব বড় রাজনৈতিক দলেই এই সংস্কৃতি ছিল। এমনকি এরশাদের আমলে তো রীতিমত দলীয় লোকজন কেনাবেচা হয়েছে। অন্য দল থেকে লোক ভাগিয়ে আনা হয়েছে। অনেক সময় দেখা যায়, ক্রিকেট বা ফুটবল খেলায় অনেকে বড় খেলোয়াড়কে টাকা দিয়ে কিনে আনা হতো, আমরা সেই প্র্যাকটিস রাজনৈতিক মাঠেও দেখেছি। বড় বড় লোভনীয় পদ দিয়ে, মন্ত্রীর পদ দিয়ে তাদেরকে নিয়ে যাওয়া হতো। একজন এমপি মনে করতো, ১০ কোটি টাকা খরচ করে সে যদি এমপি হয়, তাহলে এমপি হয়ে গেলে এই টাকা সে তুলে নিতে পারবে। মন্ত্রী হওয়ার ক্ষেত্রেও এমন ঘটনা ঘটেছে এ দেশে। সেটারই প্রতিফলন এসেছে আমার এই গল্পে। এমন অনেক ঘটনাও ঘটেছে যে, মন্ত্রী তার টাকা তুলে নেয়ার জন্য আমলা ও চামচাদের নানাভাবে ব্যবহার করেছে। মন্ত্রী লাভবান হয়েছে, তারাও লাভবান হয়েছে। এই গল্পটি সমাজ থেকে বাইরের কোনো ঘটনা নয়।

২০১৯-এ এসে আপনার লেখালেখি ও পেশাগত সাফল্য একটা জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে। এ বছরই আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আপনার উপন্যাস ‘দ্য মাদার’ প্রকাশিত হয়েছে। এ বিষয়ে বলুন?

মোস্তফা কামাল : আমি সত্যিই অভিভূত। এ বছরই আমার ‘জননী’ উপন্যাসের ইংরেজি সংস্করণ লন্ডনের অলিম্পিয়া থেকে বেরিয়েছে। এবং লন্ডন থেকে তারা আমাকে যে ফিডব্যাক দিচ্ছে, আমাজনের মাধ্যমে সারা পৃথিবীতে বইটি পৌঁছে যাচ্ছে। পাঠকেরও বিপুল আগ্রহ তৈরি হয়েছে। মা যেহেতু খুব আবেগের জায়গা এবং সবচেয়ে আপনজন, পৃথিবীর সব দেশেই মা শ্রদ্ধার মানুষ প্রিয় মানুষ। এছাড়া বইটির যে বিক্রির রেটিং, সেখানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বইয়ের দোকানে ও এজেন্টের কাছে বিক্রির দিক থেকেও এগিয়ে আছে। সেলার রেটিংয়ে ফাইভ স্টার, ফোর স্টার হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এটা আমার জন্য একটি বড় পাওয়া বলে মনে করি। একজন বাঙালি লেখকের জন্য এটা অনেক বড় ব্যাপার। বড় বড় পুরস্কারের চেয়েও এটাকে আমি বড় ঘটনা বলে মনে করি। আমি খুবই আনন্দিত এবং সন্তুষ্ট। অলিম্পিয়ার নিজস্ব ওয়েবসাইটে আমাকে নিয়ে ফিচার ও সাক্ষাৎকার বেরিয়েছে। সব মিলিয়ে এটা আমার লেখকজীবনের বড় প্রাপ্তি। একই সঙ্গে আমি দেশের একটি লিডিং দৈনিক পত্রিকা সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত আছি। এ কাজে অনেক ঝুঁকি ও ঝড়ঝাপটা আছে। সবকিছু সামাল দিয়ে ধৈর্য ও নিষ্ঠার সঙ্গে আমি পেশাগতভাবে আমার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। প্রতিদিন আরো ভালো করার চেষ্টা করছি। এটা খুব কঠিন কাজ। পত্রিকার কাজে এত সময় দেয়ার পরেও লেখার কাজে আমি সময় দিতে পারছি এ জন্য আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি।

বাংলাদেশের লেখকদের লেখা অনূদিত হয়ে বাইরে থেকে প্রকাশের যে বিষয় ও প্রক্রিয়া, সেখানে আমরা তো বেশ পিছিয়ে। অনেক ভালো লেখাও আলোর বাইরে থেকে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আপনার মত কী?

