ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ধর্ষকের সঙ্গে থানায় বিয়ে: জেলা প্রশাসনের তদন্ত শুরু

শাহীন রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৩৮, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ধর্ষকের সঙ্গে থানায় বিয়ে: জেলা প্রশাসনের তদন্ত শুরু

পাবনা প্রতিনিধি : পাবনায় গণধর্ষণের পর থানায় ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ের ঘটনা তদন্তে নেমেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশে গঠিত পাবনা জেলা প্রশাসনের তিন সদস্যের তদন্ত দল।

শনিবার বেলা ১১টায় সদর উপজেলার যশোদল সাহাপুর গ্রামে নির্যাতিতা গৃহবধূর বাবার বাড়ি থেকে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন তারা। টানা তিন ঘণ্টা ভুক্তভোগী নারী, তার পরিবার এবং এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে তারা সদর থানায় যান। রোববার জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন তারা।

তিন সদস্যের তদন্ত দলে রয়েছেন পাবনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জাহেদ নেওয়াজ, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইবনে মিজান ও ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. আবু জাফর।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ নেওয়াজ জানান, তারা দীর্ঘ সময় ধরে ভুক্তভোগী ও সংশ্লিষ্ট সকলের বক্তব্য শুনেছেন। সদর থানা ও অপরাধস্থল পরিদর্শন করে তথ্য ও প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন। তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে জানালেও এ বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

তদন্ত কমিটির সদস্য পাবনা সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইবনে মিজান জানান, গণধর্ষণের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় অভিযুক্ত সকল আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নির্যাতিতা নারীর ডাক্তারি পরীক্ষাও হয়েছে। পুলিশি তদন্তের পাশাপাশি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশে তারাও তদন্ত করছেন। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করা হবে। জেলা প্রশাসক পরে প্রতিবেদনটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠাবেন।

ইবনে মিজান আরও জানান, এ ঘটনায় থানায় বিয়ে করানোর অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওবাইদুল হককে প্রত্যাহার এবং উপপরিদর্শক ইকারামুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলমান রয়েছে।

এদিকে, গণধর্ষণের ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠায় দলীয় তদন্ত শেষে অন্যতম অভিযুক্ত শরিফুল ইসলাম ঘন্টুকে দাপুনিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হাসান শাহীন বলেন, কারো ব্যক্তিগত অপকর্মের দায় বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ নেবে না। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের নমনীয়তা বা সহানুভূতি দেখানোর সুযোগ নেই।

পাবনা সদর উপজেলার সাহাপুর যশোদল গ্রামের এক নারীকে গত ২৯ আগস্ট রাতে একই গ্রামের আকবর আলীর ছেলে রাসেল আহমেদ চার সহযোগীকে নিয়ে অপহরণ করে এবং আটকে রেখে টানা চার দিন গণধর্ষণ করে। পরে গৃহবধূ বাদী হয়ে পাবনা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে পুলিশ অভিযুক্ত রাসেলকে আটক করলেও মামলা নথিভুক্ত না করে ধর্ষিতাকে তার সঙ্গে থানা চত্বরে বিয়ে দিয়ে ঘটনা মীমাংসার চেষ্টা চালায়।

এ ব্যাপারে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে পুলিশ সুপারের নির্দেশে মামলা দায়েরের পর সকল আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।


রাইজিংবিডি/পাবনা/১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯/শাহীন রহমান/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়