ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

এক টুকরো পাথরের মূল্য সাড়ে ২১ কোটি!

জাহিদ সাদেক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৫০, ১ মে ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
এক টুকরো পাথরের মূল্য সাড়ে ২১ কোটি!

কবি কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছেন: ‘মোর প্রিয়া হবে এসো রানী দেব খোঁপায় তারার ফুল’। কবি বেঁচে থাকলে হয়তো প্রিয়ার কপালে চাঁদের কণা দিয়ে টিপ এঁকে দিতে চাইতেন। কারণ ওই কণার মূল্য যে ২ মিলিয়ন ডলার! কবির কল্পনায় এমন মূল্যবান বস্তু তো প্রিয়ার কপালেই শোভা পায়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে প্রকাশ, সাহারা মরুভূমির বুকে চাঁদ থেকে খসে পড়েছিল এক টুকরো পাথর। সেই টুকরো অংশ থেকে সামান্য কণা বিক্রি করতে চলেছে ব্রিটিশ অকশন হাউজ ক্রিস্টিজ। এটি এখন পর্যন্ত চাঁদ থেকে পৃথিবীতে পাওয়া পঞ্চম বৃহত্তম পাথর।

ক্রিস্টির সায়েন্স অ্যান্ড ন্যাচরাল হিস্টোরি বিভাগের প্রধান জেমস হিসলপ জানান, ‘মুন রক’ বা চাঁদের পাথর পৃথিবীতে বিভিন্নভাবে আসতে পারে। মহাকাশ অভিযানে গিয়ে অনেক সময় চাঁদের মাটি থেকে নুড়ি-পাথর কুড়িয়ে এনেছেন নভোচারীরা। আবার কখনো প্রাকৃতিক কারণে চাঁদ থেকে পৃথিবীর বুকে খসে পড়েছে তার অংশ। অথবা ভীষণ গতির উল্কা বা গ্রহাণুর ধাক্কায় চাঁদের পাথর খসে পড়েছে পৃথিবীর মাটিতে। ধারণা করা হচ্ছে এই টুকরোটিও পৃথিবীতে সেভাবেই এসেছে। NWA12691 নামে পরিচিত পাথরটির ভর ১৩.৫ কেজি। দেখতে একটি ফুটবলের চেয়ে সামান্য বড়।

জানা গেছে, ১৯৬০ থেকে ১৯৭০ সালের মধ্যে মার্কিন অ্যাপোলো মিশনে নভোচারীরা চাঁদ থেকে ৪০০ কিলোগ্রাম পাথর নিয়ে ফিরেছিলেন। এরপর ১৯৬৯ থেকে ১৯৭২ সালের মধ্যে নাসার আরও পাঁচটি (অ্যাপোলো-১২, অ্যাপোলো-১৪, অ্যাপোলো-১৫, অ্যাপোলো-১৬ এবং অ্যাপোলো-১৭) চন্দ্রাভিযানে চাঁদের মাটি থেকে এ ধরনের পাথর কুড়িয়ে এনেছিলেন নভোচারীরা। এগুলোর আইসোটোপ বিশ্লেষণ করে মহাকাশবিজ্ঞানীরা বলেছেন, গ্রহাণু বা শক্তিশালী উল্কাপিণ্ডের ধাক্কায় এ ধরনের পাথর চাঁদের মাটিতে খসে আটকে থাকে। পরে নতুন কোনো প্রচণ্ড গতির উল্কার সঙ্গে ধাক্কা লাগলে সেটি মহাশূন্যে চলে আসে। অন্যান্য মহাজাগতিক বস্তুর মতোই পাথর অভিকর্ষ বলের টানে পৃথিবীর মাটিতে এসে পৌঁছায়। এখন পর্যন্ত পৃথিবীতে মোট ৬৫০ কেজি ওজনের চাঁদের পাথর পাওয়া গিয়েছে।

নিলামকারী প্রতিষ্ঠানের তথ্যমতে, সাহারা মরুভূমি থেকেই পাথরটি উদ্ধার করা হয়েছে। এর খোঁজ প্রথম কে পেয়েছিলেন তারা জানাননি। তবে নানা হাত ঘুরে এই পাথর ন্যাশনাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামে ঠাঁই করে নেয়।

জেমস হিসলপ এ প্রসঙ্গে বলেন, পৃথিবীর বাইরের কোনো বস্তু হাতে নিয়ে দেখার মধ্যে অদ্ভ‌ুত এক অনুভূতি রয়েছে। ফলে এ ধরনের পাথরের যথেষ্ট আন্তর্জাতিক চাহিদা রয়েছে। সে হিসেবে এই মূল্য তেমন কিছু নয়।

নিলামে চাঁদের পাথর কণার মূল্য উঠেছে ২ মিলিয়ন ডলার; যার বাংলা মূল্য ২১ কোটি ৩৯ লাখ ৭ হাজার ৩২৩ টাকা।

ছবি ও তথ্যসূত্র: রয়টার্স

 

ঢাকা/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়