ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

রাহুল গান্ধীকে বিমানবন্দর থেকেই ফেরত

এনএ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:২৯, ২৪ আগস্ট ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রাহুল গান্ধীকে বিমানবন্দর থেকেই ফেরত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে কাশ্মীরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

অবরুদ্ধ কাশ্মীরের পরিস্থিতি পরিদর্শনে রাহুল শনিবার শ্রীনগর বিমানবন্দরে পৌঁছালেও তাকে সেখান থেকেই দিল্লিতে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, কাশ্মীরের পরিস্থিতি পরিদর্শনে রাহুল বিভিন্ন দলের আরো ১১ রাজনীতিককে সঙ্গে নিয়ে বিমানে চেপে ছিলেন। কিন্তু শ্রীনগর বিমানবন্দর থেকেই ফেরত আসতে হয়েছে তাদের।

এর আগে কাশ্মীর উপত্যকায় উত্তেজনা ছড়াবে- এমন কথা বলে বিমানবন্দর থেকেই রাহুল ও অন্য নেতাদের ফিরিয়ে দেয়া হবে বলে সতর্ক করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার।

কিন্তু সরকারি নিষেধ উপেক্ষা করে কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে জম্মু ও কাশ্মীর রওনা দেন।

রাহুলের সফরসঙ্গী ছিলেন কংগ্রেসের অন্যতম নেতা গোলাম নবী আজাদ ও আনন্দ শর্মা, সিপিআই-এম এর সীতারাম ইয়েচুরী, সিপিআই এর ডি রাজা, ডিএমকে’র তিরুচি শিবা, আরজেডি’র মনোজ ঝাঁ এবং তৃণমূল কংগ্রেসের দীনেশ ত্রিবেদী।

শনিবার দুপুরের পর শ্রীনগর বিমানবন্দরে পৌঁছান তারা। কিন্তু রাহুল ও তার সঙ্গীদের কাশ্মীরের কোথাও যেতে দেয়া হয়নি। বিমানবন্দর থেকেই তাদের দিল্লি ফেরত পাঠানো হয়।

রাহুল এর আগে যখন কাশ্মীর পরিদর্শনে যাওয়ার ঘোষণা দেন তখন থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল তাকে সেখানে যাওয়ার অনুমতি দেবে না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার। কেননা, কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা বাতিলের পর কোনো রাজনৈতিক নেতা অবরুদ্ধ উপত্যকায় সফরে যেতে পারেননি।

এরপর শুক্রবার রাতেই বিরোধ দলীয় নেতাদের উপত্যকায় সফরে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। সরকারের দাবি, এ সফরের কারণে কাশ্মীরের শান্তি বিঘ্নিত হতে পারে এবং উপত্যকার একাধিক জায়গায় ১৪৪ ধারা ব্যাহত হতে পারে। সফর বাতিল করারও অনুরোধ জানানো হয়েছিল সরকারের তরফ থেকে। 

কিন্তু আপত্তি আমলে নেননি রাহুল ও অন্যান্য নেতা। ফলে তখনই আশঙ্কা করা হচ্ছিল যে, সরকার এই সফর ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারে।

প্রসঙ্গত, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার গত ৫ অগাস্ট জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে রাজ্যটিকে কেন্দ্রশাসিত দুটি অঞ্চলে ভাগ করে। বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর থেকে সেখানে বিশেষ করে শ্রীনগরে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ-বিক্ষোভেরও খবর পাওয়া যাচ্ছে।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর শ্রীনগর উপকণ্ঠের সোউরায় শত শত বিক্ষোভকারী সড়কে নেমে বিক্ষোভ করে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের বাধা দিলে তারা পুলিশের দিকে পাথর নিক্ষেপ করে বলে জানায় বিবিসি।

সংঘর্ষের এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করলে অন্তত দুই বিক্ষোভকারী আহত হন।

রাহুলের আগে কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতা গোলাম নবী আজাদ দু’বার কাশ্মীর যাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। দু’বারই তাকে বিমানবন্দরে আটকে দিয়ে জোর করে দিল্লি পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

তবে রাহুলকে গত ১১ আগস্ট জম্মু ও কাশ্মীরের গভর্নর সত্য পাল মালিক পরিস্থিতি নিজ চোখে দেখতে কাশ্মীর সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তখন তিনি রাহুলের জন্য কেন্দ্র থেকে দেওয়া বিমানও পাঠাতে চেয়েছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, রাহুল গান্ধীকে কাশ্মীর আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। গভর্নর বলেন ‘আমি আপনাকে বিমান পাঠাবো, যাতে আপনি এসে পরিস্থিতি দেখে কথা বলেন। আপনি একজন দ্বায়িত্বশীল ব্যক্তি এবং আপনার না দেখে কিছু বলা উচিত নয়।’

কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর রাহুল বলেছিলেন, তিনি সেখানে ‘সংঘর্ষ এবং বহু মানুষের মৃত্যুর’ খবর পাচ্ছেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে গভর্নর তাকে ওই কথা বলে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।

এদিকে গভর্নরের আমন্ত্রণ পাওয়ার দুদিন পর রাহুল তা গ্রহণ করেন। কিন্তু এর মধ্যে গভর্নর তার মত বদলে আমন্ত্রণ প্রত্যাহার এবং রাহুলের সফরের বিষয়ে শর্ত আরোপ করে বিবৃতি দেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘রাহুল গান্ধী তার সঙ্গে বিরোধীদলের প্রতিনিধিদের আনতে চেয়ে বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করতে চাইছেন। যা আরো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে এবং সাধারণ মানুষ অসুবিধায় পড়তে পারেন।’


রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ আগস্ট ২০১৯/এনএ/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়