ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে জবির প্রশাসনিক কাজ

তমাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১০, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে জবির প্রশাসনিক কাজ

জবি প্রতিনিধি : শতাধিক বছরের পুরনো ভবনে চলছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রশাসনিক কাজ। এতে যেকোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জবির ওই পুরনো দ্বিতল ভবনের উপর তলায় রয়েছে উপাচার্যের কার্যালয়, উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষ, ট্রেজারারের কর্যালয়, তথ্য ও প্রযুক্তি অফিস, জনসংযোগ কর্মকর্তার অফিস, সাব রেজিস্ট্রারের কার্যালয়। নিচ তলায় রয়েছে অর্থ ও হিসাব দপ্তর, প্রক্টরের দপ্তর, রেজিস্ট্রার দপ্তর। এছাড়াও রয়েছে রেজিস্ট্রার দপ্তরের সেকশন অফিসারের কার্যালয়।

জানা যায়, ১৯০৯ সালে ঢাকার কমিশনার স্যার রবার্ট নাথানের প্রচেষ্টায় অনুদান পাওয়া ৮০ হাজার টাকায় তৈরি হয় তৎকালীন জগন্নাথ কলেজের একাডেমিক ভবন। ভবনের একটি নামফলক থেকে জানা যায়, রাজা মন্থথ ১৯১০ সালে ভবনটি উদ্বোধন করেন। ১০৬ বছরের এই পুরনো ভবনে চলছে জবির যাবতীয় প্রশাসনিক কার্যক্রম। এখানে যারা কাজ করেন তাদের মাঝে সব সময় এক ধরনের আতংক বিরাজ করে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মচারী বলেন, ‘সব সময় ভয় কাজ করে- ভবনের কখন কী হয়। কিছু করার নেই। যেহেতু চাকরি করি, ঝুঁকি নিয়েই কাজ করতে হয়।’ 

একজন সেকশন অফিসার জানান, একটু বাতাস লাগলেই ভয় ঢুকে যায়, এই বুঝি কিছু কিছু ঘটল। আসলে চাকরি বাঁচাতে এখানে কাজ করতে বাধ্য আমরা। প্রশাসন কিছু না করলে আমরা কী করব?

জানা যায়, নেপাল ও ভারতে বড় বড় দুটি ভূমিকম্পের পর এই ভবনের বিভিন্ন অংশে বড় বড় ফাটল দেখা যায়। পরে বুয়েটের এক বিশেষজ্ঞ ভবনের সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে বলেন, এই ভবনের দক্ষিণ অংশে বড় ধরনের ফাটল থাকায় ভবনে ভারী কিছু তোলা বা রাখা যাবে না। এখানে বেশি চলাচল না করতেও নির্দেশ দেয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জবির প্রধান প্রকৌশলী সুকুমার সাহা বলেন, আমরা বুয়েট থেকে বিশেষজ্ঞ এনে দেখিয়েছি এবং তার দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি।

এ ব্যাপারে জবির রেজিস্ট্রার ওহিদুজ্জামান বলেন, আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখানে বসে আছি। উপায় নাই। আমাদের কোনো জায়গা নেই, যেখানে প্রশাসনিক কর্যক্রম চালানো যায়। তাছাড়া, এখানে যেসব গুরুত্বপূর্ণ নথি আছে তার স্থান সংকুলান না হওয়ায় যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে পারছি না। আমি আশা করি, ডিজিটাল বাংলাদেশের অংশ হিসেবে আমদের যাবতীয় নথি ডিজিটাইজ করে সংরক্ষণ করতে পারব। আমরা যত দ্রুত সম্ভব এই ভবন থেকে প্রশাসনিক দপ্তর সরিয়ে নেব।

জবির উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, আমরা তো জীবন হাতে নিয়ে এই ভবনে উঠি। যদি কেউ মারা যায় তবে আমিই তো আগে মারা যাবো। কারণ, সবার উপরে আমি থাকি।

প্রশাসনিক ভবন নির্মাণের ব্যাপারে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি জানান, আপাতত কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে এই ভবন আমরা ভেঙে ফেলব না। এটা আমাদের ঐতিহ্য, যা আমাদের রক্ষা করতে হবে।


রাইজিংবিডি/ঢাকা/৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯/তমাল/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়