সন্ধ্যার পরে ওষুধ ব্যতীত সব দোকান বন্ধ, ৫৪ জনকে জরিমানা

সাতক্ষীরায় করোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাজারে জনসমাগম কমাতে সন্ধ্যা ৬টার পরে ওষুধের দোকান ব্যতীত সব ধরনের দোকান বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন।

এছাড়া, সামাজিক দূরত্ব না মেনে অহেতুক ঘোরাঘুরি করায় ৫৪ জনকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

শনিবার (৪ এপ্রিল) সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল এসব বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

জেলা প্রশাসক জানান, জেলায় সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং ব্যাটালিয়ন আনসার এর সহযোগিতায় ২০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাত-দিনের পার্থক্য ভুলে গিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিতে দিনরাত কাজ করছে।

এদিকে, কর্মহীন হয়ে পড়া খেটে খাওয়া দুস্থ মানুষের জন্য ইতোমধ্যে ৪২৫ মেট্রিক টন চাল এবং ১৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে খাদ্যসামগ্রী। অব্যাহত রয়েছে জীবাণুনাশক স্প্রে ছিটানো।

এছাড়া, সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে সাত উপজেলায় সেনাবাহিনীর ৭টি টিমসহ জেলা সদরে পুলিশ এবং আনসারের সমন্বয়ে ৪টি টিম শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। চলছে মাইকিং।

প্রতিটি উপজেলায় ইউনিয়ন ভিত্তিক দুস্থ ও সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের বাহিরে থাকা গরীব মানুষের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।

এজন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় প্রাপ্ত বরাদ্দ থেকে ইতোমধ্যে জেলার উপজেলা ও পৌরসভার অনুকূলে ৪২৫ মেট্রিক টন চাল এবং ১৬ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক আরো জানান, করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যারা ওয়ার্ড-ইউনিয়ন পর্যায়ে তালিকাভুক্ত হতে সংকোচবোধ করছেন কিন্তু খাদ্য সংকটে আছেন তাদের নাম, ঠিকানা এবং মোবাইল নাম্বারসহ এসএমএস এর মাধ্যমে সংগ্রহ করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসক নিজে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। রাতে গোপনে তাদের বাড়িতে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।

এদিকে, ইতোমধ্যে উপজেলায় বিতরণের জন্য সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২ লাখ টাকার মাস্ক কেনা হয়েছে। যার মধ্যে ২৮ হাজার মাস্ক মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসক ও নার্সদের চলাচলের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক গাড়ি সরবরাহ করা হয়েছে উল্লেখ করে জেলার এই সর্বোচ্চ কর্মকর্তা জানান, চিকিৎসক ও নার্সদের সুরক্ষায় সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৮৫০টি পিপিই মজুদ রয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ১০০০ পিপিই বিতরণ করা হয়েছে।

এছাড়া, সাতক্ষীরা সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আসাদুজ্জামান শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন অঙ্কের জরিমানা আদায় করেছেন। শ্যামনগরে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখায় ৩ জনকে দেড় হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। কালিগঞ্জে একই কারণে ২০ জনকে ২৯ হাজার ৫৮০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আশাশুনিতে ১০ জনকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তালায় সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখায় ১০ জনকে ৮ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। কলারোয়া উপজেলায় ৯টি জনকে তিন হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া সাতক্ষীরা শহরে দুইজনকে আটশ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এছাড়া, তালার তেতুলিয়ায় দ্রব্যের দাম বেশি রাখায় একজনকে ৫০০ টাকা, দেবহাটার বন্ধু ব্রিকসকে ৫ হাজার ৩শ টাকা জরিমানা করেন।


শাহীন/বুলাকী