ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

বন্ধু দিবস

কবি বায়রন-শেলির অবিস্মরণীয় বন্ধুত্ব

খালেদ সাইফুল্লাহ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ৪ আগস্ট ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কবি বায়রন-শেলির অবিস্মরণীয় বন্ধুত্ব

খালেদ সাইফুল্লাহ : আলবার্ট আইনস্টাইন বলেছেন, ‘আমাদের রহস্যময়তার পরীক্ষণে প্রাপ্ত সবচেয়ে সৌন্দর্যময় জিনিসগুলো হলো- শিল্প, বিজ্ঞান ও বন্ধুত্ব।’ জীবনে বন্ধুত্ব ও শিল্পের সমন্বয় ঘটিয়েছিলেন প্রখ্যাত ইংরেজ কবি লর্ড বায়রন। তিনি শুধু কবি ছিলেন না, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বও ছিলেন। তাঁর সঙ্গে প্রখ্যাত রোমান্টিক কবি পার্সি বিশি শেলির বন্ধুত্ব হয় কাকতালীয়ভাবে। এই সম্পর্ক তাঁদের গোটা জীবনে প্রভাব ফেলেছে প্রবলভাবে।

কবি-সাহিত্যিকদের মধ্যে জনপ্রিয়তার বিচারে একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতার মনোভাব খুবই সাধারণ ব্যাপার। যে কারণে প্রতিযোগীর সঙ্গে বন্ধুত্ব হওয়া বেশ শক্ত। কিন্তু এই ধারণা মিথ্যা প্রমাণ করেছিলেন দুজন। ইংরেজি সাহিত্যের সমসাময়িক এই দুই নক্ষত্রের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল খুবই ঘনিষ্ঠ।

বায়রনের সঙ্গে শেলির দেখা হয় ১৮১৬ সালে জেনেভায়। পার্সি শেলি ছিলেন বায়রনের তৎকালীন স্ত্রী ক্লেয়ার ক্লেয়ারমন্টের সৎ বোন ম্যারি গডউইনের স্বামী। বায়রন ইংল্যান্ড ছেড়ে জেনেভা থাকাকালীন ক্লেয়ার ও তাঁর সম্পর্কের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়। বায়রনের সাথে দেখা করার জন্য ম্যারি গডউইন ও শেলিকে রাজী করিয়ে ক্লেয়ার জেনেভায় নিয়ে আসেন। সেই যে দেখা হলো তারপরই ঘটলো চমকপ্রদ ঘটনা। বায়রনের সঙ্গে শেলির বন্ধুত্ব হয়ে গেল প্রথমবারের আলাপচারিতায়। যদিও এর পূর্বে শেলি বায়রনের ভক্ত ছিলেন, কিন্তু তাদের দেখা সেবারই প্রথম। এরপর শেলি এবং বায়রন দুজন একসঙ্গে প্রচুর সময় কাটিয়েছেন লেক জেনেভার পাড়ে। তারা নতুন নতুন জায়গা ও ঘটনার খোঁজে বেরিয়েছেন। শেলি লিখেছেন, বায়রনের সাহচার্য তাকে কবিতা লেখার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছিল। শেলির ‘হেইম টু ইন্টেলেকচুয়াল বিউটি’ তাদের দুজনের নৌ-ভ্রমণ থেকে উদ্বুদ্ধ হয়েই লেখা। অপর এক বন্ধুর কাছে লেখা চিঠিতে শেলি বায়রন সম্পর্কে লিখেছেন: ‘সে খুবই মজার মানুষ, কিন্তু অপমান ও অন্যায়ের শিকার।’

বায়রনের বন্ধুত্ব শুধু শেলির সঙ্গে সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং তার পরিবারের সঙ্গেও হয়েছে। এক বৃষ্টির রাতে ভৌতিক গল্পের আসরে বায়রন সেখানে উপস্থিত অন্যদের একটি করে ভূতের গল্প লেখার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন। সেখানে পার্সি বিশি শেলির স্ত্রীও ছিলেন। সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেই ম্যারি শেলি লিখে ফেললেন বিখ্যাত উপন্যাস ‘ফ্রাঙ্কেনস্টাইন’।

শেলি অনেক সময় বায়রনের চিন্তাকে প্রবলভাবে প্রভাবিত করতে সক্ষম হয়েছেন। বায়রনের মানসিক পীড়া এবং টানাপোড়েনের সময় শেলি তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন। বন্ধুর হতাশা-নৈরাশ্য দূর করতে সবসময় তাকে বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়েছেন। সম্ভবত এ কারণেই বায়রন অন্যদের বলতেন, ‘শেলির মতো করে প্রার্থনা করো।’

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৪ আগস্ট ২০১৯/তারা

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়