পিগমেন্ট: উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্প
সোয়াদুজ্জামান সোয়াদ || রাইজিংবিডি.কম
রাবেয়া খাতুন রুবি। শুরুতে নিজেই নিজের ড্রেস ডিজাইন করতেন। পরে ব্যবসায়ে রূপ দিয়েছেন। তার ডিজাইন করা ড্রেসের মধ্যে পেইন্টিং শুরু করেন এবং ফুটিয়ে তুলেন নানা চিত্র। এ বছরই যাত্রা শুরু করেছে রুবির ‘পিগমেন্ট’। রাইজিংবিডির পাঠকদের জন্য তার সফল উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প তুলে ধরা হলো।
দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) কৃষি অনুষদ থেকে সদ্য পড়াশোনা শেষ করেছেন রাবেয়া খাতুন রুবি। চাকরি নয় তার পছন্দ স্বাধীনভাবে নিজে কিছু করা।
কৃষি নিয়ে পড়াশোনা করলেও ছোটবেলা থেকে উন্নত রুচিসম্মত আর শৈল্পিক মনের রুবির পেইন্টিংয়ে বেশ ঝোঁক ছিল। এর ওপর একাডেমিক জ্ঞান না থাকলেও অনুশীলনের কারণে হাত ছিল পাকা। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষে পড়ার সময় থেকেই চিন্তা করেছেন সৃষ্টিশীল জ্ঞান ও কারিগরি দক্ষতা কাজে লাগিয়ে কিছু একটা করার। উৎসাহ পেয়েছন ছোট বোন ফাতেমা খাতুনের। ফাতেমারও পেইন্টিংয়ের হাত ভালো আর প্রচণ্ড আগ্রহ থাকায় অনুপ্রেরণা পায় রুবি।
শুরুতে নিজেই নিজের ড্রেস ডিজাইন করতেন উদ্যোক্তা রুবি। সবাই তার ডিজাইন করা ড্রেসগুলো পছন্দ করতেন। যেহেতু আর্টস এবং ক্রাফটিং তার পছন্দের বিষয় ছিল, তাই পছন্দের বিষয়গুলোকেই ব্যবসায়ে রূপ দিয়েছেন। তার ডিজাইন করা ড্রেসের মধ্যে পেইন্টিং শুরু করেন এবং ফুটিয়ে তুলেন নানান চিত্র।
এক্সেলিক রঙে নিখুঁত পেইন্টিং করতে পারা রুবির করা ক্যানভাস ততদিনে পেন্সিল এক্সিবিশন ও ফ্রেমে বাঁধা স্বপ্ন-দ্বিতীয় প্রহরে জায়গা পেয়েছে। ৩৫/৪০ টি পেইন্টিং বিক্রির পর আশপাশের মানুষ জনের ভালোবাসা ও অনুপ্রেরণা থেকে এ বছরের ৩১ মার্চ একটি ফেসবুক পেজের মাধ্যমে যাত্রা শুরু ‘পিগমেন্ট-Pigment’।
এখানে মেটালিক গয়না (নুপুর, মালা, চাবির রিং, চুড়ি), ক্যানভাস, কাঠের গয়না (পায়েল, মালা, আংটি, হিজাব পিন, চাবির রিং, চুড়ি) সহ বিভিন্ন ধরনের পণ্যে নিপুণ হাতের রং তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তুলছেন বিভিন্ন মোটিফ। একেকটা পণ্যের শৈল্পিক সৌন্দর্য্যে চোখ আটকে যায়। আধুনিকতার সাথে দুই জোড়া চোখের শত রঙ দিয়ে ক্রেতার ঘর, পোশাক ও মন সাজাতে কাজ করছেন রুবি ও ফাতেমা।
বন্ধু শহিদুল ফাহিমের সহায়তায় ৪৫০০ টাকায় শুরু করা ‘পিগমেন্ট’ ক্রেতার আস্থা অর্জনের কারণে এখন হাবিপ্রবি ছাড়িয়ে বাইরে থেকেও পাচ্ছে বেশ সাড়া। ক্রেতাদের যথেষ্ট চাহিদা থাকায় দেশব্যাপী পিগমেন্টকে ছড়িয়ে দিতে ও ফ্রেন্ডলি ওয়ার্কিং অ্যানভায়রনমেন্ট তৈরিতে ডেভেলপ করছে ওয়েবসাইট।
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত অফিসার বাবা ও গৃহিণী মা প্রথমে পড়াশোনায় ক্ষতি হবে ভেবে বকাবকি করলেও বর্তমানে ভালো রিভিউতে তারাও খুশি। মেয়েদের এমন উদ্যোগে যথেষ্ট সন্তুষ্ট তারা।
আরো পড়ুন
ঢাকা/সোয়াদুজ্জামান সোয়াদ/সাইফ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন