৮ দফা দাবিতে ম্যাটস্ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

যৌন হয়রানি বন্ধসহ আট দফা দাবিতে বিক্ষোভ ও প্রশাসনিক ভবনের বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুর করেছেন বাগেরহাট মেডিক‌্যাল এ্যাসিস্ট্যান্ট স্কুলের (ম্যাটস্) ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

সোমবার বিকেল থেকে শহরের মুনিগঞ্জের ম্যাটস্ ক্যাম্পাসে একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হয়ে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হচ্ছে- প্রতিষ্ঠানের স্টাফ কর্তৃক যৌন হয়রানি বন্ধ, স্টাফদের দিয়ে পরীক্ষার হলে গার্ড দেওয়া বন্ধ, অধ্যক্ষের অনুমতি ছাড়া পুরুষ স্টাফরা ছাত্রীদের হোস্টেলে প্রবেশ করতে পারবে না, ক্যাম্পাসের ভিতরে চাঁদাবাজী ও বহিরাগত লোক প্রবেশ করতে পারবে না, প্রতিষ্ঠানের উচ্চমান সহকারী শেখ মহিউদ্দিন, ভাণ্ডার রক্ষক খান ফয়সাল রাতুল, অফিস সহায়ক মো. বাবুল হোসেন, বাবুর্চী আবু হানিফ ও নৈশ প্রহরী আব্দুল হামিদকে বহিস্কারসহ শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার বাস্তবায়ন। শিক্ষার্থীদের এসব দাবি মানা না হলে অধ্যক্ষের পদত্যাগের জন্যও আন্দোলনের ঘোষণা দেবেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

এদিকে শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে সম্মতি জ্ঞাপন করে অভিযোগের তদন্ত করতে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. মো. আব্দুর রকিব। এই কমিটিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অভিযোগের বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

শিক্ষার্থী ইমামুল ফরাজী হৃদয়, জহিরুল তালুকদার, ফাহাদ ইবনে ফারুক, ইতু, অনু, ঐশি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কলেজের স্টাফরা আমাদেরকে নানাভাবে অত্যাচার করে আসছে। এমনকি ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করছে। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজও করেন বিভিন্ন স্টাফরা।

সাবিনা ইয়াসমিন, মেরিনা আক্তার, জ্যোতি দে, বর্নালী মণ্ডল জানান, ‘যখন তখন পুরুষ স্টাফরা মেয়েদের হোস্টেলে ঢুকে যান। পরীক্ষার সময় গার্ড দেন। মেয়েদেরকে যৌন হয়রানি ও গালিগালাজ করেন। শিক্ষার্থীদের সামনে সিগারেট খাওয়াসহ নানা অনিয়ম ও অন্যায় করে আসছেন। এসব বিষয় অধ্যক্ষকে জানাতে গেলে তার কক্ষে ঢুকতে দেয়না দায়িত্বরত স্টাফরা। এছাড়া ভাইভা পরীক্ষায় ফেল করানোরও ভয় দেখান স্টাফরা। আমরা বেশ কয়েকজনের বহিস্কারসহ সকল অন্যায়ের বিচার চাই। দাবি মানা না হলে অধ্যক্ষের পদত্যাগের জন্য আন্দোলনের ঘোষণা দিবো। ‘

বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহতাব উদ্দিন রাইজিংবিডিকে বলেন, ম্যাটস্-এ খুব হইচই হচ্ছে তাই শুনে গেটের সামনে আসি। রাতে অধ্যক্ষের ফোন পেয়ে পুলিশ ফোর্স নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করি। শিক্ষার্থীদের বোঝাবার চেষ্টা করি। আমরা চেষ্টা করছি অধ্যক্ষ ও শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার।

ম্যাটস্ অধ্যক্ষ ডা. মো. আব্দুর রকিব রাইজিংবিডিকে জানান, শিক্ষার্থীরা এসব অভিযোগের বিষয়ে আগে কখনও বলেনি। আজ তারা লিখিতভাবে অভিযোগ দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবি ও অভিযোগের প্রেক্ষিতে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শিক্ষার্থীদের সকল ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়া হবে।


বাগেরহাট/টুটুল/বুলাকী