মোস্তফা কামাল : এটা খুব সত্য কথা। আমি খুব গভীরভাবে বিষয়টি অনুভব করেছি। এ জন্য আমার চেষ্টা ছিল, নিজের বই অনুবাদ করে বাইরে থেকে প্রকাশিত করার। আমি মনে করি, আমাদের ভালো ভালো লেখাগুলোর ইংরেজি অনুবাদ হওয়া দরকার। যখন আমি বাইরে গিয়েছি, পেশাগত কাজের জন্য অনেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যেতে হয়েছে, এশিয়া, ইউরোপ-আমেরিকার বিভিন্ন দেশে গিয়েছি। তখন তারা জানতে চেয়েছে, ইংরেজিতে আমার কোনো বই আছে কিনা। আমি তখন বলেছি, না, নেই। তারা অত্যন্ত হতাশ হয়েছে এবং বলেছে, আমরা তো বাংলা ভাষা ও বাংলা ভাষার সাহিত্য পড়তে চাই। পাই না। তখন থেকেই আমার একটা স্বপ্ন ছিল। এবং এটা জরুরি, আমাদের ভালো গল্প উপন্যাস কবিতার অনুবাদ বেশি বেশি হওয়া দরকার। যাতে বাইরের মানুষ আমাদের লেখালেখি ও ইতিহাস-সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারে।

আপনি সদ্য শেষ করলেন ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত পটভূমিকেন্দ্রিক দীর্ঘ ক্যানভাসে তিন খণ্ডের উপন্যাস অগ্নিকন্যা, অগ্নিপুরুষ ও অগ্নিমানুষ। এখন নতুন কী কাজ করছেন?

মোস্তফা কামাল : আমাদের আর্থসামাজিক সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে আমি খুব ভাবি। আমাকে ভাবায়। ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত সময়টা নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। এই পটভূমিতে দীর্ঘ ক্যানভাসে তিন খণ্ডের উপন্যাস লিখেছি। আমার অনেক সিরিয়াস পাঠক, সমালোচক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কাজটি পছন্দ করেছেন। ফলে নতুন ধরনের বড় কোনো কাজের ভাবনা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। এখন দুটো কাজ করছি। একটি বিগত সময়ে ফেলে আসা আর্থসামাজিক সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে, সমাজব্যবস্থার নানা দিক নিয়ে এবং আমার নিজের জীবনের পেছন ফিরে দেখার পটভূমি নিয়ে দীর্ঘ উপন্যাস লেখার চেষ্টা করছি। যেটার সম্ভাব্য নাম মানবজীবন। আর একটি কাজ করছি একজন সাহসী নারীর গল্প নিয়ে। নারী চরিত্র। আশা জাগানিয়া বা সাহসী নারীর প্রতিচিত্র তুলে ধরার ভাবনা থেকে লিখছি অপরাজিতা। সমাজে নারীরা নানাভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। তবুও নানা বাধা বিপত্তিকে কাটিয়ে একজন ভিশনারী নারী কীভাবে তার লক্ষ্যে পৌঁছে যায়, সেই ভাবনা থেকে লিখছি। এছাড়াও বঙ্গভঙ্গ থেকে এ পর্যন্ত সময়ের উত্থান পতন নিয়ে লেখার ভাবনা আছে। নজরুলকে নিয়ে লেখার ভাবনা আছে। ‘বিষাদসিন্ধু’র পরে মুসলিম লেখকদের সেই ধরনের লেখা আসেনি। এ ধরনের কিছু লেখার ভাবনা ও চিন্তা করছি।

এ পর্যন্ত আপনার শতাধিক বই প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে কোন বইগুলোকে আপনার প্রিয় বা শ্রেষ্ঠ কাজ হিসেবে বিবেচনা করেন?

মোস্তফা কামাল : একজন লেখকের সব লেখাই তার কাছে সন্তানের মতো। একেকটি গল্প তো আসলে একেকটি উপন্যাসের মতো। একটি গল্প সমাজ ও সময়ের অনেক কিছুই ধারণ করতে পারে। যেমন ‘প্রিয় পঞ্চাশ গল্প’ আমার প্রিয় একটি বই। গল্পগুলো বাছাই করতে আমার অনেক কষ্ট হয়েছে। আমার প্রিয় লেখাগুলোর মধ্যে অগ্নিকন্যা, অগ্নিপুরুষ ও অগ্নিমানুষ ছাড়াও আছে‘হ্যালো কর্নেল’, ‘জননী’, ‘পারমিতাকে শুধু বাঁচাতে চেয়েছি’, ‘জিনাত সুন্দরী ও মন্ত্রিকাহিনী’, ‘জনক জননীর গল্প’ ইত্যাদি। এছাড়াও আরো অনেক লেখা আছে, তবে এগুলোকে আমি সামনে রাখতে চাই।

আপনাকে আবারও জন্মদিনের শুভেচ্ছা; কামনা করি, আপনার দীর্ঘ ও সুন্দর সৃজনশীল জীবন হোক।

মোস্তফা কামাল : ধন্যবাদ। তোমার মাধ্যমে আমি আমার পাঠকদের ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা জানাই। কারণ তারাই আমার লেখার প্রেরণা। পাঠক আমার লেখা সবসময়ই পরম মমতায় গ্রহণ করেছেন এবং তারাই আমার এগিয়ে যাওয়ার শক্তি।

 

 


রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ মে ২০১৯/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়