ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

‘নীতি-আদর্শে অটল-অবিচলরাই নেতৃত্বে আসুক’

আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:২২, ৫ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘নীতি-আদর্শে অটল-অবিচলরাই নেতৃত্বে আসুক’

আবু বকর ইয়ামিন : আগামী ১১-১২ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৯তম সম্মেলন। সম্মেলনের পরই ঘোষণা হবে নতুন কমিটি। আসবে নতুন নেতৃত্ব।

ঐতিহ্যবাহী এ ছাত্র সংগঠনটির আগামী নেতৃত্ব কেমন হওয়া উচিত- জানতে চাইলে মূল নেতৃত্বপ্রত্যাশী ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স রাইজিংবিডিকে বলেন, যেসব নেতৃত্ব তরুণদের একত্র করতে পারবে, তরুণরা কী চায়, তাদের শিক্ষা, দাবি-দাওয়া ও চাহিদার বাস্তব প্রতিফলন ঘটাতে পারবে- আমরা এমন কাউকেই চাই। যারা ছাত্রদের বুঝে, যারা নীতি-আদর্শে অটল-অবিচল, যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত, জাতির জনক সম্পর্কে যাদের প্রচুর জ্ঞান রয়েছে, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মানবতাবাদে বিশ্বাসী- আমরা এমন কাউকে ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশ ছাত্রলীগের আগামীর নেতৃত্বে দেখতে চাই।

রাইজিংবিডি : আপনি গত দুবছর ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন। প্রকৃত ছাত্রবান্ধব রাজনীতির জন্য কোন গুণাবলী থাকা প্রয়োজন বলে আপনি মনে করেন?
মোতাহার হোসেন প্রিন্স :
প্রকৃত শিক্ষার্থীবান্ধব ছাত্র রাজনীতির জন্য যে বিষয়টি সহায়ক সেটি হলো ছাত্রনেতাদের শিক্ষার্থীদের বিপদে-আপদে পাশে দাঁড়াতে হবে। শুধু ছাত্রনেতা হিসেবে নয় ভাই হিসেবে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। ছাত্রদের সাথে মিশতে হবে। শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধা, তাদের দাবি-দাওয়ার বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে। তাদের সমস্যাগুলো নিজের করে দেখতে হবে। সাধারণ শিক্ষার্থীবান্ধব বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করতে হবে।

রাইজিংবিডি : বিশ্ববিদ্যালয়ে নেতৃত্বের ক্ষেত্রে কোনো প্রতিকূলতা পেয়েছেন কিনা? থাকলে সেটি মোকাবিলার উপায় কী?
মোতাহার হোসেন প্রিন্স :
প্রতিকূলতা থাকতেই পারে। প্রথমত আমরা ছাত্র, এর পাশাপাশি ছাত্র রাজনীতি করি। আমরা যেহেতু ছাত্র রাজনীতি করি সেহেতু নানা প্রতিকূলতা থাকতে পারে। ছাত্র রাজনীতি সম্পর্কে বর্তমান সময়ে বিভিন্ন নেতিবাচক ধারণা রয়েছে। কিন্তু আদর্শ রাজনীতির মাধ্যমেই আগামীর যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে উঠবে। দেশ এগিয়ে যাবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ছাত্র রাজনীতি করে পরবর্তীতে দেশ ও জাতির নেতৃত্ব দিয়েছেন, দিচ্ছেন। সুতরাং শত প্রতিকূলতা আসলেও সেটিকে সৎ সাহস ও জনকল্যাণমুখী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মোকাবিলা করতে হবে। সব ভুল-ত্রুটিকে ডিঙ্গিয়ে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ দিয়ে নিজেকে অনুপ্রাণিত করতে হবে। মুজিব আদর্শকে ধারণ করে সব বাধা উপেক্ষা করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।

রাইজিংবিডি :  ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি নিয়ে কিছু বলুন।
মোতাহার হোসেন প্রিন্স :
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সর্বোচ্চ অভিভাবক দেশরত্ন শেখ হাসিনা। আমি এ কমিটিরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতৃত্বে ছিলাম। তিনিই মূল্যায়ন করবেন আমাদের বর্তমান কমিটির সফলতা ও বিফলতা। আমরা সবাই ভাই ভাই। আমাদের ভুলত্রুটি থাকলে সেগুলো শুধরে আগামীর পথচলা শুরু করতে হবে।

রাইজিংবিডি : আগামীতে ছাত্রলীগের কেমন নেতৃত্ব চান?
মোতাহার হোসেন প্রিন্স :
বর্তমান বিশ্বব্যবস্থার সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে বর্তমানে তারুণ্যের উৎসব চলছে। যেখানে আড়াই থেকে তিন কোটি তরুণ রয়েছে। এ তরুণদের একতাবদ্ধ করতে হবে। তাদের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত করতে হবে। একতার বন্ধনে আবদ্ধ করে একই মানসিকতা সৃষ্টি করে জাতীয় জীবনে পরিচালিত করতে হবে। যেসব নেতৃত্ব এ তরুণদের একত্র করতে পারবে, তরুণরা কী চায়, তাদের শিক্ষা, দাবি-দাওয়া ও চাহিদার বাস্তব প্রতিফলন ঘটাতে পারবে- আমরা এমন কাউকেই নেতৃত্বেই চাই। যারা ছাত্রদের বুঝে, যারা নীতি-আদর্শে অটল-অবিচল, যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত, জাতির জনক সম্পর্কে যাদের প্রচুর জ্ঞান রয়েছে, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মানবতাবাদে বিশ্বাসী- আমরা এমন কাউকে ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশ ছাত্রলীগের আগামীর নেতৃত্বে দেখতে চাই। তারাই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের ধারা অব্যাহত রাখুক।

রাইজিংবিডি : ছাত্রলীগের বয়সসীমা নিয়ে কিছু বলুন।
মোতাহার হোসেন প্রিন্স :
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বয়সসীমা আছে ২৭। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংগঠনের তুলনামূলক যোগ্য ও অভিজ্ঞ নেতৃত্বের প্রয়োজনে সেটিকে গত কয়েক সম্মেলনে ২৯ দেখেই করেন। আগামী দিনেও যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার আলোকে কেমন নেতৃত্ব বাছাই হবে, সেটি আমাদের অভিভাবকই (প্রধানমন্ত্রী) ভাল জানেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ প্রকৃত ছাত্রদেরই সংগঠন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনে করেন প্রকৃত ছাত্ররাই ছাত্রদের সমস্যা সহজেই বুঝতে পারে এবং সমাধানে এগিয়ে আসতে পারে। এজন্যই তিনিও (প্রধানমন্ত্রী) চান নিয়মিত ছাত্ররাই ছাত্রলীগ করুক। নেতৃত্বে আসুক।

রাইজিংবিডি : নিয়মিত সম্মেলন হওয়ার বিষয়ে কিছু বলুন।
মোতাহার হোসেন প্রিন্স :
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সম্মেলন তুলনামূলকভাবে নিয়মিতই হয়ে থাকে। কিন্তু যারা নতুন কমিটিতে আসেন তাদের দেশব্যাপী কমিটি দেওয়া, বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হয়তো কিছুটা বিলম্ব হয়। তবে এবার প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় তুলনামূলকভাবে একটু আগেই সম্মেলন হচ্ছে।

রাইজিংবিডি : বিশ্ববিদ্যালয়ে আাগামী নেতৃত্বের প্রতি আপনার কোনো পরামর্শ রয়েছে কিনা?
মোতাহার হোসেন প্রিন্স :
আমি মনে করি ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিতে হলে আগে নিয়মিত ছাত্র হতে হবে। অনেক বেশি পড়াশুনা করতে হবে। দেশ ও বহিঃবিশ্ব সম্পর্কে গভীর জ্ঞান থাকতে হবে। ছাত্রদের অধিকার নিয়ে কাজ করার মানসিকতা থাকতে হবে। মোটাদাগে বলতে চাই, ছাত্রনেতাদের বেশি বেশি পড়তে হবে।

রাইজিংবিডি : সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
মোতাহার হোসেন প্রিন্স :
রাইজিংবিডিকেও ধন্যবাদ।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৫ মে ২০১৮/ইয়ামিন/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়