ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

৩০ বছর পর চালু হল এসএম হলের বন্ধ গ্রন্থাগার

রাবি সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:৫৩, ১১ ডিসেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
৩০ বছর পর চালু হল এসএম হলের বন্ধ গ্রন্থাগার

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শাহ্ মখদুম (এসএম) হলের জরাজীর্ণ অবস্থায় থাকা বন্ধ গ্রন্থাগারটি ৩০ বছর পর আবারো চালু করা হয়েছে। হল প্রাধ্যক্ষের উদ্যোগে দীর্ঘদিন পর গ্রন্থাগারের এমন সংস্কারে মুগ্ধ এসএম হলের শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, নানামুখী সংস্কারে হলটি নতুন রূপ পেয়েছে। বন্ধ থাকা গ্রন্থাগার চালুসহ করা হয়েছে বিভিন্ন সংস্কার। প্রাধ্যক্ষ আরিফুর রহমানের দায়িত্ব গ্রহণের এক বছরেই হলের মনোরম রিডিং রুম, সর্বোচ্চ গতির ইন্টারনেট সংযোগ, প্রাধ্যক্ষের বাস ভবন সংস্কার, অতিথি কক্ষের সংস্কার, শহীদ ফারুক হোসেন অডিটোরিয়ামের মঞ্চের আধুনিকায়ন, খাবারের মান পর্যবেক্ষন ও সুষ্ঠু সিট বণ্টনের মাধ্যমে হলকে শিক্ষার্থীদের জন‌্য পরিবেশ বান্ধব গড়ে তোলা হয়েছে বলে দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা।

হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন রাইজিংবিডিকে জানান, ইতোপূর্বের তিন প্রভোস্টের তুলনায় আরিফ স্যার হলের অভূতপূর্ব উন্নয়ন করছেন। তিনি হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে হলের সমস্যাগুলো চিহ্নিতকরণ ও কি করলে হলকে সুন্দরভাবে ঢেলে সাজানা যাবে এনিয়ে এক মতবিনিময় সভা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় সুচারুভাবে সমস্যাগুলো সমাধান করেন। পূর্বে ছাত্রদের জন্য কোনো রিডিং রুম এবং হল লাইব্রেরি বন্ধ থাকায় আমাদের নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হতো। পড়াশুনায় বিঘ্ন ঘটতো।

একারণে, এক মনোরম রিডিং রুম তৈরি ও লাইব্রেরি খুলে দেয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন প্রাধ্যক্ষ স্যার। পরে হলের অভ্যন্তরে স্থান নির্ধারণ এবং রঙকরণ, টাইলস ফিটিংস এবং প্রয়োজনীয় কাজ (বৈদ্যুতিক লাইন, লাইট, ফ্যান) ও আববাবপত্র দ্বারা একটি রিডিং রুম প্রস্তুত করেন এবং লাইব্রেরিটি আমাদের জন্য উন্মুক্ত করে দেন। এতে মাঝে মাঝে অন্যান্য হলের শিক্ষার্থীরা এসেও পড়াশুনা করে।

আবুল কালাম নামের আরেক আবাসিক শিক্ষার্থী রাইজিংবিডিকে জানান, পূর্বে হলটির আসবাবপত্র, জানালা-দরজা প্রায় নষ্ট হয়েছিলো। এতে আমাদের প্রায়ই ভোগান্তিতে পড়তে হতো। বিষয়টি প্রাধ্যক্ষ স্যারের নজরে আসলে তিনি অতিথি কক্ষের সংস্কার করেন।

একই সাথে পত্রিকা কক্ষের মেঝেতে টাইলস স্থাপন, ডিসটেমবার এবং প্রয়োজনীয় বৈদ্যুতিক পাখা সংযোজন, হল মসজিদ- কমনরুম এবং রিডিং রুমে আইপিএস সংযোজনসহ হল মসজিদের ফ্লোরে কার্পেটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার ও হল সংস্কারের সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাধ্যক্ষ ড. আরিফুর রহমান রাইজিংবিডিকে জানান, ছাত্রদের সুবিধার্থে শাহ্ মখদুম হল প্রশাসন নানামুখী পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। লাইব্রেরি খুলে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে বেশ কয়েক বছর বন্ধ থাকা অন্তঃকক্ষ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা চালু করা হয়েছে। হলে সর্বোচ্চ রেজাল্টধারী শিক্ষার্থীদের জন্য স্বর্ণপদক চালু, সাহিত্য-সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা এবং হল ডিবেটিং সোসাইটি প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

ইতোমধ‌্যে প্রথমবারের মতো সৃজনী নামে হল সাময়িকী প্রকাশ পেতে যাচ্ছে। হল ডাইনিংয়ে স্থায়ী টেবিল এবং বেঞ্চ স্থাপন করা হয়েছে। হল ক্যান্টিনেও স্থায়ীবেঞ্চ ও টেবিল স্থাপন, প্রয়োজনীয় সংখ্যক ইলেকট্রিক পাখা, লাইট সংযোজনসহ ও আনুষঙ্গিক কাজের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি আমরা।

এছাড়াও ডাইনিং এবং ক্যান্টিনের মধ্যে পার্টিশন দেয়াল তৈরি করা হবে, হল মসজিদের প্রয়োজনীয় সংস্কার, ছাত্রদের প্রয়োজনে আরো এক রিডিং রুম তৈরি, কমনরুমের জন্য আধুনিক মানের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ক্রয় এবং সংস্কার, ক্রীড়া ক্ষেত্রে বিশেষ প্রণোদনা হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে গৃহীত হবে এবং শিরোপা জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার জন্য নিয়োমিত তত্ত্বাবধান, হলের সকল বাথরুমে টাইলস স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় সংস্কার, হলের জানালা-দরজাসহ হলের বহিরাংশ রঙকরণ করে নতুন রূপে ঢেলে সাজানোসহ পড়াশুনা ও বসবাসের সঠিক পরিবেশ বজায় রাখার ব্যাপারে সর্বদা তৎপর শাহ্ মখদুম হল প্রশাসন।

অন্যদিকে ডাইনিং ও ক্যান্টিনের খাবার মান উন্নতকরণে প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করা হয় এজন্য খাবারের মানে বিশ্ববিদ্যালয় শাহ্ মখদুম হল বরাবরই সেরা।

হলের সিট বন্টনের ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রাধ্যক্ষ আরিফুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, আমি হলের দায়িত্বে আসার পর ছাত্রদের মেধার ভিত্তিতে, আর্থিক অসচ্ছ্বলতা এবং প্রতিবন্ধী ছাত্রদের বিবেচনাসহ অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে সিট বণ্টন করে আসছি। ভবিষ্যতেও এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আরিফুর রহমান গত ০৮ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে শাহ্ মখদুম হলের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।



রাবি/শাহিনুর/বুলাকী

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়