এরকম চ্যালেঞ্জই আমার পছন্দ : রাসেল
মাহমুদউল্লাহর চেহারাটা বড্ড বিষণ্ণ দেখাচ্ছিল। মেহেদী হাসান রানার ওভারটা শেষ হওয়ার পর কোনো কূল-কিনারা খুঁজে পাচ্ছিলেন না চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের অধিনায়ক।
ভালো বোলারকে দিয়ে বোলিং করিয়েও কোনো লাভ হলো না। আটকানো গেল না আন্দ্রে রাসেলকে। শেষ ওভারে রাজশাহী রয়্যালসের দরকার ৬ বলে মাত্র ৮ রান। পরাজয় নিশ্চিত মেনে নিয়েই মাহমুদউল্লাহ বল তুলে দিয়েছিলেন আশেলা গুনারত্নের হাতে।
২ বলেই বিপিএলের ফাইনালের আশা শেষ মাহমুদউল্লাহর। অথচ রাসেল ব্যাটিংয়ে নামার আগ পর্যন্ত একবারও কি ভাবতে পেরেছিলেন জয় তাদের নাগালের বাইরে? মোটেও না। রাজশাহীর অধিনায়ক রাসেল যখন ক্রিজে নামলেন, তখন জয়ের জন্য দরকার ৪০ বলে ৮৫ রান। লক্ষ্য ছিল ১৬৫।
সেখান থেকে ৫৪ রানের বিস্ফোরক ইনিংস উপহার দিয়ে রাসেল চমকে দেন চট্টগ্রামকে। মাত্র ২ চার ছিল তার ইনিংসে। বল হাওয়ায় ভাসিয়ে মাঠের বাইরে পাঠিয়েছেন ৭ বার। তার ২৪৫.৪৫ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসে ওলটপালট চট্টগ্রাম।
রাসেল পেয়েছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। সেটা হাতে নিয়েই এলেন সংবাদ সম্মেলন কক্ষে। এসে জানালেন, কোন পরিকল্পনায় খেলেছেন ক্যামিও ইনিংসটি।
‘শেষ পর্যন্ত খেলে আসার পরিকল্পনা ছিল। অপরপ্রান্তে উইকেট যাচ্ছিল, সেটা নিয়ে আমি চিন্তিত ছিলাম না। চাচ্ছিলাম নিজেকে শান্ত রাখতে। শুধুমাত্র একজন দরকার ছিল আমাকে শেষ পর্যন্ত সহযোগিতা করতে। রাহী কাজটা ঠিকমতো করেছিল’- বলেন রাসেল।
এরকম এক হাতে একা ম্যাচ জেতানো মোটেও সহজ নয়। রাসেল ক্রিজে আসার পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৫ রান করা ইরফান শুক্কুর ফেরেন সাজঘরে। তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি মোহাম্মদ নওয়াজ, ফরহাদ রেজা, কামরুল ইসলাম রাব্বী। অবশ্য নওয়াজের সঙ্গে তার ৯ বলে ৩৩ রানের জুটি হয়েছিল। সেটাও ম্যাচের মোড় ঘুরিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রাসেলের একক আধিপত্যেই পুড়ে ছাড়খার হয় চট্টগ্রামের ফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন।
রাসেল জানালেন, এরকম চ্যালেঞ্জ বরাবরই তার পছন্দ, ‘আমি এরকম চ্যালেঞ্জ পছন্দ করি। এরকম মুহূর্তে ওভারপ্রতি ১৩-১৪ রান করে প্রয়োজন হয়। হয়তো তারও বেশি। ১৬-১৭ করেও রান দরকার হয়। এরকম পরিস্থিতিতে আমি উইকেটে টিকে থাকার চেষ্টা করি। সব সময় নিজের চিন্তা উন্মুক্ত রাখি। কখনো পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামি না। এটা আমাকে সাফল্য এনে দেয়। কারণ উইকেটে শেষ পর্যন্ত থাকলে একটা ফল আসবে। এজন্য নিজেকে উন্মুক্ত রাখার চেষ্টা করি। ’
মাঠে থেকেই রাসেলের ব্যাটিং উপভোগ করেছেন চট্টগ্রামের ক্রিস গেইল। স্বদেশীর ইনিংস নিয়ে তার মন্তব্য, ‘ও ম্যাচ উইনার। যেদিন খেলবে প্রতিপক্ষের কিছু করার থাকে না।’
ঢাকা/ইয়াসিন/নাসিম/পরাগ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন