ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা

আহসান হাবীব || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৩৩, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাস সাংবাদিকতা

বহু দশক ধরে কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা হয়ে উঠেছে বাংলা ভাষায় বিদ্রোহ আর প্রতিবাদের ছন্দ। মানুষের কাছে কাজী নজরুল এভাবেই সমাদৃত। তার রচিত গান, কবিতা এখনো দেশের মানুষের অন্তরে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার ভাষা শিক্ষা দেয়। তার নামেই ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়’।

প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিভিন্ন অঙ্গনে বিভিন্ন অর্জনের ধারাবাহিকতায় প্রায় দেড় দশক পার করে ফেলেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতো এখানেও রয়েছে নানা সংগঠন। এদের মধ্যে অন্যতম সেরা একটি সংগঠন হলো ‘জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (জাককানইবিসাস)’।

জাককানইবিসাস প্রতিষ্ঠিত হয় ২০১৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে। ১২ মে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এই সংগঠনটির সদস্যরা সাংবাদিকতায় তাদের ভূমিকা রাখার জন্য ক্যাম্পাসে সবার প্রিয়। ক্যাম্পাসের কিছু তরুণ, দীপ্তিমান সংবাদকর্মী এবং সাংবাদিকতার প্রতি ভালোবাসা রয়েছে এমন কিছু শিক্ষার্থীকে নিয়ে যাত্রা শুরু করে জাককানইবিসাস।

বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীসহ সকলের আস্থার পাত্র হয়ে উঠেছে সংগঠনটি। সাংবাদিক সমিতির সদস্যদের মতে, প্রতিষ্ঠাকালীন বড়দের এবং বর্তমানে সবার পরিশ্রম, মেধা ও কর্মের প্রতিফলনই এই অর্জন।

সাংবাদিকতা নিঃসন্দেহে একটি ঝুঁকিপূর্ণ পেশা। এখানকার বেশির ভাগ সদস্যই সাংবাদিকতা করেন শখের বশে, শখের নেশায়। ভবিষ্যতে এদের মধ্যে অনেকেই এই নেশাকে পেশাও বানিয়ে ফেলতে পারেন। তেমন বৈশিষ্ট অনেকের মধ্যেই দেখা যায়। 

বর্তমান সভাপতি বদরুল আলম বিপুল বলেন, ‘সাংবাদিকতার তাগিদ হৃদয় থেকে অনুভব করতে হয়। ইচ্ছা থাকতে হয়। প্রশংসার পাশাপাশি সহ্য করতে হয় অপমান, অপবাদ ও কটু কথা। আর ক্যাম্পাস সাংবাদিকতায় সেটা আরো বেশি পরিলক্ষিত হয়। আবার এই ক্যাম্পাস সাংবাদিকরাই পরিচিতি পান ক্যাম্পাস হিরো হিসেবে। বাধাবিপত্তি কাটিয়ে সাহসিকতার সাথে যারা সামনে এগোতে পারেন, তারাই সফল হন এ পেশায়।’

তিনি বলেন, ‘অনেকদিন ধরেই সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত আছি। অনেক বাঁধার সম্মুখীন তো হয়েছিই, যেটা ছাড়া সাংবাদিক জীবন অপূর্ণ। সর্বোপরি এসব সাময়িক হলেও যে ভালোবাসাটুকু পেয়েছি, তাকে আঁকড়ে ধরে সামনে এগিয়ে যেতে চাই, এগিয়ে নিতে চাই প্রিয় সংগঠনকে।’

সদ্য পাঁচ বছরে পা দেয়া জাককানইবিসাসকে ভবিষ্যতে এক অনন্য উচ্চতায় দেখতে চান তিনি।

একাডেমিক ব্যস্ততা কাটিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতো গানের আসর কিংবা খেলার মাঠে তুলনামূলক কমই দেখা যায় ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের। এই ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের সাংবাদিকতার হাতেখড়িও হয় ক্যাম্পাস থেকেই। শত বাঁধা পেরিয়ে সত্য ও ন্যায্যতার সাথে এগিয়ে চলেছেন এই কলমযোদ্ধারা। সৃষ্টিশীল, নির্ভীক ও সৃজনশীল লেখনির মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলেন অনিয়ম, দুর্নীতি ও অন্যায্যতার কাহিনী। মোটকথা, খবরের ফেরি বয়ে বেড়ানোই যেন এদের সর্বক্ষণের কাজ।

সাংবাদিকতা কতটা তেতো? প্রশ্নের জবাবে জাককানইবিসাসের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুজ্জামান রনি বলেন, ‘সাংবাদিকরা তাদের আনন্দ-বিনোদন ও অবসর বাদ দিয়ে নিরলস পরিশ্রম করেন একটি সংবাদ সংগ্রহে। তাদের করা একটি সংবাদ যখন প্রশংসিত হয়, এটিই তাদের আনন্দ, এটিই তাদের বিনোদন। অন্যকে আনন্দ দেয়ার চেয়ে ভালো উপহার আর কী হতে পারে!’

‘আপনি যখন নিজে ভালো থাকবেন, এটা ভালো। কিন্তু যখন আপনার কারণে কেউ ভালো থাকেন, এটা সবচেয়ে ভালো। ‘পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি, এ জীবন মন সকলি দাও/তার মত সুখ কোথাও কি আছে? আপনার কথা ভুলিয়া যাও।’ সাংবাদিকদের সুখ এভাবেই আসে।’

লেখক: শিক্ষার্থী, আইন ও বিচার বিভাগ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়।


জাককানইবি/হাকিম মাহি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়