ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদের প্রতীক পাঁচ বিক্ষোভকারী

নিউজ ডেস্ক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:০৮, ৮ ডিসেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদের প্রতীক  পাঁচ বিক্ষোভকারী

২০১৯ সাল ছিল বিশ্ব জুড়ে গণবিক্ষোভের বছর। হংকং থেকে চিলি, ইরান, ইরাক থেকে লেবানন, কাতালোনিয়া থেকে বলিভিয়া, একুয়েডর থেকে কলম্বিয়া—হাজার হাজার মানুষ প্রতিবাদ জানাতে, বিক্ষোভে অংশ নিতে রাস্তায় নেমেছেন নানা দেশে।

তাদের দাবি, বিক্ষোভের ধরণ এবং কারণ হয়তো ছিল ভিন্ন ভিন্ন। ধন বৈষম্য, অবিচার, রাজনৈতিক ভিন্নমত—এরকম নানা কিছু। কিন্তু হাজার হাজার মাইল দূরের এসব দেশের বিক্ষোভকারীরা কিন্তু একে অন্যকে অনুপ্রাণিত করেছেন। কিভাবে বিক্ষোভ করতে হয়, তার নানা আইডিয়া তারা আদান-প্রদান করেছেন।

এসব বিক্ষোভে অনেক ক্ষেত্রেই কোন নেতা ছিলেন না। কিছু কিছু বিক্ষোভকারী তাদের দেশে বিক্ষোভের প্রতীকে পরিণত হয়েছেন । কোন কোন বিক্ষোভকারী তো পরিচিতি পেয়ে গেছেন গোটা বিশ্বে।

কারা এই বিক্ষোভকারী? কীভাবে তারা বিক্ষোভের প্রতীকে পরিণত হলেন?

চিলি: ড্যানিয়েলা কারাসকো, লা মিমো

ড্যানিয়েলা কারাসকো পরিচিত 'লা মিমো' বা দ্য মাইম নামে। ৩৬ বছর বয়সী এই শিল্পী চিলির গণবিক্ষোভে অংশ নেন।

তাকে চিলির পুলিশ গ্রেফতার করে। পরে ২০শে অক্টেবর তার প্রাণহীন দেহ খুঁজে পাওয়া যায় একটি পার্কের প্রাচীরে ঝুলন্ত অবস্থায়।

চিলিতে বিভিন্ন রিপোর্টে দাবি করা হয় যে তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এবং এটি করা হয়েছে অন্য নারীদের ভয় দেখাতে, যাতে তারা বিক্ষোভে অংশ না নেয়।

ইরাক: সাফা আল সারে

সাফা আল সারে ছিলেন ২৬ বছর বয়সী একজন গ্রাজুয়েট প্রকৌশলী। তিনি ছিলেন একই সঙ্গে একজন কবি এবং রাজনৈতিক কর্মী। ইরাকে রাজনৈতিক এবং নাগরিক অধিকারের ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ সোচ্চার ছিলেন। ইরাকে তরুণদের বেকারত্বের সমস্যা নিয়ে তিনি ব্লগিং করতেন। গত অক্টোবরে যখন তিনি এক সরকার বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছিলেন তখন একটি টিয়ার গ্যাসের ক্যানিস্টার এসে আঘাত করে তার মাথায়। কয়েকদিন পর তিনি মারা যান।

হংকং : স্বেচ্ছাসেবী স্বাস্থ্যকর্মী

১১ই অগাষ্ট হংকং এর বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় সিম শা সুই নামের এক তরুণী তার একটি চোখ হারিয়েছিলেন। পুলিশ তার মুখ লক্ষ্য করে 'বিন ব্যাগ পেলেট' ছুঁড়লে সেফটি গগলস ভেদ করে তা মেয়েটির চোখে আঘাত করে। এই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ার পর দেখা যায়, মেয়েটি মাটিতে পড়ে আছে, তার ডান চোখ দিয়ে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর সিম শা সুই আন্দোলনের অন্যতম প্রতীকে পরিণত হন।

কলম্বিয়া: ডিলান ক্রুজ

ডিলান ক্রুজ ছিলেন ১৮ বছর বয়সী এক কলম্বিয়ান ছাত্র। গত নভেম্বরে পুলিশ তার মাথা লক্ষ্য করে কিছু একটা ছুঁড়েছিল। হাই স্কুল থেকে পাশ করে বেরুনোর মাত্র কয়েকদিন আগে ডিলান ক্রুজ মারা যান।

ডিলান ক্রুজ ব্যবসায় প্রশাসন নিয়ে পড়াশোনা করতে হয়েছিলেন। কিন্তু এজন্যে তার একটা শিক্ষাবৃত্তির দরকার ছিল। রাজধানী বোগোটায় তিনি এক বিক্ষোভে যোগ দেন। তার মতো ছাত্ররা যেসব সমস্যায় ভুগছেন, সেগুলো তুলে ধরতে চেয়েছিলেন তিনি। তার মৃত্যু ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি করে।

লেবানন: আলা আবু ফাখের

লেবাননের প্রগ্রেসিভ সোশ্যালিস্ট পার্র্টির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আলা আবু ফাখের। রাজধানী বৈরুতের স্থানীয় সরকারে কাজ করতেন তিনি। ১২ই নভেম্বর লেবাননের সরকারি সৈন্যরা তাকে গুলি করে। তিনি সরকার বিরোধী এবং দুর্নীতি বিরোধী এক মিছিলে অংশ নিচ্ছিলেন।

তার আগে আরও একজন বিক্ষোভকারী নিহত হন। কিন্তু আলা আবু ফাখের যেভাবে মারা যান, তা ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি করে। একটি রাস্তা অবরোধ করা লোকজনকে ছত্রভঙ্গ করতে সরাসরি গুলি চালিয়েছিল সৈন্যরা।

তার ওপর গুলির ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। বিক্ষোভকারীরা তাকে আন্দোলনের 'প্রথম শহীদ' বলে বর্ণনা করেন।

তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা

 

ঢাকা/সাইফ/নাসিম 

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়