ভর্তি পরীক্ষা
পাবলিক-প্রাইভেট নয়, যোগ্য হওয়া প্রয়োজন
অনিক রহমান || রাইজিংবিডি.কম
প্রিয় ভর্তি পরীক্ষার্থী বন্ধুরা, আশা করি বেশ ভালো আছো তোমরা। যদিও চাপের মধ্যে তোমাদের দিনকাল যাচ্ছে। নানা জায়গায় দৌড়ঝাপ ও পরীক্ষা দেয়ার মাধ্যমে তোমাদের দিন কাটছে। এইতো আর কিছুদিন পরেই হয়তো তোমরা তোমাদের স্বপ্নের পরিচয় পাবে। তোমাদের মধ্যে কেউ আবার পরিচয় পেয়ে যাবে ঢাবিয়ান, জাবিয়ান, জবিয়ান, বুয়েটিয়ানসহ আরো কত কি!
ইতোমধ্যে তোমরা হয়তো দু’এক জায়গায় পরীক্ষাও দিয়েছ, এখন হয়তো ফলাফলের প্রহর গুনছ। অপেক্ষায় আছো নতুন ঠিকানার। কিন্তু অনেকের স্বপ্ন সত্যি হবে, অনেকের হবে না এটাই সত্য। যাদের হবে না, তাদের নিয়েই আজ আমার কথা।
প্রথমেই বলে রাখি, বাংলাদেশে জন্ম নেয়া অধিকাংশ শিক্ষার্থীরাই স্বপ্ন দেখে দেশের বড় বড় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়ার, অনেকের হয়তো ইচ্ছা থাকে ডাক্তার অথবা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। ব্যক্তিগত হোক অথবা পারিবারিক, সামাজিক যে কারণেই হোক তাদের মনে এই ইচ্ছা জাগ্রত হয়। অনেকে হয়তো পরিবারের চাপের কারণে এই ইচ্ছা ধারণে বাধ্য হয়। অর্থাৎ, এই শিক্ষার্থীরা ছোটবেলা থেকেই এক ধরনের মানসিক চাপে ভোগে। ফলে দেশে মেধাবী শিক্ষার্থী তৈরী হলেও উন্নত মানসিকতা তৈরি হয় না। কারণ তাদের মধ্যে এক ধরনের চাপ কাজ করে। আর তারা যদি এই ইচ্ছা পূরণে ব্যর্থ হয়, তাহলে স্বভাবতই তাদের খারাপ লাগবে।
প্রিয় ভাই-বোনেরা তোমাদের ফলাফল খারাপ হলে হতাশাগ্রস্ত হওয়ার কোনো কারণ নেই। জানি, হতাশাগ্রস্ত হওয়াটাই স্বাভাবিক, কিন্তু হতাশা কাটিয়ে উঠতে পারাটাই আসল। তোমাদের এখনকার হতাশা, তোমাদের পরবর্তী ভর্তি পরীক্ষাগুলোয় প্রভাব ফেলতে পারে।
সর্বদা মনে রাখা প্রয়োজন, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে না পড়তে পারলে তোমার কিছুই হবে না, এটি তোমার সফলতায় এক চুল পরিমাণ আঁচড়ও দিতে পারবে না। ‘ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার না হতে পারলে জীবন বৃথা’ এমন মনোভাব পরিহার করতে হবে। দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে পাল্লা দিয়ে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ভালো করছে। তারাও দেশের উন্নতিতে ভূমিকা রাখছে, তারাও বিসিএস ক্যাডার হচ্ছে, তারাও ভালো চাকরি করছে।
কোথাও চান্স না পেলে অনেকে অনেক কিছু বলবে, এমনকি তোমার নিজের বাবা-মাও হয়তো বকাঝকা করবে। এসব তোমার হতাশাকে আরো বাড়িয়ে দিবে, কিন্তু হতাশায় জর্জরিত হয়ে কোনো ধরনের খারাপ পথ বেছে নেবে না। এক্ষেত্রে তোমার করণীয়, তাদের কথায় কান না দেয়া এবং তোমার সর্বোচ্চ দেয়ার চেষ্টা করা। তোমার হতাশা, তোমার নিন্দাকে তুমি অনুপ্রেরণা বানাও। দেখবে, ফলাফল ভালো আসবে। অতএব, ভর্তি পরীক্ষা নামক এই মানসিক পরীক্ষায় তোমাকে ভালো থাকার চেষ্টা করতে হবে।
প্রিয় পাঠক, ভর্তি পরীক্ষার্থীদের এই কঠিন সময়ে তাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তাদের বাবা-মা, আত্মীয় স্বজন। এক্ষেত্রে পরিবারের অনেক করণীয় আছে। নিশ্চয় কোনো বাবা-মা চাইবে না তাদের সন্তান মানসিক ভোগান্তিতে পড়ুক। বরং তাদের উচিৎ এমতাবস্থায় তাদের সন্তানদের উৎসাহ দেয়া, অনুপ্রেরণা দেয়া। একটুখানি আশ্বাসের ছোঁয়া তাদেরকে বদলে দিতে পারে।
লেখক: শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।
জবি/অনিক রহমান/হাকিম মাহি
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন