হিলিতে চাষের জমিতে মাছ ধরার হিড়িক
মোসলেম উদ্দিন || রাইজিংবিডি.কম
জমিতে জমা হয়েছে বর্ষার পানি। আমন চাষে জমি তৈরিতে ব্যস্ত কৃষকরা। পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষকালে ভেসে উঠছে দেশিয় মাছ। দিনাজপুরের হিলিতে এখন ক্ষেতে মাছ ধরার হিড়িক পড়েছে ।
মিলছে ময়া, পুটি, ডারকা, চেং, সাটি, খৈলসা, মাগুর, গুচি, শোল টাকিসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশিয় মাছ। মাছ ধরায় মেতে উঠেছে গ্রামের নারী, পুরুষ ও ছোটদের দল। কাদাপানিতে হাত এবং খৈচালা দিয়ে সহজেই মাছ ধরতে পারছে তারা।
মাছ ধরতে আসা একজন প্রবীণ জানালেন, বর্ষাকালে প্রতিটি মাছ ডিম ছাড়ে। অনেক ডিম কাদার সাথে মিশে থাকে। বর্ষা শেষ হলে পানি শুকিয়ে য়ায়। পরের বছর আবার বর্ষা শুরু হলে, কাদাতে থাকা সেই ডিমগুলো পোনা মাছ ছাড়ে। এভাবে ধানক্ষেতে বা ছোট ছোট খালবিলে মাছের জন্ম হয়।
হিলির ছাতনির রাস্তার পাশে উৎসব আমেজে মাছ ধরছিল গায়ে কাদামাটি লাগানো ৮ বছরের শিশু সাদেকুল। কথা হয় তার সাথে। বলল, সকাল থেকে মাছ ধরছি। অনেকগুলো মাছ পাইছি। একটু পর বাড়িতে মাছ নিয়ে যাবো, মাছ দেখলে মা খুব খুশি হবে।
মাছ ধরছিল আদিবাসী মেয়ে মিথীলা হাস্তা। বললো, পাশের আদিবাসী পাড়ায় তাদের বাড়ি। প্রতি বছর আমন চাষের সময় সে এমন করে খৈচালা দিয়ে ধানক্ষেতে মাছ ধরে। জানালো, আজ (১৫ জুলাই) সকাল থেকে প্রায় এক কেজি মাছ ধরতে পেরেছে। তার সাথে তার মাও এসেছে মাছ ধরতে।
মাছ ধরতে থাকা আব্দুল মালেক বলেন, ‘এই ক্ষেত আমার। আমন চাষের সময় প্রতি বছর আমার এই জমিতে প্রচুর মাছ পাওয়া যায়। জমি তৈরি করতে পাওয়ার টিলার নামিয়েছি। জমিতে মাছ দেখে আমিও লোভ সামলাতে পারিনি, তাই আমিও মাছ ধরছি। '
এবিষয়ে হাকিমপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা উম্মে হাবিবা সিদ্দিকা বলেন, ‘বর্ষাকালে খাল বিল পুকুর পানিতে ভরে যায়। সেখান থেকেই বিভিন্ন জাতের মাছ ধানক্ষেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায়। অনেক সময় প্রাকৃতিক কারণে জমিতে মাছ চলে আসে। আমন মৌসুমে কৃষকরা যখন জমি তৈরি করে, পানিতে থাকা মাছগুলো ভেসে বেড়ায়। তখন সহজেই হাত দিয়ে মাছ ধরে সবাই। '
হিলি (দিনাজপুর)/টিপু
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন