ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

চাকরি

অনিক রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
চাকরি

আমরা যারা পড়ালেখা করছি সবাই হয়তো অনেক ব্যস্ত সময় পার করছি। আজ সারপ্রাইজ টেস্ট, কাল মিড, পরশু প্রেজেন্টেশন, ভাইভা কত কী! কিন্তু মূলে আমাদের একটিই উদ্দেশ্য থাকে, সেটি শিক্ষাজীবন শেষে ভালো একটি চাকরি করা। কতক আছেন যারা পড়ালেখা শেষে নিজেদের পারিবারিক ব্যবসার হাল ধরেন কিংবা ধরবেন।

আবার অনেক এমন আছেন যারা চিন্তা করেন ‘লেখাপড়ার পাশাপাশি চাকরি করলে কেমন হয়'। তাদের প্রত্যুত্তরে বলা যায়, আপনাদের এই ধারণা মন্দ নয়। এরকম ধারণা আপনাকে করে তুলবে কর্মঠ এবং এনে দিতে পারে সফলতা।

‘পড়ালেখার পাশাপাশি চাকরি’ এমন ধারণা দু’এক দশক আগেও আমাদের দেশে তেমন প্রচলিত ছিল না। কেউ এমন ধারণা পোষণ করলেও মনে করা হতো সে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল। কিন্তু দিন বদলে বাঙালির মানসিকতা উন্নত হয়েছে। তারা এই একবিংশ শতাব্দীতে এধরনের চিন্তা-ভাবনাকে সমর্থন জানিয়েছে। এখন কেউ এই ধারণা পোষণ করলেই সে আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল, সেই দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টিয়েছে।

মূলত বাঙালির এই ধারণার মূল হোতা পাশ্চাত্য সংস্কৃতি। পাশ্চাত্য সংস্কৃতিতে এই প্রথা বহু আগে থেকেই প্রচলিত। বাংলাদেশে একটি ছেলে বা মেয়ে পুরোপুরি স্বাবলম্বী হতে সময় নেয় ২৬/২৭ বছর কিংবা তারও অধিক। অন্যদিকে উন্নত দেশগুলোতে সেক্ষেত্রে সময় লাগে আরো কম। কারণ সেই সব দেশে এই চর্চা অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। অর্থাৎ পড়ালেখার পাশাপাশি চাকরি আপনাকে করে তুলতে পারে স্বাবলম্বী।

এবার আসুন, আমরা কেনো পড়ালেখার পাশাপাশি চাকরি করবো সেই প্রসঙ্গে। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখতে পাই যে একজন স্নাতক শেষ করা শিক্ষার্থীও নিজেকে চাকরির বাজারে লাভবান করতে পারছে না।

এর অন্যতম কারণ হলো পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতার অভাব। আর সেই অভিজ্ঞতার জন্য দরকার শুরু থেকেই চাকরির খোঁজ করা। হতে পারে সেটি স্বল্প বেতনের খণ্ডকালীন চাকরি। কিন্তু এটিকে ছোট করে দেখলে চলবে না। বরং, এটি আপনাকে ভবিষ্যতে বড় চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেলো। আপনি যে ধরনের চাকরিই করেন না কেনো, চাকরির ক্ষেত্রে আপনার পেশাদারিত্ব অবশ্যই লক্ষ করা হবে। আপনি যত ছোট, ছোট খণ্ডকালীন চাকরি করবেন তত আপনার পেশাদারিত্ব বাড়বে। এটি আপনাকে নির্বাচন (ভাইভা) পর্ষদে আপনাকে অন্য প্রার্থী হতে অগ্রাধিকার দেবে।

এবার হয়তো অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে খণ্ডকালীন চাকরী পেতে হলে করণীয় কী? যাদের মনে এই প্রশ্ন আসছে তারা এগুলো অনুসরণ করতে পারেন-

* ভাষাগত দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারেন।

* প্রয়োজন মাফিক যে কোনো ধরনের ফ্রিল্যান্সিং অথবা আউটসোর্সিং বা গ্রাফিক্স কোর্স করুন।

* কম্পিউটার দক্ষতা বৃদ্ধি করুন।

* সাংগঠনিক সক্ষমতা থাকতে হবে, অর্থাৎ নেতৃত্বের গুণাবলি থাকতে হবে।

* যেকোনো ধরনের এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিসের সনদপত্র থাকা ভালো।

* 4C উন্নত করতে পারেন। এখানে 4C হলো চারটি 'C', যার দ্বারা চারটি আলাদা গুণাবলি বোঝানো হয়।

C- Communication বা যোগাযোগ দক্ষতা, C- Collaboration বা সহযোগিতা, C- Critical Thinking বা সূক্ষ্ম চিন্তা, C- Creativity বা সৃজনশীলতা

* উপস্থিত বুদ্ধি থাকা জরুরি।

* যতটুকু সম্ভব নিজ নিজ বিষয়ভিত্তিক চাকরি দিয়ে শুরু করতে হবে।

উপরের ধারাগুলো শুধু খণ্ডকালীন চাকরির জন্যই নয় বরং স্থায়ী চাকরির ক্ষেত্রেও এগুলো আবশ্যক।

সবশেষে বলতে চাই, ‘Think big, start small, act now’ (বড় চিন্তা করুন, ছোট্ট করে শুরু করুন, আর এখনই নেমে পড়ুন)’।


লেখক: শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।



জবি/অনিক রহমান/হাকিম মাহি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়